পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rety বলিয়াছি যে এ সকল চিত্রে একটা গুঢ় ভাব নিহিত আছে—শ্ৰীকৃষ্ণের উত্তরে সেই ভাবটা পরিস্ফুট হয় ; কবি তাহার মধ্যেও শব্দবাঙ্গ ও অর্থব্যঙ্গের অবতারণা করিয়া রহস্যজালে আবৃত করিয়া তাহীকে আরও মনোরম করিয়াছেন । করে তুলি কেলি করি ডুবিল ডুবিল তরী ফের হাল খসি পইল জলে। পবনে পাতিল ঝড় ; তরঙ্গ হইল বড় বুঝি আঙ্গ কি আছে কপালে । একূল ওকুল দুকুল নিরীকুল তরঙ্গে তরণী স্থির নয়। - আমি কি করিব বল উথলে যমুন জল কাণ্ডার করেতে নহি রয় ॥ এত দিন নাহি জানি লোক মুখে নাহি শুনি যুবতীর যৌবন এত তারি। নিজ অঙ্গ বাস ছাড় যৌ ন পাতল কর— তবে জে বাহিয়া যাইতে পারি ॥ নৌকা-বিহারের শেষ পাদ এতৎসম্বন্ধীয় পদাবলীর ভাৎপৰ্য্যার্থ কবি নিজে পরিষ্কার করিয়া দিয়াছেন – ওহে নাবিক কে জানে তোমার মহিমা । নাম নৌকায় নিরবধি পার কর ভবনদী তব আগে কি ছাঁর যমুনা। চরণ তরণী যার যে করে তোমারে সার কিবা তার পারের ভাবন ॥ অতএব শ্ৰীকৃষ্ণের ভক্তির মৰ্ম্ম গ্রহণ করা সহজ হইয় পড়ে। বাসনার বোঝা না নামাইতে পারিলে জলস্রোতে যে তরণী ডুবিবে তাহাতে আশ্চৰ্য্য কি ? তাই শ্ৰীকৃষ্ণ রাধিকাকে “যৌবন পাতল ” করিতে বলিয়াছেন। যৌবনেই বিষয়-বাসন, ভোগ বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, আষাঢ়, ১৩১৯ বাসনা প্রবল হইয়া দাড়ায় ; তাই বিষয়বাসন বোঝাইবার জন্য “যৌবন" শব্দের ব্যবহার করা হইয়াছে। শব্দের লক্ষণাশ্রিত ব্যঞ্জনা-শক্তির পরিচয় এই স্থানে ভালরূপে আমরা পাইতেছি। দানলীলায় উপস্থিত হইয়া আমরা ইহার আরও প্রকৃষ্ট পরিচয় পাইব। একটা মাত্র উদাহরণ দিলেই চলিবে । অমূল্য রতন করিয়া গোপন রেখেছ হিয়ার মাঝে । নিজ ভাল চাহ খসাই দেখাহ ইথে কি আবার লাজে ॥ ঐ চারিটী ছত্রের মধ্যে অনেক সুন্দর ভাব লুকাইত আছে, খসাইয়া দেখিতে পারিলে তাহা দেখিতে পাওয়া যাইবে। প্রথম সাদাসিদে অর্থটাই দেখা যাউক। অবশ্য সে অর্থ আজকালকার রুচির সম্পূর্ণ অনুমোদিত হইবে না, ন হইলেও কবির বাক্যরচনা-শক্তির পরিচায়ক বলিয়। আমরা তাহা বিবৃত করিতে কুষ্ঠিত হইলাম না। কেবল বাক্যার্থ ধরিলে এই বুঝিতে হইবে যে দাসী সন্দেহ করিতেছে যে যাত্রীর হৃদয় মধ্যে কোনও ধন গুপ্ত আছে, তাই সে তাহা খুলির দেখিতে চাহে । আজকালকার Octroi officerai (ARE sitätz, Tite বাস্ক পেটরা খুলিয়া দেখিয় লয়, ইহাও এক রকম সেইরূপ দেখিবার দাবী। কিন্তু আমরা বেশ বুঝিতে পারি যে কবির অভিপ্রেত অর্থ অন্ত রকম ; তিনি শব্দের ব্যঞ্জন-শক্তৃিত্বারা বুঝাইতে চাহেন যে কৃষ্ণ রাধিকার বসনাবৃত স্তনযুগল দেখিতে চাহিতেছেন । এই তা গেল সহজ ব্যঞ্জনা;