পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ বঙ্গদর্শন ঐতিহাসিক কীৰ্ত্তির বিশেষত্ব * কিন্তু ইতিহাসে র্যাহাঁদের নাম থাকিয়া যায়, কেবল তাহারাই যে সমাজের শ্রেষ্ঠ জন, কেবল র্তাহীদেরই নিকটে যে সমাজ অশেষ ও অশোধনীয় ঋণজলে আবদ্ধ থাকে, অপরের নিকটে থাকেন, এমন কথা কিছুতেই বলা যায় না। ফলতঃ ইতিহাস যে কেবল ভালকেই মৰ্মে করিয়া রাখে, মন্দকে তুলিয়া ধায়, তাহাও নহে। রোমের ইতিহাস পুণ্যশ্লোক মার্কস্ অরিলিয়সের যেমন, তেমনি কুরমতি নীরোরও নামকে স্মরণীয় করিম রাখিয়াছে। আমাদের প্রাচীন পুরাণ-কথায় রামও আছেন, রাবণও আছেন; যুধিষ্ঠিরও আছেন, দুঃশাসনও আছেন । ভারতের পূণ্যস্থতি জনকের নামও মাথায় করিয়া রাথিয়াছে, বেণ রাজার নামও ভুলিয়া যায় নাই। ইতিহাস কেবল ভালকেই স্মরণীয় করিয়া রাখে, মন্দকে রাখে না, তাহা नम्न उण श्डेक, भन्न श्डेक, शांश हूि অলোকসামান্ত, ইতিহাস তাহাকেইঅাঁকড়াইয়৷ ধরে। মানবের প্রকৃতি হইতেই তো ইতিহাসের বিচার-পদ্ধতির উৎপত্তি। আর যাহা নিত্য, তাহা অপেক্ষ যাহা নৈমিত্তিক, যাহা স্থতিহেতু,তাহ অপেক্ষ যাহা গতি-সহায় ; মানুষের মন তাঙ্গরই দ্বারা সমধিক আকৃষ্ট হইয়া থাকে। এই কারণে যাহার জনসমাজের স্থিতির সহায়, তাহাদিগকে উপেক্ষা করিয়া, যাহারা জনসমাজের গতির হেতু হইয় উঠেন, ইতিহাস র্তাহাদিগের স্মৃতিকেই বিশেষভাবে জাগাইয়৷ রাখতে চাহে। যে সকল শক্তির সমৰীয়ে বা সংঘর্ষণে সমাজ-জীবনবিবৰ্ত্তিত হয়, ইতিহাস তাহাকেই ভাল করিয়া লক্ষ্য করে। আর সমাজ-বিবৰ্ত্তনে ভাল ও মন্দ দুই মিশিয়া { ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ এাকে। জালে ও ছায়ার সমাবেশ ব্যতিরেকে যেমন কোনো তৈলচিত্র ফুটিয়া উঠে ন; যেইরূপ ভাল ও মন্দের সংঘর্ষ ব্যতীত সমাজজীবনও গড়িয়া উঠিতে পারে না। ভাল ও মন্দের মধ্যে যে স্বাভাবিক বিরোধ আছে, তাহারই দ্বারা, সেই বিরোধের ফলস্বরূপই, জনসমাজ বিবর্তিত হইতেছে। এই দেবামুরংগ্রাম মানব-সমাজের নিত্য ধৰ্ম্ম। আর তারই জন্য, এই মানব-সমাজের বিবর্তনের যথাযথ বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া রাখা যে ইতিহাসের কৰ্ম্ম, সেই ইতিহাস লোকে যাহাকে ভাল বলে কেবল তাঁহাকেই স্ময়ণীয় করিয়া রাখে না ; কিন্তু ভাল হউক, মন্দ হউক, যাহা কিছু শক্তিশালী, যাহা কিছু অনন্যসাধারণ, যাহা কিছু গতির কারণ, ইতিহাস সৰ্ব্বদ তাহাকেই নিরপেক্ষভাবে ধরিয়া রাখিতে চাছে ঐতিহাসিক বিবর্তনের প্রণালী আর আলোকসমান্ত প্রতিভাই সচরাচর জনমণ্ডলীর গ্রাণে নূতন জ্ঞান, নূতন ভাব, নূতন আদর্শ, নূতন আশার সঞ্চার করিয়া, যুগে যুগে সমাজের এই গতিশক্তিকে প্রবুদ্ধ ও পরিচালিত করিয়া থাকে। এই সকল নূতন ভাব ও আদর্শের প্রেরণায়, যাহা পূৰ্ব্বে পাওয়া যায় নাই, তাহ পাইবার জন্ত জনগণের চিত্ত চঞ্চল হইয় উঠে। এই লোভ হইতে নূতন কর্মের আয়োজন, এবং এই কৰ্ম্মচেষ্ট হইতেই সমাজের বিবর্তন ও বিকাশ সাধিত হম। আলোকসামান্ত প্রতিভা সমাজের গতি-বেগ বৃদ্ধি করে বলিয়াই ইতিহাসে তাহার এত গৌরব। কিন্তু জনসমাজের কল্যাণকল্পে যেমন তার গতি-শক্তির তেমনি তার স্থিতিশক্তিরও আবশ্যক। যেখানে সমাজের