ᎸᏱb" রাজপুরুষের বিস্তৃত হন নাই। প্রত্যুত যতই সুরেন্দ্রনাথ রাষ্ট্রীয় আন্দোলন-আলোচনায় দেশের জনশক্তিকে প্রবুদ্ধ করিয়া, আপনি সেই শক্তি সাহায্যে শক্তিশালী হইয়া উঠিতেছিলেন, ততই তাহারা সেই প্রাচীন লাঞ্ছনার স্মৃতিকে প্রাণপণে জগাইয়া রাখিবার জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন, ইহাও সকলেই জানেন। সেই রাজপুরুষেরাই, আজিকার অবস্থাধীনে, আপদ-বিপদে, প্রতিপদেই দেশের প্রজামতের পোষকতা-লাভের লোড়ে, সুরেন্দ্রনাথের পরামর্শ গ্রহণ করিতেছেন। যে কন্গ্রেসের কাজকৰ্ম্ম আজ সুরেন্দ্রনাথকে ছাড়িয়া কিছুতেই চলে না ও চলিতে পারে না ; একদিন, কন্গ্রেসের জন্মকালে, তাহার জন্মদাতা ও ধাত্রীবর্গ সকলে প্রাণপণে সেই সুরেন্দ্রনাথকে তাহার বাহিরে রাখিতে চাহিয়াছিলেন, এ কথাও মিথ্যা নয়। স্বৰ্গীয় উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্যার ফিরোজশাহ মেহেতা উভয়েই সুরেন্দ্রনাথকে কন্গ্রেসের কৰ্ম্মে আমন্ত্ৰণ করিতে চান নাই। হিউম সাহেবও প্রথমে তাহাঁদের মতেই মত দিয়াছিলেন। হিউম ভারত গবৰ্ণমেণ্টের সেক্রেটারী ছিলেন। ইংরেজ সিভিলিয়ানদের মধ্যে সুরেন্দ্রনাথের প্রতি যে অশ্রদ্ধা বহুদিন হইতেই জাগিয়াছিল, হিউমের মনেও যে তাহা ছিল না, এমন নহে। তার উপরে যখন উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও মেহেতা প্রভৃতি কন্গ্রেসী নেতৃবর্গ সুরেন্দ্রনাথের সাহায্যগ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করিলেন, তখন হিউম যে সেই মতে সায় দিবেন, ইহা আর বিচিত্র কি ? কিন্তু কন্গ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনের ব্যবস্থা করিবার জন্য হিউম যখন কলিকাতায় আসিলেন এবং সুরেন্দ্রনাথকে বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, শ্রাবণ, ১৩১৯ ছাড়িয়া বাংলা দেশের লোকমতকে কনগ্রেসে টানিয়া আন যে একান্তই অসম্ভব, ইহ দেখিলেন ও বুঝিলেন, তখন তার মত ফিরিয়া গেল এবং বন্দ্যোপাধ্যায় ও মেহেতা প্রভৃতির আপত্তি অগ্রাহ করিয়া, গুণগ্রাহী হিউম স্বয়ং সুরেন্দ্রনাথকে কন্গ্রেসের কৰ্ম্ম-নেতৃত্বে বরণ করিয়া লইলেন। আজ সুরেন্দ্রনাথের অনেক সহায়-সম্পদ লাভ হইয়াছে। আজ তিনি দেশের রাজপুরুষ ও রাজারাজড়ার দ্বারা সম্বদ্ধিত ও সন্মানিত হইতেছেন। কিন্তু একদিন তাহাকে নিঃসহায় ও নিঃসম্বল অবস্থায়, “শোথের শেয়ালার” মত, দেশের রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মস্রোতের ঘাটে ঘাটে ফিরিতে হইয়াছিল। আর আজ তিনি আধুনিক ভারতের রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসে দে অনন্তপ্রতিযোগী প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন, তাহা কোনো প্রকারের অনুকূল ঘটনাপাতের ফল নহে। এ কীৰ্ত্তি অর্জনে কেহ তাহাকে কোনো প্রকারে সাহায্য করে নাই। ইহা সৰ্ব্বতোভাবেই তার স্বেীপার্জিত। কেবল আপনার প্রতিভা ও পুরুষকারের বলেই স্বরেন্দ্রনাথ এ দেশের বর্তমান রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মজীবনে এই অনন্তপ্রতিযোগী নেতৃত্ব-মৰ্য্যাদা লাভ করিয়াছেন। এইখানেই তার বিশেষত্ব ও মহত্ত্ব । সুরেন্দ্রনাথের চরিত্র অশেষ প্রকারের প্রতিকূল অবস্থার ভিতর দিয়া সুরেন্দ্রনাথের কৰ্ম্মজীবনগড়িয়া উঠিয়াছে। আয় এই সকল প্রতিকূল অবস্থাকে অতিক্রম করিয়া তার এই কৰ্ম্মজীবন যে এমন অদ্ভূত সফলতা লাভ করিয়াছে, ইহাতে সুরেন্দ্রনাথের অসাধারণ মানসিক বলেরই প্রমাণ প্রদান
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।