পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ՀՀ নিমাইর লেখাপড়া বন্ধ হইলার সঙ্গে সঙ্গেই তাহার চাপল্য ও ঔদ্ধত্য পূৰ্ব্বের মত । অসংযত হইয়া উঠিল। সমস্ত রাত্রি গৃহের বাহিরে সঙ্গিগণের সহিত ক্রীড়ায় অতিবাহিত হইতে লাগিল। কখনও নিমাই কম্বলে গাত্র আবৃত করতঃ বৃষ সাজিয়। প্রতিবেশীর কলাবন ভাঙ্গিয়া পলায়ন করিতেন, কখনও বা তাহাদিগের গৃহদ্বার রাত্রি কালে বাহির হইতে বন্ধ করিয়) রাদিতেন । এই সমস্ত উৎপাতের কথা জগন্নাথের কর্ণগত হই ত— কিন্তু তিনি বাঙ নিপত্তি করিতেন না। অবশেষে একদিন নিমাই গৃহসমীপস্থ গৰ্ত্তে স্থিত এক উচ্ছঃ হাড়াস্তুপের উপর গিয়া উপবেশন করিলেন। শচীদেবী নানারূপ বুঝাইতে লাগিলেন এবং এত দিনেও নিমাইর-উচ্ছঃজ্ঞান হইল না বলিয়৷ অমুযোগ করিতে লাগিলেন। চতুর বালক তখন উত্তর করল “উচ্ছিষ্ট-জ্ঞান ভদ্রাভদ্রজ্ঞান হইবে কোথা হইতে ? তোমরা যে আমার পড়া শুনা বন্ধ করিয়া দিরছি। আমাকে যদি পড়িতেই না দে ও তাহ হইলে আমি আর গৃহে যাইব না।” শচী নিমাইকে ধরিয়৷ অনিয়া স্নান করা হলেন। জগন্নাথ গৃহে প্রত্যাগত হইলে প্রতিবেশিগণ সকলে মিলিয় তাহাকে বুঝাইয়। নিমাইর পুনরায় পাঠারস্ত করাইয়া দিলেন। নিমাই দ্বিগুণ উৎসাহে অধ্যয়নে এবৃত্ত হইলেন। কিয়ৎকাল পরে নিমাইর উপনয়ন-সংস্কার সম্পন্ন হইল। তাহার সুন্দর সুগঠিত শরীরে সূক্ষ্ম যজ্ঞসূত্র পরম সুন্দর দেখাইত। উপনয়নান্তে নিমাই নবদ্বীপের অধ্যাপক শিরোমণি গঙ্গাদাস বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, কাৰ্ত্তিক, ১৩১৯ পণ্ডিতের টোলে ভৰ্ত্তি হইলেন। অল্পদিনেই গঙ্গাদাস তাহার নূতন ছাত্রের প্রতিভার পরিচয় প্রাপ্ত হইলেন এবং তাঁহাকে পুত্রবং স্নেহ করিতে লাগিলেন । র্তাহার ছাত্রগণের কেহই ফাকিতে নিমাইকে আঁটিতে পারিত না। ক্রমে নিমাই যাবতীয় ছাত্রের নায়করূপে পরিগণিত হইলেন মুবার গুপ্ত কমলাকান্ত, কৃষ্ণানন্দ, মুকুন্দ, সঞ্জয় ভূতি ভক্তগণ এই টোলে নিমাইর সহাধ্যায়ী ছিলেন । প্রতিদিন সতীর্থগণের সহিত নিমাই স্নানার্থ গঙ্গাতীরে গমন অসংখ্য ছাত্র গঙ্গার ঘাটে হই ত। নিমাই ও তাহার সঙ্গিগণের সহিত অঙ্গাঙ্গ টোলের ছাত্ৰগণের বিস্তর তর্ক-বিতর্ক হইত। নিমাইর তর্ক প্রবৃত্তি এত অধিক ছিল যে, এক ঘাটে তর্ক শেষ হইলে, তিনি সন্তরণ পূৰ্ব্বক অন্তঘাটে গমন করতঃ তত্রস্থ ছাত্ৰগণের সহিত তর্ক আরম্ভ করিয়া দিতেন । এই তর্ক অনেক সমুয় গালাগালি ও মারামারিতে পরিণত হইত। স্বানান্তে গৃহে । আসিয়া বিষ্ণু-পূজা ও তুলসী বৃক্ষে জলদান করতঃ নিমাই ভোজন করিতেন। ভোজনন্তে নির্জনে বসিয়া স্বত্রের টপ্পনী রচনা করিতেন । পুত্রের বিদ্যাচর্চায় আগ্ৰছ দেখিয়া মিশ্রদম্পতি আনন্দিত হইতেন এবং অনবরতঃ পুত্রের মঙ্গলের জন্য ইষ্টদেবতার নিকট প্রার্থন করিতেম। এই আনন্দের মধ্যেও মাঝে মাঝে পুত্রের সন্ন্যাস গ্রহণ-সম্ভাবন। মনোমধ্যে উদিত হইয়া, জগন্নাথ মিশুকে আতঙ্কে অভিভূত করিয়া ফেলিত । এক করিতেন । সমবেত