3b" ফিরিবার সময় একদল ড়েগুন সৈনিক অশ্বারোহণে যাইতেছিল। সূর্যকিরণে তাহদের পরিচ্ছদ ঝকৃঝকৃ করিতেছিল । তাহা দেখিয়া ভিক্টর বড়ই মুগ্ধ হইল। জিজ্ঞাসা করিল, “ইহার কাহারা ?” সঙ্গিনী ধাত্রী বলিল—“ইহার ড়েগুন।” বিদ্যালয় হইতে বাড়ী আসিয়া ভিক্টর বড়ই চেঁচাচেচি ও ছুটাছুটি করিত। সে ह्निना। हैताश्च হইতে ফিরিয়া আসিবার পর এক ঘণ্ট। অতীত হইয় গেল, অথচ ভিক্টরের কোন সাড়াশব্দ নাই। কিঞ্চিৎ উদ্বিগ্ন হইয়। মাতা খুজিতে খুজিতে দেখিতে পাইলেন, একটি প্রাচীরে অন্তরালে দাড়াইয় নিশ্চিন্তভাবে ভিক্টর নিজের পায়জামা ছিড়িয়া কুটিকুটি করিতেছে। মাত ক্রুদ্ধস্বরে বলিলেন—ওখানে ও কি হইতেছে ? কিছুমাত্র তীত বা অপ্রতিভ না হইয়া, অম্লানবদনে মাতার মুখপানে চাহিয়৷ ভিক্টর বলিল—“আমি ড়েগুনদের মতন পায়জামা পরিতে চাই।” ১৮০৯ খৃঃ অব্দের মধ্যভাগে মাদাম হুগোর গৃহে এক জন নূতন অতিথির আগমন হইল । এই অতিথি, জেনারাল লাহোরী। নেপালিয়নের কোপে পড়িয়৷ ইনি কিছু দিন হইতে ভিন্ন ভিন্ন বন্ধুর গুহে লুক্কায়িত থাকিয়া জীবন কাটাইতে ছিলেন । পুলিশ তাহার পশ্চাতে লাগিয়াই ছিল বলিয়া একই স্থানে থাকা তাহার পক্ষে নিরাপদ ছিল না । তাই গুপ্তভাবে থাকিলেও তাকে পুনঃপুনঃ আবাসস্থান পরিবর্তন করিতে হইতেছিল। এক্ষণে তিনি আসিয়া মাদাম হুগোর গৃহে গুপ্তভাবে বঙ্গদর্শন ' [ ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ অবস্থান করিতে লাগিলেন। পরিণতবয়স্ক হইলেও তিনি শিশুদিগের সহিত সরল, উদার ও অমায়িক ভাবে মিশিতে পারিতেন। ইহাদের খেলাধুলায় ইনি ' অকপট ভাবে যোগ দিতেন। সৰ্ব্বকনিষ্ঠ ভিক্টরকে ইনি সময়ে সময়ে ধরিয়৷ উৰ্দ্ধে নিক্ষেপ করিতেন এবং পতন সময়ে ধরিয়া লইতেন । এইরূপ খেলায় শিশুর মাতা বড়ষ্ট ভীত হইতেন, কিন্তু ভিক্টরের আনন্দের সীমা থাঞ্চিত না। এই গৃহে ইহার অবস্থানে শিশুদিগের বিদ্যশিক্ষার অনেক সাহায্য হইয়াছিল। ইনি তাহদের পঠিত বিষয় তত্ত্বাবধান করিতেন, অনুশীলনের খাত। দেখিয়া দিতেন, তাহাদের রচনা ভাল হইলে প্রশংসা করিতেন, ভুল থাকিলে তাহা সংশোধন করিয়া দিতেন, এবং অবসরকালে বালকদিগের পক্ষে সুখবোধ্য ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক গল্পসকল শুনাইয় তাহাদের চিত্ত বিনোদন করিতেন। তিন ভ্রাতার মধ্যে ভিক্টরের প্রতি তিনি যেন কিছু অধিক আকৃষ্ট হইয়াছিলেন । আট বৎসর বয়সেই ভিক্টরের ল্যাটিন শিক্ষা আরব্ধ হইয়াছিল। গুহে জেনেরাল লাহোরী তাহাকে তাসিতসের ইতিহাসগ্রন্থ ব্যাখ্যা করিয়া বুঝাইয়া দিতেন। ইহাতে ভিক্টরের ল্যাটিন-শিক্ষা দ্রুত অগ্রসর হইতে লাগিল। মাদাম হুগো পুত্রদিগকে লইয়। প্যারিসে আসার পর তিন বৎসর অতীত হইয়। গিয়াছে। এই দীর্ঘ কালের মধ্যে লিওপোল্ড হুগোর স্ত্রী ও পুত্রদিগকে দেখিবার সুযোগ একবারও হয় নাই। নববিজিত ও অশাস্তি
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।