পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] লি, কেশবচন্দ্র সেই, সকল বিচ্ছিন্ন শক্তিকেন্দ্রকে একত্রিত করিয়া, দলবদ্ধ হইয়া, এই সংস্কারকার্য্যে প্রবৃত্ত হন। মহর্ষি প্রাচীন পাঞ্জ ও গুরুর প্রভুত্বই কেবল অস্বীকার করেন, কিন্তু প্রত্যেক ধৰ্ম্মার্থীকে আপনার স্বাভিমত কিম্ব সংজ্ঞানের (Couscience) উপরে একান্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য কোন ও চেষ্টা করেন নাই। কলিকাতা ব্রাহ্মসমাজ ৭% গুর্ক বর্জন করিয়া, উপাসকগণের ধৰ্ম্মজীবন ও কৰ্ম্ম-জীবন পরিচালনায় শাস্ত্ৰ-গুরুর প্রাচীন অধিকার মহর্ষির উপরেই অপর্ণ করেন। প্রত্যেক সাধনার্থীকে আপন আপন স্বাভিমত ও সংজ্ঞানের উপরে প্রতিষ্ঠিত করিয়াই কেশবচন্দ্র প্রথম জীবনে ব্রাহ্মসমাজে এক প্রকারের সাধারণতন্ত্র গড়িয়া তুলিতে প্রবৃত্ত হ’ন । ধৰ্ম্ম সাধনে ব্যক্তিবিশেষের অসঙ্গত প্রভুত্বের প্রতিবাদ করিয়াই কেশবভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠা হয়। আর ধৰ্ম্ম ও সমাজ-সংস্কারে কেশবচন্দ্র b{{<! যে কাজ করেন, আমাদের আধুনিক রাষ্ট্ৰীয় । জীবনে সুরেন্দ্রনাথও ঠিক সেই কাজটাই করিয়াছেন। " থরেন্দ্রনাথের পুঞ্চে আধুনিক রাষ্ট্রীয় জীবন স্বরেন্দ্রনাথের কৰ্ম্মজীবনের সূচনার বহুদিন পূৰ্ব্ব হইতেই এ দেশের ইংরেজিশিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে অল্পে অল্পে যে রাষ্ট্ৰীয় আদশ ও আকাঙ্ক্ষা জাগিয়া উঠিতেছিল, তাহাকে মূৰ্ত্তিমস্ত করিয়াই সুরেন্দ্রনাথ আমাদের রাষ্ট্রীয় কৰ্ম্মক্ষেত্রে আসিয়া দণ্ডায়মান হন। ব্রিটিশ শাসনের প্রথমাবধিই বাংলার এবং বিশেষতঃ কণিকাতার সমাজের সন্ত্রান্ত লোকের বেসরকারী ইংরেজ প্রবাসীদিগের সঙ্গে চরিত-চিত্র ৩২৯ মিলিত হইয়া, সময়ে সময়ে, বিশেয বিশেষ রাষ্ট্রীয় বিধি-ব্যবস্থা সম্বন্ধে আপনাপন মতামত ব্যক্ত করিয়া তাহার পরিবর্তন বা সংশোধনের চেষ্টা করিতেন। সময় সময় রাজপুরুষগণ নিজেরাই উপযাচক হইয়৷ বিশেয বিশেষ শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে ইহাদিগের অভিপ্রায় জানিতে চাহিতেন। বোধ হয় সুরেন্দ্রনাথের জন্মের পূৰ্ব্বেই কলিকাতার ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা হয়। প্রসন্নকুমার ঠাকুর, জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, রমানাথ ঠাকুর, দিগম্বর মিত্র, কালীপ্রসন্ন সিংহ, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, কৃষ্ণদাস পাল, সেকালের বাংলার মনিষীবর্গ সকলেই, ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান এসোসিয়েশন ভুক্ত ছিলেন। সেকালে ইহারাই আপনাদের বিচার-বুদ্ধির অনুযায়ী রাষ্ট্ৰীয় বিধি-ব্যবস্থাদির আলোচনা করিতেন এবং সময়ে সময়ে দেশের অভাবঅভিযোগের কথা রাজপুরুষদিগের গোচরে প্রেরণ করিতেন। রাজপুরুষেরাও ইহঁদিগকেই জনমণ্ডলীর স্বাভাবিক অধিনায়ক বা Natural Leaders of Hi ord of HI #xiদিগের মতামতের প্রতি যথাযোগ্য মৰ্য্যাদ। প্রদর্শন করিতেন । ব্রিটিশ-ইণ্ডিয়ান সভা সৰ্ব্বদা জমীদারদেরই সভা ছিল। বাংলার, বিশেষতঃ কলিকাতার ও তন্নিকটবৰ্ত্তী স্থানের জমীদারগণের স্বত্বস্বার্থরক্ষার জন্যই এই সভার জন্ম হয়। ইহার সভ্য এবং অধিনায়ক সকলেই জমীদার-শ্রেণীভূক্ত ছিলেন। ক্লষ্ণদাস পাল জৰ্মীদার ছিলেন না বটে, কিন্তু জমীদারি স্বত্বস্বার্থের পরিপোষক এবং জমীদারুসমাজের মুখপাত্ররূপেই তিনি দেশের তদানীন্তন রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ