四环如] জাতি এবং ধৰ্ম্ম, এক হইলেও কেবল gম্বর পার্থক্যই বাঙ্গাল, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাৰ প্রভৃতিকে পৃথক্ করিয়া রাখিয়াছে। যে দিন বাঙ্গালার ভাষা হইতে আমাদের ভাষা পৃথক হইবে, সে দিন সহস্ৰ চেষ্টাতেও আমরা আর বঙ্কিালীর সঙ্গে এক জাতি হইয় থাকিতে পারিব না ; র্যাহারা স্থলভাবে দেখেন, তাহারা বলিবেন, যে দিন শ্ৰীহট্ট আসামের অন্তভুক্ত হইয়াছে, সেইদিনই শ্রীহট্টবাসী আসামবাসী—আসামী হইয়৷ পড়িয়ছে। এ সম্বন্ধে একটি ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত আমার মনে পড়িতেছে। কয়েক বৎসর হইল হৰিগঞ্জে কি একটা ক্ষুদ্র ঘটনা ঘটিয়াছিল, কলিকাতার কোন সংবাদপত্রের সংবাদ-স্তম্ভে সেই সংবাদ এইরূপে প্রকাশিত হয় যে, পূৰ্ব্ববঙ্গের হবিগঞ্জে অমুক ঘটনা ঘটিয়াছে। ঘটনাটি এতই ক্ষুদ্র ও উপেক্ষণীয় যে, তাহার কিছুমাত্র আমার স্মরণ নাই। কিন্তু তাহার অব্যবহিত পরেই পূৰ্ব্ববঙ্গের কোন পত্রিকায় তাহার যে প্রতিবাদ হয়, তাহার গভীর স্মৃতি আজও আমার মনে রহিয়াছে। প্রতিবাদের মৰ্ম্ম এই যে, কলিকাতার সম্পাদক নিজের অজ্ঞতাবশতঃ পূৰ্ব্ববঙ্গের নামে একটা ংবাদ প্রকাশ করিয়াছেন ; তাহীর জান৷ উচিত ছিল যে, হবিগঞ্জ আসামে, পূৰ্ব্ববঙ্গে নহে । একই কথা উপরে উপরে দেখিলে অনেক সময়ে হাসি পায়, কিন্তু আবার তলাইয়৷ দেখিলে তাহতেই চক্ষের জলও আসিতে °ዝርፏ ! * প্রাস্তবাসী বাঙ্গালীর প্রতি স্থবিধা এবং অনুগ্রহের জন্য রাজদ্বারে র্কাদিবীর যেরূপ অধিকার আমাদের আছে, আমঞ্জী সভাপতির অভিভাষণ ל"לל সেইরূপে কাদিতে থাকিবই, মহামান্ত সম্রাট পঞ্চম জজের মহাবর এবং মহাবাক্য আংশিক ভাবেও ব্যর্থ হইতে দিব না। যতদিন রাজার সামুগ্রহ দৃষ্টি অভিশপ্ত প্রস্তবাসী বাঙ্গালীর উপরে নিপতিত না হইবে, ততদিন পর্যন্ত কম্পন, স্পন্দন প্রভৃতি জীবনলক্ষণ আমরা কখনও ছাড়িতে পারি না । কিন্তু রাজদ্বরে প্রতীকারের চেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মাতৃভাষার অনুরাগ এবং অনুশীলন যাহতে শতগুণে বৰ্দ্ধিত হয়, ঐখন তাহ নিতান্ত প্রয়োজনীয় হইয়া উঠিয়াছে, গবর্ণমেণ্টের বর্তমান কাৰ্য্যবশত: মাতৃভাষার অনুশীলন আমাদের জাতীয় জীবন-কাঠি মরণ-কাঠি হইয়া উঠিয়ছে । যুক্তবঙ্গের সঙ্গে যোগ-রক্ষা শিশু যতক্ষণ মাতার অঞ্চল ধরিয়া থাকে, ততক্ষণ সে নিজেও নিভীক, তাহার মাতা ও নিশ্চি স্থ। কিন্তু যদি কেহ কখনও সেই শিশুকে মতার অঞ্চল হইতে কাড়িয়া লইতে ধায়, তখনই প্রকৃতরূপে বুঝিতে পারা যায় মাতার প্রতি শিশুর কিরূপ টান, শিশুর প্রতি মাতার কিরূপ মৰ্ম্মচ্ছেদ আকর্ষণ। যুক্তবঙ্গ আমাদের সেই মা এবং বঙ্গ ভাষা আমাদের সেই মাতুঅঞ্চল, আমরা প্রাণপণে সেই অঞ্চলটুকু অ'কড়িয়া ধরিয়া থাকিয়া তারস্বরে, করুণকণ্ঠে চীংকার করিতে থাকিব, আমরা প্রাণ থাকিতে মা এবং ভাইকে ছাড়িয়া পৃথক হইয় থাকিব না, প্রতিবাসীর জাতিত্বে আপনার জাতিত্বকে নিমজ্জিত করিতে পারিব না । বাঙ্গালীর মধ্যে বাঙ্গালীর সঙ্গে আমরা সকলের ছোট হুইয়া থাকি, সেও আমাদের গৌরব ; বাঙ্গালী জাতি হইতে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৮৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।