পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@Nうソ যায়, যাহার যথেষ্ট মাংস আহার করিতে পারেন, কিন্তু মৎস্য ভক্ষণ করিতে পারেন না। চিংড়ি মৎস্য বা কাকড় খাইলেই অসুস্থ হইয় পড়েন, এ প্রকারও অনেক লোক দেখা গিয়াছে। রন্ধন করিলেও মৎস্যমাংসে মৃদ্ধ বিষ থাকিয় যায়, ইহা স্বীকার করিয়া লইয়া ল্যাঙ্কেষ্টার সাহেব নিরামিষাহারীর রূচি-অরুচির ব্যাখ্যান দিবার চেষ্ট৷ করিয়াছেন । বড়ই আশ্চর্য্যের বিষয়, সাপ প্রভৃতির যে তীব্র বিযের বিন্দুমাত্র রক্ত স্পর্শ করিলে বৃহৎ প্রাণীরও মৃত্যু হয়, তাহ উহাদের নিজের দেহে প্ৰবেশলাভ করিলে কোনই অনিষ্ট করিতে পারে না। একটি সর্প আর একটিকে দংশন করিলে আহত সৰ্পের যে, কোন অনিষ্টই হয় না, তাহ। একাধিক পরীক্ষায় সুস্পষ্ট দেখা গিয়াছে । কয়েক জাতীয় সর্পকে রাগাইলে তাহার। নিজেদের গায়ে নিজেরাই কামড় দিতে বঙ্গদর্শন [ ১২ বৰ্ষ, পৌষ, ১৩১৯ থাকে, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় নিজের বিষে ইহাদের কেহই নিজে মরে না। সম্প্রতি এই ব্যাপার লইয়া জীবতত্ত্ববিদগণ নানা গবেষণা করিয়াছেন। ইহার ফলে স্থির হইয়াছে যে, বসন্তের বা ডিপথেরিয়া প্রভূতি রোগের বীজ অল্পমাত্রায় দেহস্থ করিলে যেমন এই সকল রোগের তাজা বিষ আর মানুষকে পীড়িত করিতে পারে না, সেইপ্রকার সর্প প্রভৃতির দেহেই বিষ-কোষ আছে বলিয়৷ সেই বিষে তাছাদের অনিষ্ট হয় না। হাইড্রোফোবিয়া অর্থাৎ জলাতঙ্ক রোগের শান্তির জন্য যেমন আমরা ক্ষিপ্ত কুকুরের মৃদু বিষের টিকা লইয়া নিশ্চিন্ত থাকি, সাপগুলিও ঠিক সেই প্রকার যেন নিজের বিষের টিকা লইয়া নিশ্চিন্ত হইয়া আছে। তাই পরস্পর কামড়া-কামড়ি করিলে বা নিজের দেহে নিজের বিষ ঢালিয়া দিলে ইহাদের কোনই অনিষ্ট হয় না। শ্রীজগদানন্দ রায়। লোক শিক্ষা ও লোকশিক্ষার সঙ্গে সমাজ-বিবর্তনের সম্বন্ধ অতিশয় ঘনিষ্ঠ । যে সকল শক্তির, সংঘর্ষণে বা সমবায়ে সমাজ-জীবন বিবৰ্ত্তিত হইয় থাকে, লোকচরিত্রের শক্তি তন্মধ্যে সৰ্ব্ব প্রধান। আর লোকশিক্ষা এই লোকচরিত্রকে গড়িয়া তুলিয়া, সমাজ কোন দিকে, কতটা বেগে, বিবৰ্ত্তিত হইবে, ইহা ঠিক করিয়া দেয়। এই জন্য কোনও সমাজে কোনও অভিনব লোকশিক্ষার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করিবার পূৰ্ব্বে এই নূতন সমাজপ্রকৃতি ব্যবস্থার সঙ্গে সেই সমাজের পুরাতন প্রকৃতির কতটা সামঞ্জস্য ও সঙ্গতি সাধন সম্ভব, ইহা ভাল করিয়া তলাইয় দেখা আবগুক । কেননা, এ সঙ্গতিসাধন যদি একান্তই আপস্তল হয়, তাহা হইলে এই নূতন শিক্ষাব্যবস্থাতে সাংঘাতিক সামাজিক বিপ্লবের স্বষ্টি অনিবাৰ্য্য হইয়া উঠিবে এবং সে বিপ্লবমুখে সমাজের নিজস্ব প্রকৃতি এবং সনাতন সভ্যতা ও সাধনাকে রক্ষা করা নিতান্তই কঠিন হইয়া পড়িবে। এইরূপ