পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

نينوN ټ আধ্যাত্মিক রসস্বরূপ, যিনি পবিত্র বাক্যকে বাক্য ৯ইতে উদ্ধে উত্তোলন করেন, যিনি বাক্যের অভ্যন্তরে সত্যরূপে বিরাজ করেন সেই জগুই, Oldenburg বলেন,"যিনি পবিত্র বাক্য অবগত হইয়াছেন, তিনিই একটি আশ্রয় লাভ করেন, কেননা ব্ৰহ্মই সকলের আশ্রয় ও অবলম্বন ।” পরিশেষে মিঃ সেনেটের “একটি স্পৰ্দ্ধ২াক্য এইখানে উদ্ধৃত করিব—“কোন প্রমাণিক বৌদ্ধলিপি আমাকে কেহ দেখান দেখি য’হাতে স্পষ্টরূপে উক্ত হইয়াছে যে— এই মতবাদটি এইরূপ শিক্ষা দেয় যে, কোন জীববিবর্তনক্রমে একবার মানব-রাজ্যের অন্তভুক্ত হইবার পর আবার কোন সময়ে পশুরাজ্যে নমিয়া আসিতে পারে। আমি স্পৰ্দ্ধা করিয়৷ বলিতেছি, এরূপ বাক্য কখনই কেহ দেখাইতে পারিবে না।” আমি মিঃ সেনেটকে এই সম্বন্ধে একটি প্রামাণিক বৌদ্ধ বাক্য প্রদর্শন করিব। ইহা সংস্কৃত "দিব্য-অবদানের” অন্তর্গত "সংঘরক্ষিতার” কাহিনী। তিববতীয়দিগের “Dul-va” গ্রন্থের মধ্যেও এই কাহিনীটি দেখিতে পাওয়া যায়। সুতরাং ইহা অতি প্রাচীন বৌদ্ধ সাহিত্যের অন্তর্ভূত। বুর্ণফ এইরূপ অম্বুবাদ করিয়াছেন—“মাননীয় সংঘরক্ষিতা ভগবান বুদ্ধকে সম্বোধন করিয়া এই রূপ বলিলেন—“প্রভো, আমি এই জগতে এমন সকল জীব দেখিয়াছি যাহাদের আকৃতি প্রাচীরের ন্যায়, স্তম্ভের ন্যায়, বৃক্ষের স্থায়, পুষ্পের ন্যায়, ফণের ন্যায়, রজ্জ্বর ন্যায়, সম্মার্জনীর ন্যায়, ঘটের ন্যায়, উদুখলের ন্যায়, কটাহের ন্যায় ; আমি এমন জীবত্ত বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, শ্রাবণ, ১১ ১৯ দেখিয়াছি যাহার দেহ মধ্যস্থলে বিভক্ত হওয়ায়, যাহার কেবল মাংসপেশীর ভরে, বিচরণ করে। প্রভো, কিরূপ কৰ্ম্মফলে জীব এইরূপ রূপান্তর প্রাপ্ত হয় ?” ভগবান উত্তর করিলেন—“সংঘ-রক্ষিতা, তুমি প্রাচীরাকৃতি যে সকল জীবকে দেখিয়াছ, তাহারা সম্বুদ্ধ কাগুপের শ্রোতৃবর্গ। উহার নিষ্ঠীবনের দ্বারা সংঘারামের প্রাচীরকে কলুষিত করিয়াছিল ! এই কৰ্ম্মফলে উহার প্রাচীরের আকার প্রাপ্ত হইয়াছে। এইরূপ কারণেই, অন্য শ্রোতাদিগের মধ্যে কেহ বা বৃক্ষকারে, কেহ বা উদুখলের আকারে, কেহ বা কটাহু আকারে পরিণত হইয়াছে।" ইহা অপেক্ষা সুস্পষ্ট উক্তি আর কি হইতে পারে ? এইখানে আমি উপসংহার করিব। বড় বড় প্রাচ্যতত্ত্ববিদ্যুদিগের গ্রন্থ হইতে অনেক বাক্য উদ্ধৃত করিয়া, আমি যে বৌদ্ধধর্মের ব্যাখ্যা করিয়াছি, উহা প্রধানত ব্যবহারিক ধৰ্ম্মনীতির সংহিতামাত্র । সকল জনসমাজের মধ্যে, বিশেষতঃ নিম্নশ্ৰেণীদিগের মধ্যে, সাধুত চিত্তশুদ্ধি, মাধুর্য্য মৈত্রী প্রভৃতির জ্ঞান উন্মেষ করাই ইহার উদ্দেশ্য। এই জন্যই বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রতিষ্ঠাতা বুদ্ধ শাক্যমুনি, "ধৰ্ম্মমিত্র” ও “মানব-মিত্র” বলিয়৷ অভিহিত হইয়া থাকেন। মুক্তির জষ্ঠ তিনি সকলকেই আহবান করিতেছেন। তিনি বলেন, “আমার এই ধৰ্ম্ম সৰ্ব্বজনের মুক্তির গুন্ত।” অনেক পণ্ডিত এই বলিয়৷ বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রতি দোষারোপ করেন যে, বৌদ্ধধৰ্ম্ম জ্ঞানাঙ্কুশীলনের উচ্ছেদ করে, সভা তার উন্নতি ও বিকাশের পথ রুদ্ধ করে,