পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিমাই-চরিত্র প্রথম অধ্যায় জন্ম ও শৈশব ১৪.৭ শকাব্দের ফাল্গুনী পূর্ণিমা, বয়োবৃদ্ধির সহিত শিশুর চঞ্চলত পরিসন্ধাকলি, চন্দ্র রাহুগ্রস্ত। নবদ্বীপের লক্ষিত ইষ্টতে লাগিল। চারিমাস বয়সে যাবতীয় নরনারী হরিধ্বনি করিতে করিতে ভাগীরথীতীরে সমাগত। এমন সময়ে জগন্নাথ মিশ্রের পত্নী শচীদেবী এক অপূৰ্ব্ব কুমার প্রসব করিলেন । হরিধ্বনির মধ্যে এই বালকের জন্ম, হরিনাম-কীৰ্ত্তনে তাহার জীবন অতিবাহিত এবং গুরির বিরহ:শাকে তাহার জীবনান্ত হইয়াছিল। মাতামহ নীলাম্বর চক্রবর্তী বালকের শরীরে মহারাজলক্ষণসমূহ দেখিয়া বিস্ময়ে অভিভূত হইলেন। গৌড়ে বিপ্র রাজা হইবে এমন প্রবাদ ছিল । চক্রবর্তী ভাবিতে লাগিলেন এই বালকদ্বারাই কি সেই প্রবাদ সফল হইবে ? যথাবিধি বালকের জন্মপত্রিকা প্রস্তুত হইল। জন্ম-পত্রিকাকার বলিলেন “এই বালক সাক্ষাৎ • রিায়ণ । ইনি ধৰ্ম্মসংস্থাপন ও ধৰ্ম্মপ্রচারের দ্বার জগতের উদ্ধারসাধনের জন্য অবতীর্ণ ইয়াছেন। বিষ্ণুদ্রোঙ্গী যবন পৰ্য্যন্ত এই শিশুর চরণ ভজনা করিবে ” পুত্রের ভাগ্যফল শুনিয়া জগন্নাথ মিশ্র ও শচীদেবী আনন্দে বিহ্বল হইলেন। মৃদঙ্গ, সানাই, বংশী প্রভৃতির বাদ্যের সহিত বালকের জন্মোৎসব অনুষ্ঠিত হইল। পুরস্ত্রীগণ নবকুমারকে আশীৰ্ব্বাদ করিয়া প্রস্থান করিলেন। শিশু গুহস্থিত দ্রব্যজাত ছড়াইয়া ফেলিত এবং গৃহদ্বারে জননীর পদশব্দ শুনিবামাত্র বিছানায় যাইয়া সুশীল বালকের মত শয়ন করিয়া থাকিত। গৃহস্থিত দ্রব্যাদি কে স্থানচু্যত করিল, তাহা লইয়। তখন জনকজননীর মধ্যে গভীর গবেষণা আরস্ত হইত। শিশু যখন ক্ৰন্দন করিতে আরস্ত করিত, তখন কিছুতেই তাহাকে শান্ত করা যাইত না। অবশেষে ক্ৰন্দন নিবারণের এক অসাধারণ উপায় আবিষ্কৃত হইল। দেখা গেল বিষম ক্রদনের মধ্যেও হরিধ্বনি কর্ণে প্রবেশ করিলেই শিশু শান্তভাব ধারণ করি ত । তদবধি শিশু ক্ৰন্দন আরম্ভ করিলেই সকলে হরিধ্বনি করিতেন । ষষ্ঠমাসে যথাবিধি নামকরণ-সংস্কার অনুষ্ঠিত হইল। মিশ্র-দম্পতীর অনেক পুত্রকন্যা নষ্ট হইয়া গিয়াছিল বলিয়া পুরস্ত্রী'গণ শিশুর নিমাই নাম রাখিলেন। শিশুর জন্মের পরে দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষ প্রশমিত হইয়াছিল বলিয়া পণ্ডিতগণ তাহার নাম রাখিলেন “বিশ্বস্তর।” সম্মুখে স্থাপিত ধান্ত, শ্ৰমদৃভাগবত, খড়ি, স্বর্ণ ও রৌপ্যের মধ্যে শ্ৰীমদূভাগবত পুস্তক গ্রহণ করিয়া শিশু ভাবী জীবনের ইঙ্গিত দান করিয়াছিলেন। জানুগতি শিখিবার পর একদিন এক