পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯ম সংখ্যা ] উপদেশগুলিকে তাহাদে হৃদয়গ্রাহী করাইয়। দেওয়া • উচিত এবং যাহাতে তাহারা বিরক্ত না হইয়া, অধীর না হইয়। প্রফুল্ল মনে প্রীতির সহিত সেবা করিতে প্রাণী ও উদ্ভিদের বিষ (ჯ\ტY পারে, তাহদের এরূপ উপদেশ দেওয়৷ কৰ্ত্তব্য। সুতরাং কুমারী-জীবনের সর্বপ্রধান শিক্ষ—ধৰ্ম্মশিক্ষা, সংযম-শিক্ষা, প্রীতি-শিক্ষ, সমলেদন-শিক্ষা । ( ক্রমশ ) ঐযতীন্দ্রমোহন গুপ্ত। প্রাণী ও উদ্ভিদের বিষ উদ্ভিদ ও ইতর প্রাণীর উপর মানুষ যে কত অত্যাচা করে তাহার সীম। নাই । গে। মেষ মহিষ, ছাগ ও শূকরাদির কথা ছাড়িয়া দিলেও দেখা যায়, ঘোটক এবং উ&ও মমুস্থ্যের খাদ্য। পক্ষীদের ত কথাই নাই। তা’র পর ইন্দুর, সাপ, গো-সাপ, কাঠবিড়াল এবং ফড়িং প্রভৃতি পতঙ্গ জাতিও মানুষের কবল হইতে উদ্ধার পায় নাই। উদ্ভিদের উপর মানুষ এতট। অত্যাচার করিতে পারে না, সকল গাছ-পাতা বা ফলমূল স্বাদু নয়, কাজেই উদ্ভিদগুলির মধ্য হইতে অনেক দেখিয়া শুনিয়া মানুষ খাদ্য খাদ্য নির্ণয় করে। কিন্তু আমিষ-খাদ্য-নির্ণয়ে এক প্রকার বিচার করা সকল সময়ে প্রয়োজন হয় না, সভ্য মানুষ আম-মাংস ভোজন করে না ; যদি কোন প্রাণীর মাংসে কোন প্রকার অস্বাদুকর জিনিষ থাকে সিদ্ধ করিলেই তাহ নষ্ট হইয়া যায়। ফলমূল ও অনেক শাকসবজি অপকাবস্থাতেই মানুষ আহার করে, কাজেই অগ্রে স্বাঞ্ছত স্থির করিয়া পরে আহাৰ্য্য বলিয়া তাহাদিগকে গ্রহণ করিতে হয়। আবার অধিকাংশ উদ্ভিদেরই দেহে যে বিস্বাদজনক পদার্থ মিশ্রিত থাকে, তাহ সিদ্ধ করিলে নষ্ট হয় না-কাজেই সিদ্ধ করিলে যেমন সকল প্রাণীর মাংসই খাদ্য হইয়া দাড়ায় উদ্ভিদ তেমনটি হয় না। নচেৎ মানুষের অত্যাচারে হয় ত, ভূমণ্ডলের গাছপালাও বিরল হইয়া আসিত । শাস্ত্রে বলে “বজ্ঞার্থে পশবঃ স্বপ্তাঃ স্বয়মেব স্বয়ম্বুবা” । কিন্তু প্রকৃতির কার্য্য পরীক্ষা করিলে শাস্ত্রের উক্তির সহিত ঘোর অসামঞ্জস্য দেখা যায় ; এ কথা কখনই স্বীকার করা যায় না যে, উচ্চবুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণীদের যজ্ঞের আহুতির জন্যই দুৰ্ব্বল ও অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন জীবের স্বল্প হইয়াছে। বাঘ ভালুকের তীক্ষু নখদন্ত, সঙ্গারুর গায়ের কাটা, কচ্ছপ ও শম্বুকজাতীয় প্রাণীর কঠিন দেহাবরণ, গো মেয-ছাগাদির শৃঙ্গ, বোলুগ ও মধুমক্ষিকার হুল, এবং সাপের বিযদন্ত সকলই আত্মত্রাণের মহা অস্ত্র । কীট পতঙ্গ অতি ক্ষুদ্র প্রাণী, ইহাদের ধারালো হুল নাই, কিন্তু কেহ কেহ দেহ হইতে এমন দুর্গন্ধযুক্ত রস নিস্থত করে যে, তাহাতে কোন শক্র উহাদের নিকটবৰ্ত্তী হইতে ভয় পায়। গ্রীষ্ম ও বর্ষার রাত্রিতে আলো জালিয়া বসিলে, এই প্রকার দুর্গন্ধযুক্ত বহু কীট-পতঙ্গ দেখা গিয়া থাকে।