৯ম সংখ্য। ] বিশেষের যে অভিব্যক্তি হয়, তাহাকে সে রসের রূপ বলা যাইতে পারে না। কারণ প্রত্যেক বস্তুর সঙ্গে সেই বস্তুর রূপের সম্বন্ধটা কিয়ৎ পরিমাণে নিত্য আর সৰ্ব্বত্রই অঙ্গাঙ্গী। একজাতীয বস্তুর রূপ বা আকার মোটের উপরে এক মানুষের রূপ বা আকার সকল মামুষের মধ্যেই মোটের উপরে এক। মামুষে মামুযে বর্ণে ৰ। গঠনে, চেহারায় ব| চলনে যতই পার্থক্য থাকু ক না কেন, এ স ক ল বিভিন্ন ত৷ মানবীয় রূপের অনতিক্রমণীয় সীম। বা সমতাকে কিছুতেই অতিক্রম করিয়া যাইতে পারে না । খৰ্ব্বাকৃতি লোমশ কে'ভম্যান (Cave-man) একদিকে ; কৃষ্ণকায় কুঞ্চিতকেশ, স্থল-অধরোষ্ঠসম্পন্ন কাফ্রি আর এক দিকে ; সুগঠিতবপু, শ্বেতবর্ণ রোমক বা গ্ৰীক আর একদিকে; আমেরিক ইণ্ডিয়ান এ কদিকে, আর চীনাম্যান বা জাপানী অার একদিকে ; এ সকলের মধ্যে বিস্তর আকৃতিগত বৈষম্য আছে। কিন্তু এ সকল বৈষম্য সত্বেও সকলের মধ্যেই মাতুবী রূপ বলিয়া যে একটা সামান্ত বস্তু আছে, ইহা অস্বীকার করা যায় না। এই রূপ ইহাদের সকলকেই 'অধিকার করিয়া আছে। এই রূপ আছে বলিয়াই ইহার পরস্পর হইতে এতটা পৃথক হইয়াও, সকলেই মানুষ হইয়াছে। এই মানুষী রূপের সঙ্গে মানবমাত্রেরই একটা নিত্য ও অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ রহিয়াছে। যেখানেই মানুষ সেখানেই এই মানুষী রূপট ফুটিয়া আছে। ছায়। যেমন আতপের অনুগমন করে, আতপ ছাড়া যেমন কোথাও ছায়া থাকে না, থাকা রসের রূপ ৫৬৯ সম্ভব নহে ; আর ছায়া ছাড়াও কোথা ও আতপ থাকে না, থাকা ও সন্তবে না; সেইরূপ মানুষের সঙ্গে এই মানুষী রূপেরও একটা নিত্য ও সপরিহার্য যোগ রহিয়াছে । প্রত্যেক বস্তুর সঙ্গে সেই বস্তুর রূপের সম্বন্ধ এইরূপই নিত্য, অঙ্গাঙ্গী, অপরিহার্য্য। ভাষায় বা আচার-আচরণে আমরা সচরাচর অন্তরের ভাবকে বা রসূকে যেরূপে প্রকাশিত করিয়া থাকি, তাহ সৰ্ব্বত্রই সমান নহে। এইজন্য রসের এই সকল অভিব্যক্তিকে তার রূপ বলা যায় না। রসের রূপ তার এমন একটা বিশেষ বহিঃপ্রকাশ বা অভিব্যক্তি হওয়| চাই, যার সঙ্গে তার একটা নিত্য, অপরিহার্য্য, অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ আছেই আছে। যেখানেই মানব-অন্তরে কোনও রসবিশেষ জাগিয়া উঠে, সেখানেই তার এই নিজস্ব রূপটীও প্রকাশিত হইবেই হইবে । এরূপ না হইলে, তাহাকে সে রসের রূপ বল। যাইতে পারে नl । কিন্তু কোনও রস বা ভাব প্রাণে জাগা মাত্রই যে তার এই রূপট ফুটি উঠিলে, এমনও কোন কথা নাই। রূপ মাত্রেই বস্তুবিশেষের বহিঃপ্রকাশ। আর বস্তুর গাঢ়তার উপরে তার রূপের প্রকাশ হওয়া বা না হওয়া সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করিয়া থাকে। পণ্ডিতের সচরাচর জড়পদার্থের তিনটী অবস্থার উল্লেখ করেন। এক—তার বfয়বীয় অবস্থা—ইংরেজিতে ইহাকে gaseous বলে। দ্বিতীয়-তার তরল বা লিকুইড (liquid ) অবস্থা। তৃতীয়—তার কঠিন বা সলিড ( solid ) অবস্থা। প্রথমাবস্থায় পদার্থের রূপ
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৫৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।