পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳՆ রজি এবং অনেনা; নামক চারি পুত্র হয়। মহুষ প্রবল পরাক্রমশালী রাজচক্রবত্তী । ইন্দ্ৰ হাদি অমানুষিক ব্যাপার মর্ত্যধাম পরিত্যাগ করিবার পর ঘটায় নহুষের মর-লীলা অসম্ভবপর নহে । অবশ্য নহুষের ভ্রাতা রজির চরিত্র পুরাণে যেরূপ অঙ্কিত তাহা অসম্ভব । কিন্তু মহাভারতে সেই অলৌকিকতা না থাকায় মহাভারতের ইতিবৃত্ত সে দোষে দূষিত নহে। নহুষের ঘটুপুত্ৰ—যতি, যযাতি, সংযাতি, আযা*ি, অযতি ও ধ্রুব। যতি ক্ষণিক ভোগ ছাড়িয়৷ চিয়ানন্দকর যোগে নিমগ্ন হন। সুতরাং যযাতি সিংহাসন পান। তিনি শাসন গুণে প্রজাপুঞ্জকে, যাগষজ্ঞাদিদ্বারা দেবগণকে, অধ্যয়নাদিদ্বারা ঋষিগণকে সস্তুষ্ট করেন । সমাগরা ধরণি র্তাহার অধিকারভুক্ত হয়। তাহার দুই পত্নী—গুরুকন্যা দেবযানি ও অসুররাজ বৃষপৰ্ব্বার কন্যা শৰ্ম্মিষ্ঠা। দেবযানির গর্ভে যদু ও তুৰ্ব্বমু নামে দুই ও শৰ্ম্মিষ্ঠার গর্ভে দ্রুছা, অণু এবং পুরু নামে তাহার তিন পুত্র হয়। শুক্রাচার্য্যের সহিত চুক্তি ভঙ্গ করিয়া শৰ্ম্মিষ্ঠাকে বিবাহ করায় কবি র্তাহাকে অতিসম্পী ত করেন যে অচিরে জরাগ্রস্ত হও। ঋষির চরণে পতিত হইলে তিনি রাজাকে ঐ জরা যে কোন পুত্রে সংক্রাতি করিবার শক্তি দেন। তদনুসারে যযাতি ক্রমে ক্রমে যাই, তুৰ্ব্বমু দ্রুস্থ্য ও অমুকে স্বীয় জর বিনিময়ে তাহাদের যৌবন দিবার জন্য অকুরোধ করেন। কিন্তু অবাধ্য পুত্ৰগণ কেহই পিতৃবাক্য রক্ষা করিতে চাহিলেন না। কনিষ্ঠ পুরু নিজের যৌবন বিনিমরে পিতার জর লইয়। আপনাকে ধন্য জ্ঞান করিলেন। পিতা সহস্র বর্ষ পুত্রের যৌবন লইয়া ভোগ করতঃ যখন দেখিলেন যে ভোগবাসন কমল না তখন হঠাৎ র্তাহার নিৰ্ব্বেদ হইল। নিৰ্ব্বেদের সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান জন্মিল। তখন অবাধ্য পুত্ৰচতুষ্টয়কে নিৰ্ব্বাসিত করিয়া কনিষ্ঠ পুরুকে সিংহাসনে বসাইলেন ও স্বয়ং বাণপ্রস্থাশ্রম অবলম্বন বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, শ্রাবণ, ১ ১৯ করিলেন। যযাতির সহস্রবর্যভোগ ও জর সংক্রমণ ইত্যাদি সস্তধ পর না হইলেও উহার মূলে সত্য থাকা সম্ভব । লৌকিকালৌকিকাংশের সত্যত বিচার। উক্ত অংশের সত্যত নিবাকরণ কর। অত্যন্ত দুরূহ। পুরূরব প্রভৃতি এত প্রাচীন যে সেই সময়ের োন লেখ্য নাই। নিখিল পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থ ঋগ্বেদেও পুন্ধরবার উপাখ্যান আছে । ঐ উপাখান গাথাতে চিররক্ষিত হইয়। পরে মহাভারত ও পুরাণে গ্রথিত হয়। ক্রমে উহ। সংস্কৃত নাটকে ও কাব্যে প্রচলিত হইল। শৰ্ম্মিষ্ঠার উপাখ্যান লইয়। বঙ্গ কবি ও কৃতিত্ব দেখাইয়াছেন । ঋগ্বেদ অভ্রান্ত বলিয়৷ যদি ও বিশ্বাস না করেন, উহার উপাখ্যানগুলি যে সত্যমূলক নহে তাহার কোন প্রমাণ নাই। আবার যদি দেখি সেই প্রবাদ কেবল মুখে না থাকিয়া বহুকাল যাবৎ লিখিত গ্রন্থে পুরুষপরম্পরাক্রমে চলিয়া আসিয়াছে, তখন উহা বিশ্বাস করিবার সঙ্গ ৩ কারণ আছে বলিতে হইবে। এই অংশ যে গাথামূলক তাহ মহাভারত ও পুরাণাদিতে স্পষ্ট বুঝা যায়। যযাতির পুত্র সম্বন্ধে নিম্নলিখিত অনুবংশশ্লোক সকলেই ধরিয়াছেন যদুঞ্চ তুৰ্ব্বমুঞ্চৈব দেবযানী ব্যঙ্গায়ত । দ্রুহু্যঞ্চানুঞ্চ পুরুঞ্চ শৰ্ম্মিষ্ঠ বীর্যপাৰ্ব্বণী ॥ যযাতির নিৰ্ব্বেদসম্বন্ধে ন জাতু কামঃ কামানামুপভোগেন শাম্যfত। ইত্যাদি গাথাও উদ্ধৃত হইয়াছে। ঐ গাথাগুলি অবিশ্বাস করিবার কোন কারণ নাই। সুতরাং তৎপ্রতিপাদ্য বিষয়ও ভিত্তিহীন নহে এই পৰ্য্যন্ত বলা যাইতে পারে । ¢* শুদ্ধলৌকিক অংশ পুরু হইতে প্রতীপ পর্য্যন্ত নৃপতিগণকে শুদ্ধলৌকিক,১ংশভুক্ত করা যাইতে পারে। যদু, তুৰ্ব্বস্তু, দ্রাহ, ও অন্থর বংশ পুরাণে বিশদরূপে দেওয়া আছে। মহাভারতে তাহ প্রাসঙ্গিক নহে বলিয়া দেওয়া হয় নাই ।