পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭ম সংখ্যা | আর এই জঠই, অতি শৈশলে এই নিরাকার চৈতন্য-স্বরূপ ঈশ্বর-তত্ত্ব কেহ শিক্ষা দেয় নাই বলিয়া, নিজেকে আজ পরম সোঁতাগ্যবান মনে করিতেছি । আর অকালে, অপক্কবয়সে, অধিকার লাভ করিবার পূৰ্ব্বে, আমার সন্তানসন্ততির। এই শ্রেষ্ঠ তর তত্ত্বের মৌখিক উপদেশ শুনিতেছে বলিয়া বাস্তবিকই অনেক সময় তাহাদিগকে একান্ত হতভাগ্য বলিয়াও যে ভাবি না, তাহা নয়। শৈশবে কালীদুর্গার পূজায় যোগ দিতাম বলিয়া, আপনাকে এক রক্তিও ক্ষতিগ্রস্ত মনে করি না । কালী দুর্গ প্রভৃতি সত্য বা মথ্যা, বস্তু বা কল্পনা যাই হউন না কেন, তাহাতে আমার শৈশবের ধৰ্ম্মজীবনের কোনওই হানি হয় নাই ; মুক্ত কণ্ঠে ইহা স্বীকার করি । কালীদুর্গার পূজা পরিত্যাগ করিয়াও এই সত্য কথাট৷ কখনওই স্বীকার করিতে কুষ্ঠিত বা লজ্জিত হই নাই । ফলতঃ মানবজাতির ধৰ্ম্ম-বিবৰ্ত্তনের ইতিহাসের আদিতে কোথাও আজি পৰ্য্যন্ত এই নিরাকার চৈতন্য স্বরূপ ঈশ্বর তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা খুঞ্জিয়া পাই নাই। কেহ যে কোথাও পাইয়াছেন, এমন কথাও শুনি নাই । পণ্ডিতেরা কেহ বা প্রেত-পূজায় আর কেহ বা প্রকৃতি-পূজায়, এ দু'এর কোনও একটার মধ্যে মানবীয় ধর্মের আদি বাজ আবিষ্কার করিয়াছেন। কিন্তু কেহই নিরাকার চৈতন্য-স্বরূপ ঈশ্বর-তত্ত্বে ধৰ্ম্মের ঘূর্ণ প্রতিষ্ঠিত করেন নাই। মানবসমাজের ধর্থের আদিতে যাহা পাওয়া যায় না, মানব শিশুর ধৰ্ম্মজীবনের প্রথমে একেবারে তাহাকে ফুটাইয়া তুলা কখনওই সম্ভব দুগোৎসবের স্মৃতি 8S X নহে। মানবীয় ধৰ্ম্মের উৎপত্তি-স্থানে,আমরা ইতিহাসের সাক্ষ্যে, কেবলমাত্র দুইটী বস্তু দেখিতে পাই-এক অতি প্রাকৃতের অনুভূতি, অপর একটা পবিত্রতার ভাব। এই অতিপ্রাকৃতের অনুভূতিকে ইংরাজিতে Sense of the Supernatyural q?il <g 1 afg এই *ifold efoot idea of Holiness বগা হয়। ভূত-প্রেতে বিশ্বাস, দেবদেবাতে বিশ্বাস, এ সকলই অতিপ্রাকৃতের অনুভূতি হইতে উৎপন্ন হয়। প্রত্যক্ষ অপ্রাণীতে প্রাণধৰ্ম্ম আরোপ করিয়া, অপ্রত্যক্ষ উপায়ে ইহার যে অদ্ভুতভাবে আপনাদের শক্তিসাধ্যের প্রত্যক্ষ প্রমাণ দিতে পারেন, এরূপ বিশ্বাস করাষ্ট, অতিপ্রাকৃতে বিশ্বাস করা বলা যায়। শৈশবে কালীদুর্গ প্রভৃতি দেবতায় আমাদের যে বিশ্বাস ছিল, তাহ। ঠিক এই জাতীয়। এ বিশ্বাস তর্কযুক্তির দ্বারা শোধিত বা সমর্থিত হয় নাই । আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যার দ্বারা ইহা সুসংস্কৃত হইয় উঠে নাই। কালীদুর্গ প্রভৃতিকে প্রভূতশক্তিশালী অতিনান্নুষিক ক্রিয়াক্ষম অথচ মানুষেরই মতন সমধৰ্ম্মাপন্ন বলিয়া মনে করিতাম। রোগ হইতে র্তার ভাল করিতে পারেন, কি করিয়৷ যে করেন তাহা জানিতাম না ও বুঝিতাম না, কিন্তু ইচ্ছা করিলে ভাল করিতে পারেন, ইহা বিশ্বাস করিতাম। সুতরাং পিতা মাতা প্রভূতি ভালবাসার জন র্যাহারা, তাদের অসুখে বিমুখে, করযোড়ে, কাতরকণ্ঠে, অশ্রুপূর্ণনয়নে এই সকল দেবদেবীর প্রসাদভিক্ষা করিতাম ও তাহাদের নিকটে নানা প্রকারে “মানত” করিতাম। এইরূপে এই