vম সংখ্যt ] ৫ানও দোধের কথাও হয় না। প্রত্যক্ষ প্রতিজ্ঞতার অভাব হইতেই সাহিত্য-স্বষ্টিতে বস্তুতন্ত্রহীনতার উৎপত্তি হয়। কোনও কোনও দিকে যদি তার প্রত্যক্ষ অতিজ্ঞতার অভাব হই থাকে, তার জন্য রবীন্দ্রনাথকে কেহ কোনও মতে দায়ী করিলে না । তিনি যে স্থানে, যে কালে, যে পরিবারে জন্মিয়াছেন. যে সকল বাহিরের অবস্থা ও ব্যবস্থার ভিতর দিয়া বাড়িয় উঠিয়াছেন, সে সকলই তার জন্য দায়ী। রবীন্দ্রনাথ ইচ্ছ। করিয়া এ সকল অবস্থা ও ব্যবস্থার পরিবর্তন করিতে পারিতেন না। আর এ জগতে সৰ্ব্বত্রই ছায়াতপের ন্যায় ভাল ও মন্দ, পূর্ণ ও অপূর্ণ, মিশিয়া থাকে। রবীন্দ্রনাথের জীবনের বাহ-ঘটনাপাতেও এ ভালমদের মিশ্রণ রহিয়াছে। এ সকল ঘটনা ও অবস্থাতে কোনও কোনও দিক দিয়া তার অলোকসামান্য প্রতিভাকে যেমন কতকটা সংকুচিত করিয়াছে, আবার অন্তদিকে সে ক্ষতিপূরণ করিয়াই যেন, তাহাকে বাড়াইয়া এবং ফুটাইয়াও তুলিয়ছে। এ সকল পারিপাশ্বিক দেখি গুণেই রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথ হইয়াছেন । রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য-সৃষ্টির বস্তুতন্ত্রইনত এ সকল পারিপাশ্বিক অবস্থা ও ব্যবস্থারই ফল । ইহাতে রবীন্দ্র প্রতিভাকে ধে খাট করিয়াছে বা করিতে পারে, এমন কথা বলা যায় না। বস্তুতন্ত্রহীনতা স্বঃ, বন্ধকেই খাট করে সৃষ্টিশক্তিকে খাট করে গ], বরং ്. দিক্ দিয়া বিচার *রিলে, বাড়াইয়াই দেয় বলিয়া বোধ হয়। "জনাথের কাব্যস্থষ্টির বস্তুতন্ত্রহীনতা সাহিত্যে বস্তুতন্ত্রত (teసి র্তার অলৌকিক কবি প্রতিভার অসাধারণ ঐন্দ্রজালিক প্রভাবেরই সাক্ষ্য দেয়, তার শক্তিহীনতার প্রমাণ প্রদান করে না। বস্তু তন্ত্রহীন বলিয়া কবি-প্রতি তার কখনও যে কোনও অগেীরব হয়, এমন মনে করি নাই । 输 - ফলতঃ বস্তুতন্ত্র কথাটার প্রকৃত মৰ্ম্ম नी বুঢ়য়াই, আমার মনে হয়, রবীন্দ্রনাথের ভক্তগণের মধ্যে কেহ কেহ আমার অঙ্কিত রবীন্দ্র-চরিত-চিত্র পড়িয়া ক্ষুণ্ণ হইয়াছেন । বলা বাহুল্য যে বস্তুতন্ত্র কথাটা সংস্কৃত। আমাদের দর্শনশাস্ত্রে ইহার বহুল ব্যবহার রঙ্গিয়াছে। ভগবান ভাষ্যকার শারীরক তাষে যখন-তখন এই কথাটী ব্যবহার ক1রয়াছেন । আর আমাদের শাস্ত্রে বস্তুতন্ত্রবিহীনতার একটা অতি মামুলী দৃষ্টাস্ত “বন্ধ্যাপুত্রবং।” মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্বন্ধটা এমন নিগূঢ়, এমন জটিল, এত বহুমুখী যে, যে রমণী কখনও সন্তান ধারণ করেন নাই, তার পক্ষে প্রকৃত মাতৃস্নেহ বস্তুটী যে কি তার জ্ঞানলাভ একেবারেই অসম্ভব। কচিং কোনও বন্ধ্যা অপরের সন্তানকে আপনার প্রাণের সমুদায় স্নেহ ঢালিয়া দিতে পারেন মায়ের চাইতে বেশি সন্তৰ্পণে ও একাগ্রত সহকারে তার সেব শুশ্রুষা করিতে পারেন, কিন্তু সে স্নেহ যতই উদ্বেলিত ও অনাiখল, সে সেবা যতই নিঃস্বর্থে ও অক্লান্ত হউক না, তাহ৷ সন্তানবতীর আপনার সন্তানের সঙ্গে যে সম্বন্ধ সে সম্বন্ধকে কিছুতেই অধিকার বা উপলব্ধি করিতে পারে না । বাৎসল্য হিসাবে ইহা ব্যুতন্ত্র নয়। কিন্তু বস্তুতন্ত্র নয় বলিয়া ইহা যে কপট স্নেহ এমন কখনওই বলা যায় না।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।