২য় সংখ্যা ] দুইজন পরিদর্শক পৃথক ভাবে অম্বরূপ ঘটনার প্রমাণ দিতেছেন, তাহাতে দেখা যায় যে শিকারী কুকুর ( Retreiver ) যাহারা বংশামুক্রমিক অভ্যাসবশতঃ কখনও শিকারকে বধ করে না, তাহারাও ংশামুগত অভ্যাসের বিপরীত কাৰ্য্য করিয়াছিল ; সুতরাং বুঝা গেল যে, বদ্ধমূল অভ্যাসের বিরুদ্ধে কাৰ্য্য করিতে তাহাদিগের বিচার-বুদ্ধি কতদূর প্রবল হইয়াছিল! বিখ্যাত হাম্বোণ্ট মহোদয়ের একটী মন্তব্য উদ্ধৃত করিয়া আমি এ বিষয় শেষ করিব । দক্ষিণ আমেরিকার খচ্চর-চালকগণ বলে “যে খচ্চরটর চলন মৃদু, তাহ। আপনাকে দিব না, যেটার বুদ্ধি ভাল সেইটী দিব।" ইহা হইতে হামূবোণ্ট বিবেচনা করেন যে “ভূয়োদর্শন হইতে এই যে কথাটা প্রচলিত হইয়াছে, তদ্বারা জীব অণুমাত্র, কলমাত্রএই মত এত উত্তমরূপে খণ্ডিত হইতেছে যে দর্শনশাস্ত্রের বিবিধ যুক্তি-তর্কেও তেমন হইতে পারে না।” তথাপি কোন কোন লেখক অদ্যাপিও বলেন যে উচ্চশ্রেণীস্থ জন্তুগণের বুদ্ধিবৃত্তির চিতুমাত্রও নাই। উপরে যে সকল বৃত্তান্ত উল্লেখ করিলাম তদনুরূপ ধুন্তান্ত তাহার কেবল বাক্যাড়ম্বরপূর্ণ ব্যাখ্যায় উড়াইয়া দিবার চেষ্টা করেন। আমি বিবেচনা করি, ইহা এক্ষণে প্রতিপন্নই হইয়াছে যে মানবের এবং উচ্চ শ্রেণীস্থ জন্তুর, বিশেষতঃ বানরগণের মধ্যে কতিপয় সহজাত বৃত্তি সাধারণ। উহাদিগের সকলের ইন্দ্রিয়গণ একই প্রকার, অনুভূতি এবং স্বাভাবিক সংস্কারও একই ; কামক্রোধাদি রিপু, স্নেহমমতা, ভাবপ্রবাহও
মানবের জন্মকথা > R> তুল্যরূপ ; এমন কি, অপেক্ষাকৃত জটিলতৃত্তিগুলিও একই প্রকার, যেমন হিংসা, সন্দেহ, প্রতিযোগিতা, কৃতজ্ঞতা, মহত্ত্ব। উচ্চশ্রেণীস্থ জন্তুগণ প্রতারণা করে ও প্রতিহিংসা লয় ; উহার। সময় সময় ব্যঙ্গ বুঝিতে পারে, এবং উহাদিগের রসিকতার ভাব ও আছে । উহাদিগের আশ্চর্য বোধ ও কৌতুহল আছে । অমুকরণবৃত্তি, মনঃসংযোগ, চিন্তাশীলতা, উৎকর্যাপকৰ্ষবোধ, স্মৃতি, কল্পনা, ভাবসংযোগ,বুদ্ধিবৃত্তি-এ সকলই উহাদিগের আছে, কিন্তু সকলের সমান পরিমাণে নাই। একজাতীয় বিভিন্ন ব্যক্তিগণের মধ্যে বুদ্ধিবুত্তির ক্রমিক প্রভেদ অনুসারে প্রায় জড়বৎ নিৰ্ব্বোধ হইতে অতিশয় বুদ্ধিমান পর্য্যন্ত সকলই দেখা যায়। উহার উন্মাদও হইতে পারে, কিন্তু অনুপাতে মানুষ"অপেক্ষ অনেক কম সময় হইয়া থাকে। তথাপি অনেক গ্রন্থকার দৃঢ়তার সহিত বলেন যে মনোরম্ভিতে মাতুষে এবং ইতর জন্তুতে অলঙ্ঘা প্রভেদ বিদ্যমান আছে। আমি ইতিপূৰ্ব্বে এইরূপ উক্তি বিংশতির অধিক সংগ্ৰহ করিয়াছিলাম, কিন্তু সে সকলগুলিই প্রায় মূল্যহীন, কারণ এই সকল উক্তির সংখ্যা ও পরম্পরের গুরুতর পার্থক্য বিবেচন৷ করিলেই বুঝা যায় যে ঐরুপ সংগ্রহের চেষ্টা অসম্ভব না হইলেও অত্যন্ত কঠিন । কেহ কেহ বলেন যে কেবল মামুষই উত্তরোত্তর ক্রমিক উন্নতি সাধন করিতে সক্ষম ; এবং সকল মানুষই যন্ত্র ও অগ্নি ব্যবহার করে, অন্য জন্তুকে গৃহপালিত করে, অথবা সম্পত্তি অধিকার করে, অন্য কোন জন্তুর সামান্ত-বিধি