X8b অগণ্য নক্ষত্ররাজি দশদিক্ পূর্ণ করিয়া, হীরার হাট খুলিয়া বসিয়াছে বলিয়া কৃষ্ণপক্ষের নিশির অন্ধকারও নাই । শান্ত স্বপ্রসন্ন প্রকৃতিমুখে নিৰ্ম্মমতার আভাস মাত্র নাই। অপূৰ্ব্ব রচনাকৌশলগুণে বিপুলকায় অর্ণব পোতের জলমশ্নের আশঙ্কর লেশমাত্র নাই । তড়িতলোকসমুজ্জল, বি বধ কলাকুশলপূর্ণ প্রমোদপ্রধাসমুখরিত ইন্দ্রপুরীর-স্থায় অর্ণবপোত আশ্রয় করিয়া দ্বিসহস্ৰাধিক আরোহী নিৰ্ভয়ে ও নিশ্চিত মনে অকূল জলরাশি ভাঙ্গিয়৷ চলিয়াছে। কেহ বা শুইয়াছে, কেহ বা শয়নের আয়োজন করিতেছে। কেহ বা ক্রীড়াকৌতুক করিতেছে, কেহ বা সঙ্গীতালাপ করিতেছে। কেহ বা আরামচৌকিতে বসিয়া নিবিষ্টমনে অধ্যয়ন করিতেছে, আর কেহ বা ডেকের উপরে পদচারণ করিতে রিতে প্রণীজনের সঙ্গে বিশ্বস্তlলাপ করিতেছে। কেহ বা ধনের কেহ বা দারিদ্র্যের, কেহ বা প্রেমের কেহ বা প্রতিযোগিতার, কেহ বা জ্ঞানের কেহ বা ললিতকলার, কচ বা সথ্যের কেহ বা সখের ভাবনা ভাবিতেছে। দুনিয়ার সকল ভাবনার বোঝ! পইয়৷ টাইটানিক শান্ত সমুদ্রাস্তুরাশি ভাঙ্গিয়া চলিয়ছে–নাই কেবল সে বিচিত্র পসীয় এক মৃত্যুর ভাবনা । সহসা যখন মরণের ডাক পড়িল, জাহাজের কল ধর্থন বন্ধ হইয়া গেল, আরোগীগণের প্রাণরক্ষার জন্ত লাইফবোট ( Life boat ) বা জীবনতরণীগুলিকে জলে নমাইবার ব্যবস্থা আরম্ভ হইল, সকলকে ডেকে যাইয়া দাড়াইবার জন্য যখন কাপ্তানের হুকুমঙ্গীরী হইল, তখনও সকলের প্রাণে সাড়। পড়িল না। কালের ভেরী বাজিল, তথপি অনেকে ক্রীড়া বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, আষাঢ়, ১৩১৯ কৌতুক ছাড়িল ন', 'অনেকের গীতবাদ থামিল না। বিজ্ঞানের প্রামাণ্যকে নষ্ট করিয়া, সভ্যতার অসাধারণ কৃতিত্বাভিমানকে চূর্ণ করিয়া, স্থির সমুদ্রে, নিৰ্ম্মল আকাশ তলে, টাইটানিক যে সহসা অতলে ডুবিবে বা ডুবিতে পারে, অনেকের মনে এ কল্পনার ৫ উদয় হয় নাই। প্রথমকার এ ভব সহজেই বুঝিতে পারা যায়। কিন্তু পরে যখন বিপদ ধে সত্য, মৃত্যু যে সন্নিকট এ বিষয়ে তিল পরিমাণ সন্দেহের আর অবসর রহিল না, তখনও যে কেন এই দ্বিসহস্রাধিক আরোহী এবং নাবিকের ভম্ব-বিক্ষিপ্ত হইয়া, শৃঙ্খলমুক্ত পশুর ন্যায় কে কাহাকে মারিয়া আপনকে বচাইবে সে চেষ্টায় জাহাঙ্গপানিকে কলহকোলাহলপূর্ণ করিয়৷ তুলিল না, এ রহস্য ভেদ করা সহজ মহে। এ সকল দেখিয়া শুনিয়া মনে হয়, যে আধুনিক সভ্যত। হয় মাত্যকে সর্বপ্রকারের সাধারণ মানব ধৰ্ম্ম-বিবর্হিত করিয়া জিহেবiপান্তসমন্বিত কাষ্ঠলোষ্ট্রে পরিণত করে, না হয় দেবত্বে । উন্নীত করিয়া তোলে। এ সকল কি মেহের ন মোক্ষের লক্ষণ ? টাইটানিকে যাহা দখিণম | তাঙ্ক কি জড়ত্ব না বীরত্ব ? 来源 来源 米 来源 আর এরূপ সন্দেহের কারণ এই যে আমরা য়রোপকে সূচরাচর ইহ-সৰ্ব্বস্ব বলিয়ার্চ মনে করি। যুধোপ ভোগের সন্ধানই ಕಿಃ|5, ত্যাগের নিগূঢ় তত্ত্ব এখনও লাভ করিতে পারে নাই, অনেক সময়ে আমরা এরূপই ভাবিয়াই থাকি । সুতরাং টাইটানিকের তিরোধানে যুরোপ যাহা দেখাইল, তাহার প্রকৃত মৰ্ম্ম আমরা সহজে ধরিয়া উঠিতে পারি না। কখনো মনে হয়, আমরা যুরোপকে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৫৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।