পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] গৃহেই চলিতে লাগিল। লারিভিয়ের নামক একজন শিক্ষক ইহাদের দুই ভ্রাতার গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হইয়া ইহাদিগকে ল্যাটিন পড়াইতে লাগিলেন। আরও এক প্রকারে ইহাদের জ্ঞানবৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ সাধিত হইতে লাগিল। মাদাম হুগো নিজে পুস্তকপাঠের একান্ত অনুরাগিণী ছিলেন। একটি সাধারণ পুস্তকালয়ে তিনি বার্ষিক চাদ ত দিতেনই, তদ্ব্যতীত রয়ল নামক একজন পুস্তকবিক্রেতার সহিত এইরূপ বন্দোবস্ত ছিল যে, ইউজিন ও ভিক্টর তাহার দোকানে গিয়া যে কোনও পুস্তক যত ইচ্ছ। লইয়া আসিবে । এই কাৰ্য্যের ভার পাইয়। ভ্রাতৃদ্বয়েরও নানাবিধ পুস্তক অধ্যয়ন করিবার সুবিধা হইয়াছিল। দোকানে গিয়া মাতার জন্য পুস্তক নিৰ্ব্বাচন উপলক্ষে কোন পুস্তক তাহদের ভাল লাগিলে তাহার দোকানে বসিয়াই সেই সব পুস্তক তিন চারি ঘণ্টা করিয়া মনোযোগসহকারে পাঠ করিত। গদ্য, পদ্য, ইতিহাস, জীবনবৃত্ত, ভ্রমণ-বৃত্তান্ত, বিজ্ঞান সকলই তাহারা একাগ্রচিত্তে পাঠ করিত। এইরূপে তাহার রূশো, ভলটেয়ার ও দিদেরোর গ্রন্থাবলী পড়িয়া শেষ করিয়াছিল। এমন কি,“Taublas” ও সেই শ্রেণীর অপয়াপর উপন্যাস পর্য্যন্ত তাহার। পাঠ করিত। সৰ্ব্বাপেক্ষা তাহাদের চিত্ত আকর্ষণ করিয়াছিল, কাপ্তেন কুকের ভ্রমণবৃত্তান্ত । এই পুস্তক সেই সময়ে সৰ্ব্বজনপ্রিয় হইয়া উঠিয়াছিল। নেপোলিয়নের সাম্রাকৃত্যাগের পর অষ্টাদশ লুই ফ্রান্সের সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত হইয়াই জেনেরাল হুগোকে তাহার সামরিক ভিক্টর হুগোর কথ। (يالي পদ হইতে অপসারিত করিলেন। কেননা বহিঃশত্রু কর্তৃক ফ্রান্স-আক্রমণে যে কেহ দৃঢ়ভাবে বাধা দিয়াছিল, তাহারা সকলেই বুৰ্ব্বণদিগের বিষনয়নে পড়িয়াছিল। জেনেরাল হুগে। প্যারিসে আসিয়াই পুত্রদ্বয়ের ভবিষ্কৃতের চিন্তায় ব্যাপৃত হইলেন। তিনি সংকল্প করিলেন যে, ইহাদিগকে “Ecole Polytechnique" to দিতে হইবে। কিন্তু তৎপূৰ্ব্বে সেখানে હરિરે হইবার উপযোগী শিক্ষলাভের জন্য প্রথমতঃ তাহাদিগকে অপর একটি বিদ্যালয়ে ভৰ্ত্তি করিয়া দিলেন । বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের নাম, করডিয়র ; তাহার সহকাৰী-শিক্ষকের নাম, ডেকোট ৷ এই বিদ্যালয়ে ও বেশকালে ইউজিনের বয়স প্রায় পনের ও ভিক্টরের তের । বাণিজ্য-ব্যবসায়ে যেমন দেখিতে পাওয়৷ যায় যে, সময়ে সময়ে কোন একটা বিশেষ দ্রব্যের মরসুম পড়িয়া যায়, সাহিত্যক্ষেত্রেও সময়ে সময়ে তাহ ঘটে । এই সময়ে ১৮১৫ সালে, প্যারিসে কবিতা-রচনার একটা মরসুম পড়িয়া গিয়াছিল। কবি অকবি, সুবোধ নিৰ্ব্বোধ, বালক যুবক প্রৌঢ়, সকলেই কি এক অজ্ঞাত কারণে কবিতা রচনা করিতে গিরতিশয় সমুৎসুক হইয়। উঠিয়াছিল। তের বৎসরের ভিক্টর যে এই স্রোতে ভাসিয়া চলিবে, ইহাতে বিস্ময়ের বিষয় কিছুই নাই ; বরং তাহার পক্ষে ইহা খুবই স্বাভাবিক, কেননা স্পেনে যাইবার পূৰ্ব্ব হইতেই, অর্থাৎ যখন তাহার বয়স সবে আট বৎসর, কবিতা-রচনার চেষ্ট। সে করিত। বলা বাহুল্য যে, সে সকল দোয