পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬০৬ প্রতি একদৃষ্টি চাহিয়৷ ছিলেন,- সে দৃষ্টি কেমন, তাঙ্গা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না ; স্তন্তদাননিরতা জননী ধাত্রীকে যিনি দেখিয়াছেন, তিনিই তাঁহা বুঝিবেন । কে সে জননী ?—-সে ফ্যানটাইন । এইখানে আমরা একটা পূৰ্ব্বকথা বলিব। কে এ ফ্যানটাইন ? ফ্যানটাইন দরিদ শ্রমজীবিকল্প। যৌবনের প্রারম্ভে প্রতারকের কুহকে ভূলিয়া সে অাজন্মের পিতৃগৃহ ত্যাগ করিয়া আসে — থলোমিয়ে বিবাহের প্রস্তাব করিয়াই সরলাকে ভুলাইয়া আনে । কিন্তু, একদিন, দু’ দিন, সপ্তাহ, মাস, করিয়া ক্রমে ক্রমে দুই বৎসর কাটিল, তবু থলোমিয়ে তাহার সে প্রতিজ্ঞা পালন করিল না। নানা ছলে, নানা কৌশলে সে সে কথা চাপা দিতে লাগিল । অবশেষে একদিন সহসা সে যখন অন্তৰ্দ্ধান করিল, তখন বালিক সত্যই অকুল পাথরে পড়িল। হায়, সে যে থলোমিয়েকে তাহার সৰ্ব্বস্বই দিয়াছিল,—পাপপুণ্য, ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম বলিয়া সে ত কিছুরই বিচার করে নাই,-বিবাহিতা স্ত্রীর মতই সে যে আপনাকে উৎসর্গিত করিয়াছিল । বালিক চারিদিক্‌ শূন্ত দেখিল,—সে তখন অন্তবর্তী ! তাহার নিজের অলঙ্কারাদি যাহা ছিল, একে একে বিক্রয় করিয়া সে কয়েক মাস চালাইল । তারপর, অনেক অনুসন্ধানে গলো মিয়ের ঠিকানা জানিয়া, একদিন এক সাধারণ মুহুরীকে দিয়া তাহাকে একখানি পত্র লিখিল – নিজে সে লেখাপড়া জানিত না। থলোমিয়ে তখন মথুরার রাজা’, ‘ব্রজের কথা’ আর তখন তার মনে থাকিবে কেন ? তাই সে ফ্যান বঙ্গদর্শন [ ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩২০ টাইনের পত্রের কোন উত্তর দিল না। ফ্যানটাইন তার পর উপযুপিরি আরও দুইখানি পত্র লেখাইল,—তাঁহাতেও কোন ফল হইল না। তার নিজের প্রতি না থাকুক, তার আপন সস্তান -- নিষ্কলঙ্ক স্বর্গের ছবি তার প্রতিও তার দয়া নাই ?—অভাগিনীর শূন্ত দেউলের ক্ষীণ দীপশিখা ক্রমশঃ নিৰ্ব্বাণোন্মুখী হইতে লাগিল ।—স্বেচ্ছায় সে ইহজীবনের সব সুখ নষ্ট করিয়াছে, ক্ষণিক সুখের মন্থনে যে হলাহল উঠিয়াছে আজীবন সে বিষ তাহাকে কণ্ঠে ধারণ করিয়া থাকিতে হইবে বালিকা তাহ বুঝিল । তাহার পকৃতি অন্তরূপ হইলে তাহাতে কিছু আসিয়া যাইত না ; যাহার সে অনুপম রূপসম্পত্তি, তাহার স্বাচ্ছন্দ্যের অভাব কি ? কিন্তু আমরা জানি তাঙ্কার প্রকৃতি অন্ত ধাতুতে গঠিত ছিল ; সংসারানভিজ্ঞ বালিক একবাব মাত্র পদস্থলিত হইলেও, রমণীসুলভ সঙ্কোচ এবং পবিত্রত হইতে ভ্রষ্ট হইবার সে প্রবৃত্তি তখনও তাচার হয় নাই । ভালবাসা জীবনের ভ্রাস্তি ; হয় হউক, কিন্তু ফ্যানটাইনের সারগ্যের ছবিখানি সে ভ্রান্তির সলিলের উপর ভাসিতেছিল—এ কথা আমরা শতবার বলিব । যে দেবতার চরণে সে তাঙ্গর যৌবনের প্রথম আবেগ, জীবনের প্রথম প্রণয়, অস্তরের প্রথম অর্ঘ্য উৎসর্গিত করিয়াছিল,—প্রতারিত হইয়াও, কার্য্যে বা চিন্তায় তাঙ্গর প্রতি অবিশ্বাসিনী হইতে সে চাতে নাই ; তাহার প্রসাদী ফুল অন্ত কোন দেবতার চরণে অর্পণ করিতে তাহার প্রবৃত্তি হয় নাই। প্রথম যৌবনে সৰ্ব্বপ্রথম যে মূৰ্ত্তিকে স্ত্রীলোকে একবার বরণ করিয়া লয়, যাহার