পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

2૨ অবতীর্ণ হইয়া, এই সকল পরিবর্তনযোগ্য বিধিব্যবস্থা রহিত করিয়া, নূতন বিধি ব্যবস্থা প্রবর্তিত করেন। তখন হিন্দু নিঃসঙ্কোচে এই মহাজনপন্থার আনুগত্য গ্রহণকরিয়া,প্রচলিত ও পুরাপ্রতিষ্ঠিত পরিবর্তনযোগ্য সামাজিক বিধিব্যবস্থার পুরাতন আনুগত্য পরিত্যাগ করিয়া থাকেন। এই প্রণালীতে যেখানে সমাজের সংস্কর সাধিত হয়, যেখানে এই সংস্কারচেষ্টা শুদ্ধ,সমাজের ব্যক্তিগণের স্বাভিমতের উপরে প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে না। সমাজ-সংস্কারের নামে, তখন সমাজের জনগণমধ্যে অসংযত ব্যক্তিত্বাভিমান জাগ্রত হইয়া, তাহাদিগকে স্ব-, স্ব-প্রধান করিয়া, সমাজ শাসনকে শিথিল করিয়া দেয় না। সেখানে প্রকৃতজনের অশোধিত বিচারবুদ্ধি ও অসংযত ভোগলালসার দ্বারাই প্রচলিত রীতিনীতির পরিবর্তনযোগ্যতাও প্রমাণিত হয় না এবং প্রাচীন ও প্রচলিত বিধি-ব্যবস্থার বখত অস্বীকার করিতে যাইয়া, সমাজসংস্কারচেষ্ট সমাজমধ্যে অরাজকত আনয়ন করিতে পারে না। যুগে যুগে, এই ভাবেই হিন্দুসমাজের সংস্কার ও বিবর্তন ঘটিয়া আসিয়াছে। মহাজনপন্থার অনুসরণ করিয়াই হিন্দু সৰ্ব্বদা আপনার সমাজের সংস্কার ও শোধন করিয়াছেন। আর এই কারণেই, প্রাচীন ও প্রচলিত সমাজবিধিকে অগ্রাহ করিয়াও, হিন্দু প্রকৃতপক্ষে কখনো সৰ্ব্বধৰ্ম্মমূল যে সমাজামুগত্য তাহাকে একান্তভাবে বর্জন করেন নাই, করিবার প্রয়োজনও কদাপি হিন্দুসমাজে উপস্থিত হয় নাই। মহাজন-পন্থীর প্রণালী কিন্তু কোনো সমাজের সকল লোকই সৰ্ব্বদা সেই সমাজের মূল প্রকৃতিকে সঙ্গুনে বঙ্গদর্শন ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ আয়ত্ত্ব করিতে পারে না। . সকলেই তার শ্রেষ্ঠতম বিধান বা উৎকৃষ্টতম আদর্শানুযায়ী আপনাদিগের জীবনকে গড়িয়ু তোলে না। এই জন্য কালবশে যুগে যুগে যখনি সামাজিক রীতিনীতির পরিবর্তন আবণ্ঠক হইয়াছে, তখন गरुन श्मूिहे 6 ७३ मशंखनभइ ऑथग्न করিয়াছেন, এমন বলা যায় না। আর কোনো যুগেই যুগপ্রবর্তক মহাজনেরা সেই যুগের প্রারম্ভেই আবিভূতও হন না। প্রথমে নানা কারণে সমাজ-মধ্যে নুতন আদর্শ ও নূতন শক্তি প্রতিষ্ঠিত হইতে আরম্ভ করে। তখন অল্পে অন্নে নুতনে ও পুরাতনে দ্বন্দ উপস্থিত হইয়া, সমাজমধ্যে বিশৃঙ্খলা আনয়ন করিতে থাকে। আর তখন হইতেই এই সকল যুগপ্রবর্তক মহাজনগণের আগমনের প্রয়োজনের সঙ্গে । সঙ্গে তাহার আয়োজনও আরম্ভ হয়। কিন্তু এই সকল সামাজিক বিশৃঙ্খলার একাত্ত অতিশয্য না হওয়া পৰ্য্যন্ত র্তাহারা আবিভূত । হন না । কারণ ধৰ্ম্মের গ্লানি এবং অধৰ্ম্মের অভু্যদয় একটা বিশেষ মাত্র লাভ না করিলে, যুগপ্রবর্তক মহাজনগণ আত্মপ্রকাশ করেন না। সুতরাং প্রত্যেক যুগসন্ধিস্থলেই, এক দল লোকে মহাজনপদাশয় লাভ না করিয়াও, শুদ্ধ আপনাদের বিচারবুদ্ধির প্রেরণাতেই সমাজের প্রবুদ্ধ গতিশক্তিকে অবলম্বন করিয়া থাকেন । সে সময়ে আর একদল লোক সমাজস্থিতিরক্ষার্থে প্রাচীন ও প্রচলিত রীতিনীতিকেই আশ্রয় করিয়া রহেন। কিন্তু যথাসময়ে মহাজনের আবির্ভূত হইলেই যে সকলে বা অনেকে একযোগে তাহাদিগকে আশ্রয় করেন, তাহাওঁ নহে । তখনো একদল লোকে প্রাচীনকেই ধরিয়া রহেন। হিন্দুসমাজের