পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> Rbア তারই ভিতর দিয়া যেন একটা সুন্দর সঙ্গত, মিলাইবার চেষ্টা করিতেছে, এরূপই মনে হয়, ইংরেজের চেহারাতে এ ভাবটী লক্ষ্য করা যায় না। আইরিশের বা ইতালীয়ের, প্রাচীন গ্ৰীণীয়ের বা রোমকের চেহারা দেখিলে মনে হয় যে বিধাতাপুরুষ বুঝি আপনার কারখানায় নিবিষ্টমনে বসিয়া ভাস্কর্যের চর্চা করিতে করিতে, অপূর্ব ৰiটুলি দিয়া, এ চেহারাগুলি খুদিয়া বাহির করিয়াছেন। কিন্তু ইংরেজকে গড়িতে যাইয়। কোনে! সূক্ষ্ম যন্ত্র ব্যবহার করিয়াছেন বলিয়া বোধ হয় না। ইংরেজের চেহারার উপকরণ: গুলি বেশ বাছিয়া গুছিয়াই যে সংগৃহীত হইয়াছিল, ইহা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু শেষটা যেন, কোনো দৈব কারণবশতঃ বিধাতাপুরুষ আঙ্গুল দিয়াই সেগুলিকেই ঠাসিয়া, টিপিয়া, ইংরেজের গড়িয়াছেন, এমনই মনে হয়। তারই জন্য ইংরেজের গঠনটা কেমন মেট, ভারি, স্কুল । চীন-জাপের মতন ইংরেজের নাক খাদা নয়, আবার আইরিশ বা ইতালীয়ের মত চাছাছোলা ও নয়, কিন্তু মোটা। ইংরেজের চক্ষু আকর্ণায় তও নহে, অথচ খুব ছোটও নহে; কিন্তু রংএ ও আকারে কতকটা মীর্জার চক্ষুরই মত ; তার মোহিনীশক্তি অত্যন্ত কম। ইংরেজের কেশ কটা ; চিবুক চওড়া ; গ্রীবা বঙ্কিমও নয়, খাটও নয়, কিন্তু কতকট। মোট । তার সমুদয় দেহগঠনই অনেকটা স্কুল । কিন্তু এই স্কুলত্বে কোনো বিশেয কমনীয়ত৷ ফুটিয়া উঠে না, কেবল সতেজ রক্তমাংসের একটা জীবন্ত প্রভাবই যেন অনুভূত হইয়। মূৰ্ত্তি লঙ্গদর্শন [ ১২শ পর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ থাকে। এই রক্তমাংসের প্রভাবের একটা বিশেষ শব্দ ইংরেজিতে আছে, আমাদের ভাষায় আছে বলিয়া জানি না । ইংরেজিতে এ বস্তুকে এনিম্যালিজম (Animalism) বলে। আর খাটি ইংরেজ যত কেন উন্নতচরিত্রের হউন না, এই এনিমলিঙ্গ বস্তুটী তার চেহারাতে সৰ্ব্বদাই স্বল্প বিস্তর ফুটিয়া রহে । বুলডগ (Bulklog) নামে যে এ ক জাতীয় বিলাতী কুকুর আছে, সারমেয়-সমাজে তার চেহারা যে ছাচের, কুকুরজাতির ভিতরে সে চেহারার যে বিশেষ স্থা আছে, মনুষ্যসমাজে ইংরেজের চেহার ও কতকটা সেই ছাঁচের ইংরেজত্বের মানস-লক্ষণ ইংরেজের চেহারা স্থল কিন্তু শক্ত, মোট কিন্তু অনমনীয়, কোন অঙ্গই তার অপরিস্ফুট নাই, অথচ কোন অঙ্গই যেন, জড়ত্বের ও ইতরজীবত্বের প্রভালকে অতিক্রম করিয়া উঠিতে পারে নাই । যেমন ইংরেজের চেহারায় বুল ডগ কে মনে করাইয়া দেয়, তেমনি তার প্রকৃতিও অনেকটা এই বুল্‌ডগেরই মত । বুলডগ, একবার কোনো শীকারের পশ্চাতে ছুটলে সে শীকারকে কখনো ছাড়িয় আসে না। একবার কোনো শীকারকে ধরিলে, প্রাণ যায় যাক্ তবুও তার দার্তের কবাট আর খোলে ন। ইংরেজও সেইরূপ যে লক্ষ্যকে একবার সন্ধান করে, তাহাকে কখনো লাভ না করিয়া ছাড়ে না। যাহা একবার ধরে, প্রাণান্ত হইলেও তাহাকে আর পরিত্যাগ করে না । সহজে সে কোনো বিষয়ে কাণ দেয় না। হুজুকে পড়িয়া সে আত্মহারা