পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিমাই-চরিত্র অষ্টম অধ্যয় টোলভঙ্গ ও কীৰ্ত্তনারস্ত নিমাই গৃহে প্রত্যাগত হইলে সকলেই র্তাহার পরিবর্তন লক্ষ্য করিয়া আশ্চর্য্যন্বিত হইলেন। পাণ্ডিত্য-গৰ্ব্ব-স্ফীত যুবকের সে বিদ্যার অভিমান আর নাই। তাহার বিনীত ব্যবহারে বন্ধুবান্ধব সকলেই পরম প্রতি লাভ করিলেন। বহুলোক তাহাকে দেখিতে আসিল, নিমাই সকলেরই সহিত যথাযোগ্য সম্ভাষণ করিলেন। আর সকলে প্রস্থান করিলে কৃতিপয় বিষ্ণুভক্ত গয়ার বৃত্তান্ত সবিশেষ শুনিতে চাহিলেন। গয়াধামের বর্ণনা আরম্ভ করিয়া নিমাই ভাবাবিষ্ট হইয়। গড়িলেন,তাহার নয়নযুগল হইতে অবিরাম ধারা বহিতে লাগিল, শরীর রোমাঞ্চিত হইল ও থর থর করিয়া ক্টাপিতে লাগিল, তিনি কেবল “কৃষ্ণ কৃষ্ণ” বলিয়। রোদন করিতে লাগিলেন। কিঞ্চিৎ প্রকৃতিস্থ হইয়া সময়ান্তরে সবিশেষ বর্ণনা করবেন বলিয়া নিমাই বন্ধুগণকে বিদায় দিলেন। শচীদেবী পুত্রের ভাবান্তর লক্ষ্য করিয়া অমঙ্গলীশঙ্কায় গৃহদেবতা গোবিন্দের শরণাপন্ন হইলেন। অধ্যাপনার্থ গমন দেখিতে দেখিতে নবদ্বীপস্থ বৈষ্ণবগণের মধ্যে নিমাইর ভfবাবেশের কথা প্রচারিত হইয়া পড়িল—শুনিয়া সকলেই পরমহৃষ্ট হইলেন। শ্ৰীবাস পণ্ডিত প্রার্থনা করিলেন “শ্ৰীকৃষ্ণ আমাদের গোত্রবৃদ্ধি করুন।" পরদিন বৈষ্ণবগণ শুক্লাম্বরব্রহ্মচারীর গৃহে সমবেত হইলে, নিমাই তথায় গিয়া উপস্থিত হইলেন। বৈষ্ণব দর্শনে তাহার ভক্তি উদ্বেল হইয়া উঠিল এবং তিনি “হা কৃষ্ণ কোথা কৃষ্ণ” বলিয়া মূৰ্ছিত হইয়া পড়িলেন। ভক্তগণের মধ্যে তখন প্রেমের বন্ত ছুটিল— সকলে নিমাইর সঙ্গে সঙ্গে রোদন করিতে লাগিলেন। নিমাইর ক্ষণে মূৰ্ছা, ক্ষণে চেতন৷ হইতে লাগিল। ক্ষণে ক্ষণে কাতর কণ্ঠে বলিতে লাগিলেন “নন্দগোপনন্দনকে আনিয়া দিয়া আমার প্রাণ রক্ষা কর।” এইভাবে কিছুদিন গেলে নিমাইর অধ্যাপক গঙ্গাদাস পণ্ডিত নিমাইকে পুনরায় অধ্যাপনা আরস্ত করিতে অমুয়োধ করিলেন । গুরুর আদেশ শিরোধাৰ্য্য করিয়া নিমাই মুকুন্দ সঞ্জয়ের গৃহে করিলেন । কিন্তু