পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুর্গোৎসবের স্মৃতি আমাদের বাড়ীতে প্রতিবৎসর দুর্গাপূজা হইত। ধনীর ঘরের পূজা নয়, মধ্যবিত্ত গৃহস্থের বাড়ীর পূজা। বড় বড় সহরের সাহেব খাওয়ান, বাই নচান, বাজি-পুড়ান, বিলাসবৈভব-ছড়ান পূজা নয় ; গ্রামের সাদা মাটা পূজা। সে পূজায় শৈশবে ও বালো, এবং তার পরেও, প্রথমযেীবনে প্রতিবৎসরই যোগ দিয়া আসিয়াছি। ক্রমে সে যোগ কাটিয়া গেল। আজ আটত্ৰিশ বৎসর দুর্গার সঙ্গে ও দুর্গাপূজার সঙ্গে সকল প্রকারের সাক্ষাৎ সম্পর্ক ঘুচিয়াছে। এই সুদীর্ঘ অনভ্যাসেও দুর্গোৎসবের আনন্দ-স্মৃতিটুকুর এক কণাও এ প্রাণ হইতে সুছিয়Lযায় নাই। আজিও শরৎকালের প্রখর স্বৰ্য্যকিরণে এমন একটা স্নিগ্ধতা জড়াইয় থাকে, ষড়*ঠুর আর কোনও ঋতুতে সূৰ্য্যালোকের ভিতরে কুখনও যার সন্ধান এ পর্যন্ত পাই "ই। পূজার শহু-কাশর এবং ঢাকঢোলের রোলে প্রাণের ভিতরে সর্বদাই কি ধেন ধটি ভাব নাচিয় উঠে, জুনিয়ার কোনও "নায় কখনও যাহা জাগিয়া উঠে নাই। ধর্গোৎসবের কীট। দিন যে বছরের আর أمريكي.سه " ، «

সকল দিনের মতন নয়, দীর্ঘজীপনসঞ্চিত যুক্তিবাদের প্রভাবেও এ ভাবটা নষ্ট করিতে পারে নাই । আমি তো আর দুর্গার কেউ নই! দুর্গাও তো আমার আজ কেউ নন! আপদে বিপদে আর তো দুৰ্গা! দুৰ্গা! বলিয়৷ কাদি না। প্রত্যুষে আর তো দুর্গানাম স্মরণ করিয়া শয্যাত্যাগ করি না। আমার গৃহে আর তো বোধনের ঘটস্থাপনা হয় না। পুরোহিত আসিয়া আর তো শান্তি-স্বস্ত্যয়নে চণ্ডীপাঠ করেন ন দৈবজ্ঞ আসিয়া তো আর বছর বছর প্রতিমা রচন করেন না। তন্ত্ৰধারক তো আর “ঘণ্টাম্বা পরশুম্বাইপি বামতোপি নিবোধতঃ” বলিয়া পূজার মন্ত্র উচ্চারণ করেন না। “ছিন্দিঃ ছিন্দিঃ পট পট স্বাহা" বলিয়া তো আর ছাগাদি পশুর উৎসর্গ হয় না। “ম!” “ম!”-মুধরিত প্রাঙ্গণে আর তো বলির বাদ্য বাজিয়া উঠে না। সন্ধ্যায়তো আর আরতির সঙ্গীত ধ্বনিত হয় না। প্রত্যুষে তো আর “জাগো মা ! কুলকুণ্ডলিনী! শতদল মাঝে শস্তু সহিতে কত আর নিদ্র। যাবে জননী!”