२५७ টাকার ঝুকি বহন করিতে হইয়াছে, তাহাদের পক্ষে কনগ্রেসের কার্যকলাপে মেহেতা সাহেবের অভিপ্রায়ের প্রত্যক্ষ প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না । মেহেতা সাহেবের নিকটে কন্গ্রেসর এই দীর্ঘকালব্যাপী অল্প-ঋণ স্মরণ করিয়াই, অপরাপর নেতৃবর্গ কনগ্রেসের কার্য্য পরিচালনায় তার অভিমত ও আবদার মানিয়া চলিয়াছেন। কুনগ্রেসের অন্যতম উত্তমণ বলিয়াই কন্গ্রেস্থ মণ্ডপে স্যার ফিরোজশাহ মেহেতার একটা প্রতাপ ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুবা কনগ্রেসের বাহিরে, দেশের সাধারণ রাষ্ট্ৰীয় কৰ্ম্মকৰ্ম্মের উপরে, কিম্বা ভারতের ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশের আধুনিক-শিক্ষ+ প্রাপ্ত সম্প্রদায়ের চিত্তে, মেহেতার চরিত্রের বা প্রতিভার কোনোই প্রভাব কখনই প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে বলিয়া মনে হয় না। ভারতবর্ষীয় ব্যবস্থাপক সভায়, কোনো কোনো বিষয়ের আলোচনায়, অপরাপর সভ্যগণের তুলনায়, কখনো কখনো, অসাধারণ সাহসিকতার ও বিশেষ কৃতিত্বের প্রমাণ প্রদান করিয়া, শ্ৰীযুক্ত গোপালকৃষ্ণ গোর্থেলে ভারতব্যাপী একটা খ্যাতি ও মর্য্যাদা লাভ করিয়াছেন, সত্য। আর এ থ্যাতি ও মর্য্যাদা তার পণ্ডিত্য ও চরিত্রের উপরেই যে অনেকটা প্রতিষ্ঠিত, ইহাও অতিশয় সত্য , গোখেলে সদ্বিদ্বান, ও কোনো কোনোবিদ্যায় স্বল্পবিস্তর বিশেষজ্ঞতাও র্তার আছে । যুরোপীয় অর্থনীতি-শাস্ত্রে গোখেলের যে পরিমাণ অধিকার জম্মিয়াছে, ভারতের আর কোনো লোকপ্রসিদ্ধ রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মনায়কের তাহ আছে কি না সন্দেহ। যে প্রণালী অবলম্বনে ইংরেজ রাষ্ট্রনীতিকের বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৯ বিবিধ রাষ্ট্রীয় বিষয়ের বিচার-আলোচনা করিয়া থাকেন, সেই প্রণালী অবলম্বনে পরমতখণ্ডন ও স্বমত-প্রতিষ্ঠায় গোখেলে একরূপ সিদ্ধহস্ত। ইংরেজের চিরাভ্যস্ত বাদ-বিদ্যায় ইংরাজিতে ইহাকে ডিবেট (Debate) বলে— লাট কার্জনের মত পারদর্শী লোক ইংলা গুও এখন কম । অথচ কখনো কখনে এই লাট কাজ নকেই এ বিষয়ে গোখেলের নিকটে ২ার মানিতে হইয়াছে। আর আপনার বিচারবুদ্ধি অনুযায়ী স্বদেশের সেবাতে জীবন উংসর্গ করিয়া, গোখেলে এ পর্যন্ত যে ঐকান্তিকী নিষ্ঠা সহকারে এই সেবাব্রত উদযাপন করিতে চেষ্টা করিয়া আসিয়াছেন, ভারতের অন্য কোনো লোকনায়কের মধ্যে সেরূপ ঐকান্তিকী নিষ্ঠাও দেখা যায় নাই। গোখেলের মধ্যে যে সকল গুণের সমাবেশ হইয়াছে, সে সকল গুণ এদেশের অষ্ঠ কোনো প্রসিদ্ধ লোকনায়কের মধ্যে সে মাত্রায় দেখা যায় নাই ; ইহা সত্য বটে, কিন্তু তবুও গোৰ্থেলের বর্তমান ভারতব্যাপী খ্যাতি যেকেবল তারপণ্ডিত্য ও চরিত্র বলেই অর্জত হইয়াছে, এমন কথাও বলা যায় না। স্বৰ্গীয় মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে যদি গোখেলেকে হাতে ধরিয়া না তুলিতেন ; পুনার সাৰ্ব্বজনীন সভা যদি, রাণীডের অনুরোধে, গোখেলেকে ওয়েলী কমিশনের সম্মুখে আপনাদের প্রতিনিধিরূপে প্রেরণ না করিতেন ; প্রথম বারে বিলাত হইতে ফিরিয়া আসিয়া, বিলাতী সংবাদপত্রে, প্লেগ-বিধানের প্রবর্তন সম্বন্ধে পুনরি ইংরেজ সৈন্তগণের বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ আনিয়াছিলেন, গোখেলে বদি জাহাজ-ঘাটেই সৰ্ব্বোতোভাবে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২২১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।