ՋéՋ স্বর্গেই মুখে আছে । তার কথা, তোমার মুখে আমার ভাল লাগে না। তুমি স্বর্গের কি খবর রাখ ?” পিসিমা ত চটিয়া আকুল— একেবারে ঘরে গিয়া বাক্স গোছাইতে বসিলেন । আমি জানি এতটা রূঢ় কথা আমার ভাল হয় নাই। কিন্তু পিসিমা যখন চোখদুটো আকাশের দিকে করিয়া মুখটা অন্ধকার করিয়া স্বৰ্গ সম্বন্ধে বক্তৃতা করিতেছিলেন, তখন আমি কোন মতেই ধৈর্য্য রক্ষা করিতে পারিলাম না। যেন স্বর্গটা তার ইজার মহল— যেন তিনি সেখানে - কটা বাড়ী ভাড়া করিয়া রাখিয়াছেন এবং এই শীতে বেড়াইতে যাইপেন বলিয়া টিকিটও খরিদ করিয়াছেন । আজ বাড়ীটা একেবারে নিস্তব্ধ । তুমি যে নাই আমি সে কথা হুলিয়া গিয়াছি, তোমার আসার আশায় বসিয়া আছি, যেন এখনি তোমার পায়ের শব্দ শুনিব । তুমি যখন আসিতে দুমুদাম করিয়া দরজাগুলো খুলিয়া, একসঙ্গে দু’তিন সিড়ি লাফাইয়া একেবারে ঝড়ের মত আমার ঘরে ঢুকিতে। আমি বড় রাগ করিতাম— তুমি হাসিয়া বলিতে—“রাগ করে না, লক্ষ্মীটি! আমি সামলাইতে পারি না— আমি চিরকালই ঝড়ের মত দুরন্ত ।” আর আজ ! আজি তুমি পাথরের মত স্থির ! হা ঈশ্বর। এমন করিয়া আর কত দিন বাচিব ! প্রিয়তম, আজ আর লিখিতে পারিতেছি না, আমার সর্ব কঁাপিতেছে। তোমারই হেলেন । < rl s ১২শ প্ধ, শ্রাবণ, ১৩১৯ (9) , প্রিয়তম, আজ তোমার সেই ছোট ডায়েরীখানি পড়িতেছিলাম। এই ক্ষুদ্র লাল বইখানি লইয়। তোমার সঙ্গে কত কাড়াকড়ি করিয়াছি, মনে আছে ? তোমার মৃত্যুর— না না, তুমি চলে যাওয়ার পর এ পর্য্যন্ত এক দিনও আমি চোখের জল ফেলি নাই, আঞ্জ তোমার ডায়েরী পড়িতে পড়িতে প্রাণ ভরিয়া কাদিয়াছি। তোমার অসুখের আগের দিন পর্য্যন্ত তোমার লেখা আছে। “আজ বৈকালে টেনিস খেলিলাম । * - সন্ধ্যায় হেলেনকে লইয়া থিয়েটারে গিয়াছিলাম, খুব ভাল লাগিল।” এ কথায় কঁাদিবার কি আছে ? “মঙ্গলবার ২৬শে--- অর্জ হেলেনের শরীর ভাল নাই, আমিও কোথাও যাই নাই, খেলা বন্ধ। দিনটা বড় খারাপ ।” “বুধবার ২৭শে—আজ হেলেন ভাল আছে। আজ দিনটা খুব আনন্দে কাটিয়াছে। সমস্ত দিন বৃষ্টি আমি ছেলেগুলের সঙ্গে লুকোচুরি খেলিলাম।” 發 * * 灣 擊 ত্রিশবৎসর বয়সেও তোমার ছেলেমানুষী যায় নাই—তুমি বালকের মতই সরল ছিলে। আমার একটু মাথা ধরিয়া ছিল তাই খেলাধূলা বন্ধ করিয়াছিলে, আমি ভাল আছি সেই আনন্দে তুমি সহিসের ছেলেদের সঙ্গে লুকোচুরী থেলিতে গেলে । আজ সমস্ত জগৎ আমার কাছে অন্ধকার,
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।