পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

) రి: যে অক্সফোর্ড, বা ক্যাম্বুিজের লোক, এমন নহে। ইংরেজের বিশাল বাণিজ্য যাহার গড়িয়া তুলিয়াছেন, বোধ হয় র্তাহীদের একজনেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না। ইংরেজজাতির ক্ষত্ৰিবীৰ্য্য যে সকল মহাবীরকে আশ্রয় করিয়া ব্রিটিশসাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করিয়াছে, র্তাহীদের মধ্যে ক’জনের সঙ্গেই বা অক্সফোর্ড বা ক্যাম্বিজের কোন সম্পর্ক ছিল ? বারুণীর অঙ্কে বন্ধিত ইংরেজের নৌ-বিলাস হইতেই ইংলণ্ডের বিশ্ববিজয়িনী নৌশক্তির অভু্যদয় হইয়াছে অক্সফোর্ড বা ক্যাম্বিঙ্গের শিক্ষা হইতে হয় নাই । ফলতঃ সকলে অক্সফোর্ড বা ক্যাম্বিজে যাইতে পারে না বলিয়াই ইংরেজসমাজের এত লোক বলে কৃেণন শিক্ষা না পাইরাও শুদ্ধ আপনাদের অদম্য অধ্যবসায়বলে পরজীবনে সমাজের শ্রেষ্ঠজনের সমকক্ষ হইয়া উঠিতে পারে। এই অদম্য অধ্যবসায় ইংরেজ-চরিত্রের একটা বিশেষ লক্ষণ । ষ্টেডের অধ্যবসায় ও কৃতিত্ব এই অধ্যবসায় গুণেই ষ্টেড ও অতি সামান্ত গৃহস্থের ঘরে জন্মিয়, শৈশবে উপযুক্ত শিক্ষাদীক্ষালাতের কোনো সুযোগ ন। পাইয়াও, পরজীবনে কেবল আপনার দেশে নহে, কিন্তু সমগ্র সত্যসমাজে এতটা প্রসিদ্ধি লাভ করিতে পারিয়াছিলেন। একদিন যে সামান্ত হরকরার কাজে নিযুক্ত হইয়া লগুনের রাজপথে চিঠি হাতে করিয়া ছুটোছুটি করিত, পরে এমন এক দিন আসিল, যখন রুসিয়ার জার। Czar) ও জৰ্ম্মণীর ক্যায়সার ( Kaiser ), তুরস্কের বঙ্গদর্শন ১২শ বৰ্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ সুলতান ও ইংলণ্ডের সম্রাট, নিয়ম-তন্ত্রাধীন রাজমন্ত্রী ও প্রজাতন্ত্রাধীন প্রেসিডেন্ট, সমাজসংস্কারক ও ধৰ্ম্ম প্রচারক, র্তাহারই পরামর্শপ্রার্থী হইরাছিলেন। অথচ ষ্টেড, কখনো সাক্ষাৎভাবে কোন রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মভার গ্রহণ করেন নাই। ব্রিটিশ পালেমেণ্টে প্রবেশ করা তাহার পক্ষে অসাধ্য ছিল না। তাহার অপেক্ষ অনেক নীচুদরের ইংরেজও পালে মেণ্টে যাইয়া ক্রমে মন্ত্রীদলে পর্য্যন্ত ঢুকিয়াছেন । ইচ্ছা করিলে ষ্টেড ও তাহ পারিতেন কিন্তু এ চেষ্ট। তিনি কখনো করেন নাই। একবার কেবল তিনদিনের জন্য পালে মেণ্টে যাইবার তার সাধ হইয়া ছিল,—আমাকে একদিন কথা প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন। তখন আইরিস লোকনায়ক পার্ণেল জীবিত ছিলেন । সে সময়ে কি একট। সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় অহিতাচারের তীব্র প্রতিবাদ করা আবগুক হয়। ষ্টেণ্ড, পার্ণেলকে তখন একটা আইরিস কনষ্টিটুয়েনসী Constituency) জোগাড় করিয়া তিন-চা’র দিনের জন্য র্তাহাকে পালে মেন্টের সভ্য করিয়া দিতে বলেন । পালে মেণ্টে দাড়াইয়৷ এই অহিতাচারের প্রতিবাদ করিয়া একটা মাত্র বকৃত দিয়াই তিনি তার পদ প্রত্যাখ্যান করিয়া ধার স্থান তাহাকে দিতে রাজি হন। যাহা হউক ষ্টেডের এই ক্ষণিক সাধও পূর্ণ হয় নাই। কিন্তু পালেমেণ্টের সভ্য নাহইয়াও ব্রিটিশসাম্রাজ্যনীতির বিকাশসাধনে ষ্টেড, যতটা সাহায্য করিয়াছেন, গ্ল্যাডষ্টোন প্রভৃতি আতি অল্পসংখ্যক ব্রিটিশ ও ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যতীত আর কেহ ততটা সাহায্য করিয়াছেন কি না, সন্দেহের কথা!