পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যt ] নিজের প্রকৃতুি ও প্রবৃত্তি রুচি ও অভ্যাসের দ্বারাই তার ভালমন্দের বিচার করিয়া থাকি । সকল মানুষ যদি সমান হইত, তবে এরূপ বিচার অসঙ্গত হইত না । কিন্তু মানুষ যে সকল সমান নয়। সকল জলই যেমন সমান, জলে জলে যে বেশ কম দেখি, তাহ জলের ভিতরকার প্রকৃতিগত নহে, জল ছাড়। অন্য কোনো ধাতুকণা বা লবণাদি তার সঙ্গে মিশিয়া গিয়া জলের গুণের তার তম্য উৎপাদন করে ; সকল সোণাই ষেমন সমান ; সকল পারদ গন্ধকই যেমন সমান ; সকল মানুষ তো আর সেরূপ সমান নয়। মানুষে মামুষে যে বিভিন্নত। তা’ তার প্রকৃতিগত। সে প্রকৃতির বাহিরের কোন বস্তু তার সঙ্গে মিশিয়। গিয়া এ সকল ভেদাভেদের স্থঠ করে নাই। আর মানুষে মানুষে এই প্রকৃতিগত বৈষম্য আছে বলিয়াই প্রকৃতপক্ষে একের যা’ ধৰ্ম্ম অপরের তাই ধৰ্ম্ম হয় না, একের ভাল মন্দের দ্বারা অপরের ভালমন্দের বিচার সঙ্গত হইতেই পারে না ; সুতরাং কোনে। মানুষ থাটি হইলেই যে সকলের বিচারে সে ভালও হইবে, আর সকলে কাহাকেও ভাল বলিলেই যে সে খাটি হইবে, এমন কোনে কথা নাই। বরং এ সংসারে দশজনে যা কে তাল বলে অনেক সময় সে খাটি হয় না ; নিজের স্বরূপেতে থাকা তার পক্ষে একান্তই কঠিন হইয় পড়ে। ভাল ইংরেজ ও খাটি ইংরেজ, এমন ইংরেজ তো দেখিয়াছি যাহা দিগকে আমাদে চক্ষে বড়ই ভাল লাগি চরিত-চিত্র > &Q য়াছে । এমন বিস্তর ইংরেজ সৰ্ব্বদাই তো দেখিতে পাই, যাহাদিগকে আমাদের চক্ষে নিতান্তই মন্দ ঠেকে। কিন্তু আমরা র্যাহাকে তাল বলি তিনিই যে খাটি ইংরেজ আর আমরা র্যাহাকে মন্দ দেখি তিনিই যে খাটি ইংরেজ নহেন, এমন কথা বলা যায় কি ? বরং আমরা যে ইংরেজকে বড় ভাল বলি তার পক্ষে খাটি ইংরেজ না হওয়ারই সস্তাবনা কি বেশী নাই ? লাট রিপণ, আমাদের চক্ষে ੋ ভলি ইংরেজ ছিলেন। তার মত এমন ভাল লাট বহুদিন ভারত শাসন করিতে আসেন নাই। কিন্তু রিপণচরিত্রে ষে বস্তু দেখিয়া আমরা এত মুগ্ধ হইয়াছিলাম সে বস্তু ইংরেজচরিত্রের বিশেষত্ব নহে। রিপণের শান্তমূৰ্ত্তি, সদাপ্রসন্ন ভাব, সমাহিত চেষ্টাচরিত্র, ধৰ্ম্মভয় ও ভগবস্তুক্তি দেখিয়া আমরা ইংরেজ অভিজাত্যের পরিচয় পাই নাই, বরং আমাদের সনাতন ব্রাহ্মণ্য অাদর্শেরই কথঞ্চিং অভিাস পাইতাম । আর তারই জন্য রিপণকে আমাদের এতটা ভাল লাগিয়াছিল। রিপণ লোক অতি মহৎ ছিলেন, সন্দেহ নাই ; কিন্তু খাটি ইংরেজ ছিলেন, এমন কথা, বলিতে পারি না। fরপণের মত, ভারত-বন্ধু স্তার হেনরি কটনও লোক অতি ভাল। রিপণকে দেখিয়া যেমন হিন্দু ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতের ভাব মনে আসিত, কটনকে দেখিয়া, তার কথাবাৰ্ত্তীয় ভাবশ্বভাবে, কতকটা সেইরূপ আধুনিকশিক্ষাপ্রাপ্ত, বিশ্বমানবভক্ত, বাঙ্গালী আন্দোলনকারী বা এজিটেটরদের স্মৃতি জাগিয়া উঠে। কলতঃ কটন যখন আসামের