৩৬8 কাব্যে রূপেদ্মিাদ সচরাচর আকস্মিক ব্যাপাররূপে বর্ণিত হইয়া থাকে,—মোহের কার্য্য, চিত্তের বিহ্যগত, দৈবঘটিত, বা মানুষের আত্মশাসনশক্তির অতীত কুনা-নগেন্দ্রের অনুরাগ আকস্মিক ভাবে মূলস্থাপন করিয়া থাকিলেও, তাহার পুষ্টি কতক পরিমাণে ক্রমিক, কিন্তু ক্রমিক হইয়াও তাঁহা উদভ্ৰান্ত ভাব ধারণ করিয়াছে এবং আকস্মিক রূপেীন্মাদের সহিত তাহার কোনরূপ প্রভেদ নাই। নগেন্দ্রকে কবি উন্মাদ করিয়াই চিত্রিত করিয়াছেন, তাহার রূপোন্মাদের সহিত তাহার নিরস্তর সংগ্ৰামজনিত চিত্ত-বিকলত। তাহার চরিত্রে মদ্যপানাদি নানারূপ উচ্চ জ্বলতা আনিয়া ফেলিয়াছে। এ উচ্ছ স্থলত তাগার আত্মদমনচেষ্টার পরাভব জন্য আপনার প্রতি বিরক্তির ফল, আত্মানদের হইতে উদ্ভূত, র্তাহীর চিত্তের মহত্ত্বেরই পরিচায়ক, প্রবৃত্তির দোষবিজ্ঞাপক নহে। কাব্যে রূপেন্মিাদ মিলন বা পরিণয়ে পরিণত হইয়। পাত্রদ্বয়ের চরিত্ৰ-মহত্ত্বে তাহীদের প্রতি আকৃষ্টহৃদয় পাঠকগণকে আনন্দ প্রদান করে ; অথবা কাব্য বিয়োগাস্ত হইলে, নায়ক-নায়িকার ভাগ্যহীনতায় ক্রনন করিয়া তাহাতেও পাঠক একরূপ আনন্দীমুভব করেন। বঙ্কিমচন্দ্র এখানে বিবাহিত পুরুষের হৃদয়ে স্ত্রী বর্তমানে, অন্যের প্রতি আসক্তি স্বষ্টি করিয়া এক সমস্ত উপস্থিত করিয়াছেন । কলুষিত চরিত্রের চিত্র অঙ্কিত করিয়৷ তৎপ্রতি পাঠকের ঘৃণার উদ্রেক করিয়া দেওয়া এ স্থলে তাছার উদ্দেশ্য নছে, প্রত্যুত এ চিত্র-সংস্কৃষ্ট সকলকেই তিনি পাঠকের প্রীতির, শ্রদ্ধাভক্তির পাত্র করিয়া আঁকিয়াছেন, সেই প্রীতি ও শ্রদ্ধাভক্তি অক্ষুণ্ণ বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, আশ্বিন, ১৩১৯ ब्रांथिब्राहे उँiश८क .७ नमगjांद्र नभशान করিতে হইয়াছে। নগেন্দ্রের রূপেন্যাং তাহার হস্তে মিলনে পরিণতি লাভ করিয়াছে কিন্তু সে মিলন বিয়োগের পূর্বায়োজন, এবং মিলন ও বিয়োগ উভয়ই কবির মহং এবং বিবিধ উদ্দেশু সাধনের উপায়ুরূপে ব্যবহৃন্ত হইয়াছে। সুবর্ণ দগ্ধ হইলে তাহার স্বরূপ অধিকতর প্রকাশ পায়, নগেন্দ্র-সুর্যমুখীর দাম্পত্য প্রণয় পূর্ণতর করিয়া দেখাইবার জন্যই কি কবি কুন্দনন্দিনীকে নগেন্দ্রনাথের সহিত মিলিত করিয়াছেন ? ফলে তাহা হুই৷ থাকিলেও, তাহাই কবির মূল উদেশু বলিয়া বুঝিলে, নগেন্দ্র স্বৰ্য্যমুখী সম্বন্ধে বিষবৃক্ষের কোন অর্থ থাকে না। কবির অভিপ্রায় ভিন্ন এবং মহন্তর এবং আধুনিক সময়ে মজ্জিত উন্নত নৈতিক ধারণার উপযোগী। শকুন্তলার রূপদৰ্শন দুষ্মস্তের চিত্তবিকীরস্থলে, দুষ্মন্তের চরিত্রবি শুদ্ধতারক্ষার জন্য শকুন্তলার কবি গান্ধৰ্ব্ব বিবাহই যথেষ্ট মনে করিয়াছেন। বিষবৃক্ষের কবি ও নগেন্দ্র-কুন্দমন্দিনীর সম্বন্ধের বিশুদ্ধতারক্ষার্থ বিধবা-বিবাহ-বিধির শরণ লইয়াছেন। কিন্তু তিনি, তাহার অভিমত উচ্চ নীতি তাহাতেই রক্ষিত হইল, মনে করেন নাই । তিনি লৌকিক ব্যবহারের বিশুদ্ধত রক্ষা করিতে প্রয়াস পাইয়াছেন মাত্র, সামাজিক শিক্ষার জন্য যে কাব্য লিথিত,তাই সামাজিক হিসাবে নায়ক-নায়িকার" অপবিত্র ংযোগ দ্বারা কলুষিত হইতে দেন নাই, এই মাত্র। তিনি যে নীতি শিক্ষা দিবার জন্য এ সংঘটন করিয়াছেন, তাহ লৌকিক নীতির অনেক উচ্চে সংস্থাপিত। তিনি নগেন্দ্রকে মহৎ এবং কুন্দকে পবিত্র কবিয়া
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩৬৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।