পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যt ] দেশের জল-বায়ু থুেন কবিত্বময় ; অতএব যাহার যথার্থ কবিত্ব আছে বঙ্গদেশ তাহাকে সমাদর করিতে যেন বাধ্য। জয়দেব বাঙ্গালী হইয়াও বাঙ্গালী কবি নহেন, তথাপি বঙ্গভারতী তাহার কাছে যে কত ঋণী তাহ। এক মুখে বলিয়া শেষ করা যায় না। জয়দেব বাঙ্গালার শেব সংস্কৃত কাব্য রচনা করিয়াছেন, যেন সংস্কৃত ভাষা মৃত ভাষা হুইবার পূৰ্ব্বে অপূৰ্ব্ব উজ্জ্বল আলোকে চতুর্দিকৃ উদ্ভাসিত করিয়া নিতিয়া গিয়াছে। মধুর কোমল-কান্ত পদাবলী যথার্থই যদি দেখিতে চাও, তবে গীতগোবিন্দ পাঠ কর, তাহা দেখিতে পাইবে । কিন্তু ম ওই মিষ্ট হউক, গীতগোবিন্দ যদি ংস্কৃত কাব্য মাত্রই হইত,তাহ হইলে আমরা তাহার এত পক্ষপাতী হইতাম না। গীতগোবিন্দ শেষ সংস্কৃত কাব্য, কিন্তু আদি বাঙ্গাল কাব্য। একটা বিশাল বৃক্ষের পতন হইলেও, অনেক সময় তাহার শিকড় হইতে ছোট গাছগুলি যেমন আপনি গঙ্গাইয় উঠে, তেমনি বিশাল সংস্কৃত কাব্য-তরুর পতনে, বাঙ্গালু কাব্যবৃক্ষের চারা যেন আপনি গঙ্গাইয়। উঠিয়াছিল। গীতগোবিন্দের গীতগুলি হইতে সংস্কৃত বিভক্তিগুলি খলাইয়৷ লইলে, তাহারা বাগাল কবিতার মত শোনায় । “টগ সখি কুঞ্জং সতিমিরপুঞ্জং শীলয় নীল নিচেলিমূ।” বাঙ্গালী কবিতার উৰ্দ্ধতন পিতামহও নয়,ঠিক এক পুরুষ উপরেই। অনেক স্থলে গীতগোবিন্দের পদ অবিকল বাঙ্গালী বলিয়াই লওয়া যায়— জয়দেব ও বিদ্যাপতি (tషిసె (১) চন্দনচর্চিত নীল কলেবর পীতবসন दममांजौ । (২) মধুকর নিক্ষর করম্বিত কোকিল কূজিত কুঞ্জ কুটীরে। (o) ললিতলবঙ্গলতাপরিশীলন কোমল - so मणग्न नगौgद्र । এগুলি খাট বাঙ্গাল কাবেও বেশ চলিয়া যাইতে পারে। অনেক স্থলে ক্রিয়াপদের একটু আধটু ব্যতিক্রম করিলেই জয়দেবের গান বাঙ্গালা গানে পরিণত হয়। যথা— ধীর সমীরে যমুনা তীরে বসতি বনে বনমালী। জয়দেবের গীতগোবিন্দে একটা স্তোত্র আছে, যাহার সাতট চরণে ও ভারতচঞ্জের বাঙ্গালাস্তোত্রগুলিতে কিছুমাত্র প্রভেদ নাই। ভারতচন্দ্র লিখিয়াছেন— জয় রাম রাঘব, কৃষ্ণ কেশব ংস দানল ঘাতন। অথবা জয় জয় হর রঙ্গিয়া, কর বিকশিত নিশিত পরশু অভয় কর কুরঙ্গিয় । ইহর সহিত গীতগোবিন্দের ২নং গীতের প্রথম সাতট চরণ মিলাইয়া দেখুন, কিছু প্রভেদ নাই। বাঙ্গালা কাব্যের মধ্যে যদি ইহারা স্থান পায়, তাহা হইলে যে না জানে, সে কখনই বুঝিতে পরিবে না যে, এই স্তোত্রগুলি সংস্কৃত গীতগোবিন্দে আছে। - গীতগোবিন্দের ভাষা বাঙ্গাল কাব্যের ভাষার সূচনা করিয়াছে, সে বিষয়ে সন্দেহ করিবার কারণ নাই। বাঙ্গালা ভাষার বীজ বপন করিয়া গীতগোবিন্দে সংস্কৃত কাষ্যের শয়ন, এবং কয়েক শতাব্দী পরে গীতগোবিন্দের