পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দশম খণ্ড.djvu/৫০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ম সংখ্যা ] ংস্থান প্রকাশ করা যাইতে পারে মাত্র, কিন্তু তাহাতে মনুষ্যদেহে জীবনী-শক্তির স্থান কোথায় তাহার সন্ধান পাওয়া যায় না । সমালোচক কবিতার সৌন্দর্য্যের বিশ্লেষণ করিতে পারেন মাত্র, কিন্তু সহস্র বিশ্লেষণেও কবিতার প্রাণ কোথায় তাহা প্রকাশ করিতে পারেন না—তেমনি মনুষ্য-চরিত্রের বিশ্লেষণ করিতে গিয়া আমরা কেবল তাহার প্রধান প্রধান উপাদান নির্দেশ করিতে পারি— কিন্তু যে জীবনব্যাপী নিগূঢ় সাধনায় এই চরিত্র আপনাকে সম্পূর্ণ সফল করিয়াছিল,—তাঙ্গ কথায় প্রকাশ করা সম্ভব নহে । সংসার চন্দ্র সামান্ত শিক্ষকতা হইতে ক্রমে ক্রমে জয়পুরের মত একটা বিশাল রাজ্যের মন্ত্রিত্বপদে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিলেন,- আমরা ঘটনাবলি গ্রথিত করিয়া তাহা দেখাইতে যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছি—কিন্তু কেমন করিয়া যে র্তাহার প্রতিভা চারিদিক হইতে রস গ্রহণ করিয়া, ক্ষুদ্র বীজ যেমন বৃহৎ বনস্পতিতে পরিণত হয়, তেমনি আপনাকে পরিপুষ্ট করিয়া বিকশিত হইয়াছিল—জানি না কি প্রকার বিশ্লেষণে তাহা প্রকাশ করিব । ংসারচন্দ্রের জীবনী লিখিতে যে সহস্র ক্রটি রহিয়া গিয়াছে—সে সকল ক্রটির ইঙ্গাই একমাত্র ওজুহাত । এত দুর র্যাহারা ধৈৰ্য্যের সহিত পাঠ করিয়াছেন—সংসারচন্দ্রের চরিত্র সম্বন্ধে তাহাদের একটা ধারণা জন্মিয়াছে, আশা করা বোধ হয় অসঙ্গত নহে। তথাপি আমরা তাহার চরিত্রের প্রধান উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করিয়া দেখাইবার জন্য এই পরিচ্ছদের অবতারণা করিরছি। রাও বাহাদুর সর্দার সংসারচন্দ্র ७२० (१) রাজনীতি ব্যাপারটি এমন যে, ধৰ্ম্ম-নীতির সঙ্গিত ইঙ্গর অহি-নকুল-সম্বন্ধ হইয়া দাড়াইয়াছে, র্যাহারা ধৰ্ম্মভীরু তাহারা যদি সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যক্রমে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন তাহা হইলে তাহাদের পক্ষে বাস্তব ও আদর্শের মধ্যে যে বিরোধ উপস্থিত হয়, তাহার সামঞ্জস্ত করা যে কতদূর কঠিন তাঙ্গ। র্তাহারাই বুঝেন। সংসারচন্দ্র সম্বন্ধে কি রাজা, কি প্রজা, কি ইংরাজ রাজকৰ্ম্মচারী সকলেরই মুখে এই একটা কথা সৰ্ব্বদা শুনিতে পাওয়া যাইত –“Oh I he is a God fearing man ”–sĘ síভীরুতাই তাছার চরিত্রের প্রধান উপাদান । তিনি অল্প বয়স হইতেই নানা দুঃখ-কষ্টের ঝঞ্চাবাতের মধ্য দিয়া “সাবধানে জালায়ে অন্তর-প্রদীপখানি” সংসারের পথে অগ্রসর হইয়াছিলেন, কিন্তু যে সৰ্ব্বকাৰ্য্যনিয়ুস্ত। বিধাতা তাহাকে এই বিচিত্র কৰ্ম্মের মধ্যে বিবিধ পরীক্ষার মধ্য দিয়া তাহার জীবনকে সফলতার দিকে লইয়া যাইতেছিলেন, তিনি সৰ্ব্বদা তাহার দিকে লক্ষ্য রাথিয় এই দুর্গম পথে অগ্রসর হইয়াছিলেন । নানা প্রলোভন, নানা চক্রান্ত, “প্রতিদিনের কুশাঙ্কুর” প্রতি পদে র্তাহাকে ক্ষত বিক্ষত করিয়াছে, কিন্তু তিনি তাহার অন্তরস্থিত দেবতার আদেশবাণী কখন অগ্রাহ করেন নাই—তিনি সেই “ভয়ানীং ভয়ম ভীষণং ভীষণানামৃ”এর আদেশ প্রতিকার্য্যে অমুভব করিতেন । তিনি বলিতেন—জগদীশ্বর শুধু প্রেমময় নহেন--তিনি . ভীষণং ভীষণ নাম্। ইহাই তাহার চরিত্রের প্রধান উপাদান : ধৰ্ম্মভীরুতা এবং জগদীশ্বরের উপর একান্ত নির্ভরতাই