পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৪৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন দেখিলে ফ্যানটাইন হয় ত সন্ত্রস্তা এবং সন্দিগ্ধ! হইত ; কি করিত বলা যায় না, হয় ত কস্তাকে সেখানে রাখিবার সঙ্কল্প সে ত্যাগ করিত। —কিন্তু বিধির নিৰ্ব্বন্ধ অন্তরূপ । এমনি সামান্ত স্বত্রের উপর কত সময় মানবের অদৃষ্ট ছলিতে থাকে । আগস্তুকা আপন জীবন-বৃ স্বাস্ত, সময়েপযোগী কতক পরিবৰ্ত্তিত করিয়া, বর্ণনা করিল। বলিল - “তাহার স্বামী প্যারীতে দিনমজুরের কাজ করিতেন, হঠাৎ তার মৃত্যু হওয়ায় অনাথ শিশুকন্যাকে লইয়া সে কাজের সন্ধানে অন্তক্ৰ যাইতেছে, দরিদ্র। সে, তাই সে প্রার সব পথট, হাটিয়াই আসিয়াছে, মেয়েকেও কতক ইঁাটাইয়াছে,— তাই তার চাদের কণা ক্লান্ত হইয়া তার বুকে ঘুমাইয় পড়িয়াছে—ইত্যাদি” বলিয়া কন্যাকে দৃঢ়তরালিঙ্গনবদ্ধ করিয়া সাগ্রহে তাঙ্গার মুখচুম্বন করিল। সে স্পশে শিশু জাগিয়া উঠিরা, আয়ত সুনীল নেত্ৰে জননীর প্রতি চাহিল –কি দেখিল ? –কিছুই নয় ; অথচ সবই যেন সে দেখিল । তারা যে দেব-দূত তা বুঝি শিশুরা বোঝে, আমরা যে দুৰ্ব্বল মানব তাও বুঝি তারা জানে ; তাই আমাদের সন্দিগ্ধ পুণ্যের পাশ্বে তাদের উজ্জ্বল পবিত্রতার ছবি এমন সারল্যে কোমল, গাম্ভীর্য্যে মধুর! কস্তাকে ফ্যানটাইন ধরিয়া রাখিতে পারিল না ; ক্রোড় হইতে স্বলিত হ ইয়া ক্রীড়ারত বালিকা দুইটির প্রতি সে ছুটিল। থেনেডিরারপত্নী তাহার প্রতি চাহিয়া সঙ্গস্তে বলিল,— “বেশ হয়েছে। তিনটিতে খেলা কর।” সে বয়সে . ভাব হইতে বিলম্ব হর না । \')e b· ১৩শ বর্ষ, অগ্রহায়ণ, ১৩২• মুহূর্তের মধ্যে তিন জনে পূর্ণ উৎসাহে ‘গর্ত কাটাকাটি খেলা খেলিতে আরম্ভ করিল। নবাগতার উৎসাহই খুব বেশী ; শিশুর আনন্দোচ্ছাসে জননীর অন্তর-ছবিখানি প্রতিফলিত হয়, এ কথা খুবই সত্য । কিয়ৎক্ষণ পরে থেনেডিয়ার-পত্নী প্রশ্ন করিল—“তোমার মেয়ের নাম কি বাছা ?” “কসেট " “ক’ বছরের হল ?” “এই তিন চলছে।” ‘তা হ’লে ত আমার বড়টির বয়েসী।” শিশু তিনটি তখন বিস্ময়চকিত ভাবে সম্মুখের দিকে চাহিয়া ছিল । তার বিশেষ কারণও ছিল । একটা বৃহৎ কীট মাট হইতে বাহির হইয়া পড়িয়াছিল । তা দেখিয়া তাহদের কত ভয়, অথচ কি আনন্দ ! তাঁহাদের ক্ষুদ্র ললাট তিনটি পরস্পর সংলগ্ন, তিনটি ক্ষুদ্র মস্তকের উপর একটি দিব্যালোকসম্পাত ! "ছেলের কেমন এক দণ্ডে ভাব করে নেয় দেখেছ ? তিনটিই যেন এক মায়ের পেটের !” ফ্যানটাইন বুঝি এতক্ষণে ইহারই অপেক্ষ করিতেছিল। থেনেডিয়ার-স্ত্রীর হাত দু’টি ধরিয়া সে বলিয়া উঠিল—“আমার মেয়েটিকে, আপনার কাছে রাখবেন ?” প্রবীণ বিস্ময়ে নবীনার প্রতি চাহিল । সে চাঙ্গনিতে ‘ই’ কি না কিছুই বুঝা গেল না । ফ্যানটাইন পুনরায় বলিল—“মেয়েকে নিয়ে ত আর আমি সেখানে যেতে পারি নে। সঙ্গে নেজুড় থাকৃলে কোথাও কাজ পাব না। তাই ভগবানই বুঝি দয়া করে আমাকে এ দিকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আপনার মেয়ে