তরুণ-রবি (পূৰ্ব্বপ্রকাশিতের পর) দার্শনিক শিশুর দুইটী গান ঘুমপাড়ানে। (১) সাতভাই চম্পার’ গান জগদ্বিখ্যাত। সকল দেশের কাব্য কিংবা পুরাণেই (mythology ) ইহার বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে, (২) বিষ্টিপড়ে টাপুর টুপুর, নদী এল বাণ, এবং শিবঠাকুরের বিয়ে’ ও ‘তিন কন্তের কথার তত্ত্ব এখনও অন্যদেশের স্ত্রীমহলে প্রচারিত হয় নাই। “ত্রিনাভিচক্রমজরমনর্বং যত্রেসা বিশ্বভুবনাধিতস্থঃ' (ঋগ্বেদ–১ম মণ্ডল ১৬৪ স্বত্ত ) কোন কালের মহাপ্রলয়ের পর এই বিশ্বভুবনের ত্রিলোকস্বরূপ নাভিচক্রের সহিত শিবঠাকুর সংযুক্ত হইয়াছিলেন তাহ নির্ণয় করা দুঃসাধ্য। কিন্তু সেই মৌলিক জন্মবৃত্তাস্তের সহিত শিশুর নিগূঢ় স্মৃতির সম্বন্ধ আছে বলিয়াই সে তাহ শুনিয়া মন্ত্ৰমুগ্ধবৎ ঘুমাইয় পড়ে। “কবে বিষ্টি পড়েছিল বাণ এল সে কোথা ? শিবঠাকুরের বিয়ে হল কবেকার সে কথা ; তিন কন্তে বিয়ে করে কি হ’ল তার শেষে ? না জানি কোন নদীর ধারে না জানি কোন দেশে ! কোন ছেলেরে ঘুমপাড়াতে কে গাহিল গান বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদী এল বাণ !” এই অতুল গৌরবময় আধ্যাত্মিক জন্মকাহিনী কবি পরে প্রকৃতি ও পুরুষতত্ত্বে বুঝাইবেন। এখন কেবল শিশু তাহার কবিতা শুনিয়া বিস্মিত হউক । বহুপূৰ্ব্বে বৈদিক ঋষিগণ আদিত্যের সপ্তপুত্রকে দেখিয়াছিলেন, স্থতপৃষ্ঠে অস্তত্ৰাপশুং বিশ পতিং সপ্ত পুত্ৰং ( ১ম মণ্ডল—১৬৪ স্বক্ত) কৰি পূৰ্ব্বেই বলিয়া গিয়াছেন যে তাহার মাতার ( প্রকৃতির) মনের মধ্যেই ছিল। ‘মাত পিতর মৃত বভাজ ধীত্যগ্রে মনসা সং হি জন্মে’ (১ মণ্ডল—১৬৪ স্বত্ত, ঋগ্বেদ ) এই যে আদিত্যের রশ্মিকণাস্বরূপ কুমারগণ তাহাদের সঙ্কল্প কি ? ‘জেনে ম৷ এ সুখে দুঃখে আকুল সংসারে, মেটে না সকল তুচ্ছ আশ, তা বলিয়া অভিমানে অনন্ত র্তাহারে কোরো না কো’রো না অবিশ্বাস । আবার, . e ‘ভূষিত কাতর প্রাণী মাগিতেছে জল উল্কাধার করিছে বর্ষণ, ' হামল আশার ক্ষেত্রে করিয়া নিফল স্বার্থ দিয়ে করিছে কর্ষণ ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।