পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ"8 মূলধন প্রায় নিঃশেষিত হইয়াছে, শুনিয়া বিক্ষিত অমুকুল বলিল—সে কি ? তাহলে দল চলিবে কি করে? উদ্যোগী মন্মথ বলিল আর সে জন্য ভাবনা নেই। স্বমুখেই আশ্বিন মাস। দুটো একটা বায়ন জুটে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।” অমুকুল বলিল “সে কি মন্মথ ? এখনো গান বাজনা কিছুই ঠিক হয়নি। এ অবস্থায় বায়ন পেলেই বা নেবো কি করে ?” চতুর মন্মথ হাস্ত করিয়া বলিষ্ঠা—সে জন্য তোমার কোন ভাবনা নেই। সে ভার আমার উপর রইল, তুমি কেবল হরিশ্চন্দ্রের পাঠটা ঠিক করে নাও।” - * বন্ধুর উৎসাহে আনন্দিত অমুকুল সকল কৰ্ম্ম ছাড়িয়া নির্জন প্রান্তরে অপরাহ্নের স্বর্য্যের দিকে চাহিয়া চাহিয়া 'হ বিবশ্বান হায় স্বৰ্য্যবংশের কুলপতি—আজ এখনি উদিত হ’লে ! নিজের অকৃতী সন্তানের সৰ্ব্বনাশ দর্শন করতে তোমার এত আগ্রহ কেন দেব ?”—বলিয়া প্রাণপণে আপনার “পার্ট” মুখস্থ করিতে লাগিল । 8 মন্মথনাথের আন্তরিক চেষ্টা ও উৎসাহে —অমুকুলের “দলের" এক বায়ন জুটিল। গন্তব্যস্থান পদ্মাপারের এক জমিদার গৃহ। পরম উৎসাহে নূতন হ্যাণ্ডনেট কাটিয়া পাথেয় সংগ্ৰহ করিয়া অমুকুলের যাত্রার দল বিস্থিত গ্রামবাসীর নিমিবহীন নেত্রের উপর দিয়া কল্যাণপুরের ঘাটে নৌকারোহণ করিল। বেচার অনুকুল সমস্ত পথ পার্ট মুখস্থ করিতে করিতে চলিল এবং অবসর মত “হরিশ্চন্দ্রের” দাড়াইবার, রোদন বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, আধাঢ়, ১৩১৯ করিবার ভাবভঙ্গী কিরূপ হইলে ঠিক স্বাভাবিক হয় মনে মনে তাঁহাই ভাবিয়া লইতে লাগিল । তিন দিনের পর অবসন্ত্রদেহে প্রজ্জ্বলিত জঠরে মুঘু, মানবসন্তানগুলি “মৌন মুক ধীর। মাতৃভূমির” তটলাভ করিয়া আশ্বস্ত হইল । গ্রামের লোকে পরম সমাদরে তাহাদের অভ্যর্থনা করিয়া লইয়া গিয়া জমিদারের সুবৃহৎ গেtশালায় তাহাদের জন্ত স্থান নির্দিষ্ট করিয়া দিল । নিশীথরাত্রে মোট চাউলের অন্ন, জলবং তরল দাইল এবং মশক সস্থল, গোমূত্র স্বরতিত গোশালার তৃণ শয্যায় শয্যাগ্রহণ করিয়া অন্ধকূলের সৌভাগ্য গৰ্ব্ব অনেকটা লঘু হইয়া আসিল । তাহার পর রাত্রি দুইটা বাজিতে না বাজিতেই যখন গ্রামের অবশিষ্ট দলপতিগণ, নাসিক গৰ্জ্জন সহকারে নিদ্রা দিবার खकृ তাহদের ডাকিয় আনা হয় নাই বলিয়৷ হুলু স্কুল বাধাইয়া দিল এবং অনুকূল তাহীদের অভদ্রতায় প্রতিবাদ করিব মাত্র যাত্রার দলের লোকদের পৃষ্ঠের দৃঢ়তা পরীক্ষার জন্য তীব্র আকাঙ্খা প্রকাশ করিল,তখন হতভাগ্য অমুকুলের পক্ষে শুভদৃষ্টের প্রতি বিশ্বাস রক্ষা করা মুকঠিন হইয়া উঠিল। চক্ষু মৰ্দ্দন করিতে করিতে এবং অদৃষ্টকে ধিক্কার দিতে দিতে সে শয্যা ত্যাগ করিল। রাত্রি তিনটা হইতে যাত্রা আরম্ভ হইল। . একেই পার্ট, ভাল করিয়া তৈয়ারি হয় নাই, তাহার উপর পথশ্রমে এবং অনিদ্রায় সমস্তই আরও গোলমাল হইয়া