ماسbلا বর্ণমালা শিক্ষা দেওয়া হয়, তপন হইতেই এদিকে তীব্র দৃষ্টি রাখা কৰ্ত্তব্য। শিক্ষকদিগের অন্তান্ত গুণ-পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তাহদের কণ্ঠে উচ্চারণগত জড় । বৰ্ত্তমান আছে কি ন৷ তাহাও দেখা কৰ্ত্তব্য দেখা গিয়াছে, অনেকে ইচ্ছা করিলেই বিশুদ্ধ বাঙ্গালী ভাষায় কথা কহিতে পারেন, কিন্তু অনেক স্থলে সে ভাবে আলাপ করিতে ই হার লজাবোধ করেন। এ লজ্জার অর্থ বুঝিতে পারি না। প্রাদেশিক গারিবারিক ভায হইতে বিশুদ্ধ সাধু ভায। যদি উংকৃষ্ট মৃতরাং প্রার্থনীয় হয়, তবে তাহার বাবগরে লজ্জার কারণ কি ? সাহিত্যিক ভাষার পরিচয় কাগজে কলমে এবং কথিত ভাষার পরিচয় কথাবাৰ্ত্তায় । কথাবাৰ্ত্তায় বিশুদ্ধ ভাষার ব্যবহার করিতে ষদ লজ্জ বা আলস্য হয়, তাহ হইলে সমাজের চলিত ভাষা উন্নত হইবে কিরূপে ? অবশ্য সাহি ে ভাষা ঠিক কথিত ভাষারূপে ব্যবহৃত হইতে পারে না। কথায়-বাৰ্ত্তীয় সাহিত্যের ন্যায় গম্ভীর ভাষা ব্যবহার করিতে গেলে হাস্যাম্পদ হইবারই কথা; কিন্তু তাই বলিয়া বাক্যালাপের সী য় কেবল যে সাধুজন-বর্জিত এবং সৰ্ব্বসাধারণর অপরিচিত প্রাদেশিক ভাষারই ব্যব র করিতে হইবে এমন কোন কথাই নাই। ব্যক্তি-বিশেষ শিক্ষিত কি অশিক্ষিত, তাহার ব্যবহৃত ভাষাই তাহার পরিচায়ক । দেশ-বিদেশের ভাষা উন্নত কি অবনত, তদেশবাসী জনসাধারণের কথাবাৰ্ত্তাই তাহার পরিচায়ক । শিক্ষিত লোকের সংখ্যা যেমন দিন দিন বৰ্দ্ধিত হইতেছে, তাহাদের ব্যবহৃত ভাষাও যদি সেই সঙ্গে দিন দিন উন্নত হক্টতে থাকে, তাহা হইলে প্রাদেশিকতা যে অনেক কিন্তু বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ম, আষাঢ়, ১৩১৯ পরিমাণেই বিদূরিত হইতে পারে, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই । গ্রন্থ-নিৰ্ব্বাচন কোন গ্রন্থের ভাষা আমাদের অনুকরণীয় কোন গ্রন্থের ভাব এবং উপদেশ আমাদের পক্ষে উপযোগী এবং মঙ্গলজনক, সুতরাং প্রার্থনীয়, তাহা অবধারণ করিবার জন্য দেশের মধ্যে অন্ততঃ স্বরমোপত্যকাতে একটা ব্যবস্থ৷ থাকা উচিত মনে করি। গ্রন্থ বাহির হইলেই তাহার বিজ্ঞাপনের মধ্যেই সচরাচর একটা সমালোচনা বাহির হইয় থাকে। ইহাকে বৈজ্ঞাপনিক সমালোচনা বলা যাইতে পারে। ইহাতে গ্রন্থের প্রকৃত দোষ-গুণ, প্রকৃত মূল্য, বুঝিতে পারা যায় না ; স্বতরাং এই বিজ্ঞাপনের জাকজমকে মোহিত হইয়া অনেকে আগ্রহ সহকারে পুস্তক ক্রয় করেন। কিন্তু তাহা পাঠ করিয়া অর্থব্যয় সফল হইল বলিয়া মনে করিতে পারেন না । দেশের লোকের অবস্থা এমন নহে যে স্বপাঠ্য হউক আর নাই হউক বিজ্ঞাপন দেখিয়া তাহারা সমস্ত পুস্তকই কিনিতে পারে। এ অবস্থায় যদি এমন একটা সভাসমিতি কিছু থাকে যে, তারা নূতন পুস্তকের ভাষা ও ভাব প্রভৃতির দোষ-গুণ সৰ্ব্বাগ্রে আলোচিত হয় এবং সেই সভার মত লইয়া তবে সাধারণ লোকে গ্রন্থ ক্রয় করে, তাহা হইলে দেশের অনেক উপকার হয়। দেশের ভাষা এবং সাহিত্যকে উন্নত করিতে হইলে সৰ্ব্বাগ্রে সাধারণের সম্মুখে ভাষা এবং সাহিত্যের নির্দোষ আদর্শই ধরিতে হইবে। আমি ভূরসা করি, আপনার এই বিষয়টি বিশেষরূপে চিন্তা করিয়া দেখিবেন, এবং যদি আপনাদিগের অভিমত হয়, তাহা হইলে ভাষা
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/১৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।