পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০ম সংখ্যt ] হইয়া, ধৰ্ম্মসাধনে ও সমাজ-জীবনে, উভয় ক্ষেত্রেই ব্যক্তিত্বাভিমানী অনধীনতার ভাবকে অনেকটা সংযত করিয়া রাখিয়াছে। এই জন্য এখানে সমাজামুগত্য যে ধৰ্ম্মের একটা শ্রেষ্ঠ অঙ্গ, এ ভাবট এ পর্য্যন্ত একেবারে নষ্ট হইয়া যায় নাই। এই কারণেই, রোমক-সঙ্ঘের আশ্রয় গ্রহণ করিবার সঙ্গে সঙ্গেই উপাধ্যায়ের সমাজযুগত্যের ভাবটাও পরিপূর্ণ হইয়া উঠিতে অণরস্ত করে । অতএব এই সমাজামুগত্যটা ভাল হউক মন্দ হউক ; যুক্তিসঙ্গত বা অযৌক্তিক আর যাহা কিছুই হউক না কেন, ইহার অন্তরালে যে একটা বিরাট ধৰ্ম্মতত্ত্ব ও সমাজ-তত্ত্ব বিদ্যমান ছিল, এ কথাটা অস্বীকার করা যায় না। একটা খেয়ালের চাপে উপাধ্যায় প্রাচীন সমাজ শাসন পরিত্যাগ করেন নাই ; খেয়ালের চাপে তাহার পুনঃ-প্রতিষ্ঠার চেষ্টাতেও প্রবৃত্ত হন নাই। এই জন্য র্তাহীকে পুনরাবৰ্ত্তনকারী বা রি-অ্যাকষণারীও বলা যায় না। ফলতঃ আমাদের সমাজের যাহা যেরূপ আছে, তাহ সেইরূপই থাকিবে বা থাকা বাঞ্ছনীয়, উপাধ্যায়কে কোনও দিন এমন কথা বলিতে শুনি নাই। “বন্দে মাতরমূ” পত্র প্রতিষ্ঠার সময়ে এই সম্বন্ধে উপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার অনেক কথা হয়। নূতন কাগজ সমাজ-সংস্কার সম্বন্ধে কি নীতি অবলম্বন করিবে, ইহাই আমাদের উভয়ের বিচাৰ্য্য বিধয় ছিল। বন্দে মাতরম্ সৰ্ব্ব বিষয়ে উদার সংস্কারের সমর্থন করিবে, আমি এই কথা বলি। উপাধ্যায় এ বিষয়ে উপাধ্যায়ের সমাজনীতি তার নিজেরাই নিজেদের SS)) একটু আপত্তি করেন। তার মূল কথাটা আজিও আমার মনের মধ্যে জাগিয়া অাছে। তিনি বলেন—“সমাজ-সংস্কারের বিরুদ্ধে আমি নই। কিন্তু বর্তমান অবস্থাধীনে সমাজ-সংস্কার বলিতেই বিদেশীয় সভ্যতা সাধনার প্রভাবে, কতকগুলি বৈদেশিক আদর্শের স্বল্পবিস্তর অম্বুবর্তনই বুঝাইয়া থাকে। এই জাতীয় সমাজ-সংস্কারে আমাদের সমাজের বিশেষত্বটুকু ক্রমে লোপ পাইতেছে, আমরা ফিরিঙ্গীর একটা নকলের নকলের মতন হইয়া উঠিংেছি। এটা আমি চাই না। ইহাতে সমাজের স্বদেশিকতা নষ্ট হইয়া, সমাজের ও লোক চরিত্রের সাংঘাতিক বিপৰ্য্যয় উপস্থিত হইবে। এই বিদেশীয় শক্তির প্রভাবকে প্রথমে আটকাইতে হইবে। স্বদেশের সমাজকে ও স্বদেশের জনগণকে সৰ্ব্বাদেী আত্মস্থ করিতে হইবে। তার আগে জাগুক । নিজের নিজেদের চিনিয়া লউক । তারপর, প্রকৃতি ও প্রয়োজনাতুরূপ নিজেদের সমাজকে গড়িয়া পিটিয়া শুধরাইয়া লইবে।” এই কথাগুলিতেই উপাধ্যায়ের সমাজ

  • নীতির যেমন, তেমনি তার স্বাদেশিকতারও

সুন্দর পরিচয় পাওয়া যায়। বস্তুতঃ উপাধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন মানবসমাজকে এক একটা স্বতন্ত্র, বিশিষ্ট জীবের মতন মনে করিতেন বলিয়া বোধ হয়। Social organism și TNİH FİR Affa; বিদেশীয় সমাজ-বিজ্ঞানের এই পরিচিত পরিভাষাটা তার মুখে কখনও শুনিয়াছি বলিয়া মনে পড়ে না। কিন্তু তার কথা