পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] স্থানে নূতন খৃষ্টীয় সঙ্গ-প্রতিষ্ঠিত হইয়া খৃষ্টয়ান সেগুলীর ব্যক্তিত্বাভিমানকে এগানেও pপিয়া রাথিতে লাগিল । ইহুদায় ও গ্রীসে যেমন সমাজান্তর্গত ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিকে একান্ত সবেই সমাজশক্তির ও রাষ্ট্রশক্তির অধীন করিয়া রাথিয়াছিল, প্রথম যুগের খৃষ্টীয় সাধনাও সেইরূপই খৃষ্টীয়ান জনসাধারণকে একান্তভাবেই (hurch এর বা খৃষ্টীয় সজ্যের অধীন করিয়া রাখে। প্রভুশক্তির রূপান্তর ও নামান্তর হইল মাত্র, কিন্তু জনমণ্ডলীর ঐকান্তিক পরাধীনতার কেনিষ্ঠ পরিবর্তন হইল না । এইরূপে যেমন প্রাচীন গ্ৰীক ও রোমক তন্ত্রে, সেইরূপ নূতন খৃষ্টীয় তন্ত্রেও জনগণের ব্যক্তিত্ব-মৰ্য্যাদার প্রতিষ্ঠা হয় নাই। বহু শতাব্দ ব্যাপিয়া এক দিকে পৌরহিত্য-প্রধান রোমক খৃষ্টীয় সঙ্ঘ ও অন্যদিকে স্বেচ্ছাচারী প্রজারঞ্জনবিমুখ খৃষ্টীয়ান ভূপতিবর্গ, উভয়ে মিলিয়া যুরোপীয় জনমণ্ডলীর অন্তর্বাহ সৰ্ব্বপ্রকারের স্বাধীন চেষ্টাকে একান্ত ভাবে অবরুদ্ধ করিরা, তাহাঁদের প্রাণগত ব্যক্তিত্ব ও মনুষ্যত্বকে নিতান্ত নিজীব করিয়া রাখিয়াছিলেন । ধৰ্ম্মের প্রামাণ্যবিচারে স্বাভিমতের এবং রাষ্ট্রীয়-শাসন-ব্যাপারে লোকমতের কোনই অধিকার ও মর্য্যাদা ছিল না। রোমক সত্তেঘর প্রধান পুরোহিত ব৷ পোপ একদিক দিয়া লোকের ধৰ্ম্মজীবনে আপনাকে ঈশ্বরের সাক্ষাৎ প্রতিনিধি বলিয়া প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন । অন্যদিকে খৃষ্টীয়ান রাজন্যবর্গও জনগণের সংসারিক কৰ্ম্মজীবনে ঐশ্বরিক মর্যাদার দাবী করিয়া তাহাদিগকে নিজেদের পদানত করিয়া রাখিয়ছিলেন । যোড়শ খৃষ্টীয় শতাব্দীতে রোমান ক্যাথলিক পৌরহিত্যের অতিপ্রাকৃত প্রভুত্বের প্রতিবাদ চরিত-চিত্র २२8 করিয়া মার্টিন লুথার খৃষ্টীয় জগতে ধৰ্ম্মের গ্রামাণ্যবিচারে জনগণের স্বাভিমতের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করেন। তখন হইতেই খৃষ্টীয় সমাজে স্বাধীন চিন্তার ব! Free Thoughteg GrāTH হইতে আরম্ভ করে। মার্টিন লুথার রোমক সঙ্ঘের অধিপতি পোপের অতিপ্রাকৃত প্রভুত্বের দাবীই অগ্রাহ করেন ; কিন্তু খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মশাস্ত্র বাইবেলের অতিপ্রাকৃত প্রামাণ্য অস্বীকার করেন নাই। বাইবুেলের প্রামাণ্য স্বীকার করিয়া তিনি প্রত্যেক খৃষ্টীয়ান সাধক ও যজমানকে, ভগবৎ প্রেরণাধীন হইয়া, আপনাদের ধৰ্ম্মগ্রন্থের যথাযথ মৰ্ম্মনিৰ্দ্ধারণের অধিকার প্রদান করেন। রোমক খৃষ্টীয়মণ্ডলী মধ্যে অতিপ্রাকৃত শাস্ত্র এবং সেই শাস্ত্রের মৰ্ম্মনিৰ্দ্ধারণের জন্য অতিপ্রাকৃত শক্তিসম্পন্ন গুরুরই কেবল প্রতিষ্ঠা ছিল, কিন্তু সাধারণ খৃষ্টীয় সাধক ও সাধনার্থী জনমণ্ডলীর স্বাভিমতের কোনোই স্থান ছিল না । মার্টিন লুথার যে সংস্কৃত খৃষ্টধর্মের প্রচার করেন, তাহাতে শাস্ত্র ও স্বাভিমতেরই প্রতিষ্ঠা হয়, কিন্তু সদগুরুর কোনো স্থান হয় নাই। ধৰ্ম্মশস্ত্র মাত্রেই প্রাচীন কালের ধৰ্ম্মজীবন ও অধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার বিবরণ লিপিবদ্ধ হষ্টয় আছে। সুতরাং এই সকল শাস্ত্রের প্রকৃত মৰ্ম্ম উদঘাটন করিতে হইলে দীর্ঘকালব্যাপী তপস্তার বলে তাহার অনুরূপ আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা অর্জন করা আবশ্যক হয়। সৰ্ব্বপ্রকারের গভীর আধ্যাত্মিক-অভিজ্ঞতাবিহীন প্রাকৃত জনের পক্ষে কেবল ব্যাকরণের বুৎপত্তির কিম্ব লৌকিক ন্যায়ের যুক্তির বলে অলৌকিক আধ্যাত্মিক সম্পদসম্পন্ন ধৰ্ম্মপ্রবর্তকগণের উপদেশের প্রকৃত মৰ্ম্ম উদঘাটন