পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8o ৭ল দশন যেমন প্রবল, আৰ্য্য-সাধনার প্রাচীনতম লীলাভূমি উত্তর-ভারতে তেমনতর প্রবল নহে। দুই তিন শতাব্দীর মধ্যে সমগ্র মণিপুরী জাতি হিন্দুত্ব লাভ করিয়াছে। আজিও দেশের নানা স্থানে আমাদিগের অলক্ষিতে কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনার্য্য-গোষ্ঠী আর্য্যসমাজের অঙ্গীভূত হইয়া যাইতেছে। আর্যধৰ্ম্ম মত প্রচার করিয়া ভিন্ন ভিন্ন সমাজের উপরে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করিবার চেষ্টা করে নাই। কিন্তু অতি প্রাচীন কাল হইতে ভারতের সনাতন আর্য্য-সাধন বিবিধ অনার্য্য সমাজে, আপনার বিশেষ সমাজ-তন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করিয়৷ সেই সকল অনার্য্য-সমাজকে আপনার অঙ্গীভূত করিয়াছে। এই বিশেষ আর্য্যসমাঙ্গ-তন্ত্রকেই বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম বলে । দুর্দিনে পড়িয়া এই বর্ণাশ্ৰম-ধৰ্ম্ম আশ্রম বিহীন, সুতরাং ধৰ্ম্মচুত হইয়া বর্ণভেদে পরিণত হইয়াছে। বর্ণাশ্রম বলিয়া র্যাহার। একটা প্রবল কোলাহল তুলিয়াছেন, তাহার। বর্ণাশ্রম বলিতে প্রকৃত পক্ষে বিলাতী ছাঁচের ও বিদেশী বীজের একটা বুকট শ্রেণীভেদই বুঝিয়া থাকেন। একদল লোক যেমন ভারতের তথাকথিত জাতিভেদকে তাড়াইয়া, তাহার স্থানেবিলাতের আমদান অর্থ-প্রাণ, ভোগপ্রধান, পারুস্যপূর্ণ, উগ্রকৰ্ম্ম, বিপ্লবাত্মক শ্রেণীভেদকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করিতে চাহিতেছেন, সেইরূপ আর একদল লোকে আশ্রমের খর্ব ভুলিয়৷ ধৰ্ম্মের মৰ্ম্মকে নিস্পীড়িত করিয়া বর্ণাশ্রম রক্ষা করিবার ছল করিয়া সেই আত্মঘাতী শ্রেণীভেদের আদর্শকে আপনাদিগের সম্মুজে .২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, .৩১৯ আনিয়া কেহ বা ব্রাহ্মণ-সভা কেহ বা বৈশুসভা কেহ বা মাহিষ্ঠা-সভা প্রতিষ্ঠিত করিতেছেন। বর্ণাশ্রম ধষ্মের মৰ্ম্ম বুঝিলে এ উৎকট চেষ্টায় কেহ প্রবৃত্ত হইতেন না। বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্ম সমাস-নিম্পন্ন শব্দ। এ সমাস দ্বন্দ্ব সমাস নহে। কিন্তু দ্বন্দ্ব ও ষষ্ঠীর্তৎপুরুষ এই দুই সমাস এক হইয়া এই সমষ্টিকে গড়িয়াছে। বর্ণ ও আশ্রম—বর্ণাশ্রম দ্বন্দ্ব সমাস, এই বর্ণাশ্রমের যে ধৰ্ম্ম তাহাই বর্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম । বর্ণ হইতে আশ্রমকে পৃথক করিলে যে বর্ণমাত্র অবশিষ্ট থাকে, তাহার উপরে বর্ণভেদ বা জাতিভেদকে প্রতিষ্ঠা করা যায়, কিন্তু বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্ম তিষ্ঠিতে পারে না । বর্ণ ও আশ্রমের পরম্পরের সঙ্গে । .য প্রাচীন অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ ছিল তাহ বর্তমান সময়ে আছে কি ? এখন আশ্রম নাই বর্ণ আছে। সুতরাং ভারতে বর্ণাশ্রম আর নাই ; বর্ণাশ্ৰমধৰ্ম্মও নাই । আছে কেবল জাতিভেদ আর এ জাতিভেদ বস্তুটা কখনো প্রকৃত আর্য্য-সাধনায় স্থান পাইয়াছিল বলিয়া মনে হয় না । আর্য্য-সাধনায় বর্ণ ও জাতি একই কথা কি না ভাহাও বলিতে পারি না। গো জাতি, মনুষ্য জাতি এ সকল কথা আছে। দ্বিজাতি এ কথাও পাওয়া যায়, কিন্তু ব্রাহ্মণদিগকে জাতি বলা যাইত, নু বৰ্ণ বলা যাইত ? झांडूतंर्षjन् शब्रा ऋछेन् । * গীতায় ভগবান এই কথাই বলিতেছেন। চারি জাতির স্বষ্টি করিয়াছি এমন কথা তো বলেন নাই। আর বর্ণাশ্রমধৰ্ম্মেও বর্ণ শব্দই ব্যবহৃত হইয়াছে জাতি শব্দ হয় নাই । এখানে বর্ণ শব্দের, অর্থ কি ? এ কি রং না অক্ষর ?