ఆర్చి বাৰ্ত্তায় তিনি যে এই আধুনিক সমাজতত্ত্বটাকে দৃঢ় করিয়া ধরিয়াছিলেন ইহা খুবই বুনিয়াছিলাম। আর প্রত্যেক সমাজকে এইরূপ বিশিষ্ট জীবধৰ্ম্মাবলম্বী বলিয়া মনে করিতেন বলিয়াই সকল সমাজেরই ভাল ও মন্মের মধ্যে যে একটা অতি নিগূঢ় অঙ্গাঙ্গী যোগ আছে, এ কথাও তিনি বলিতেন। এইজন্যই বিলাতী সমাজের মন্টকে ছাড়িয়া শুদ্ধ ভালটকে গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে যেরূপ নিতান্ত অসাধ্য, সেইরূপ আমাদের নিজেদের সমাজের ভালটুকুকে নিখুত ভাবে রক্ষণ করিয়া, কেবল তার মন্দৰ্টুকু:ক একান্ত ভাবে পরিহার করাও একান্ত অসম্ভব। জীবদেহে যখন প্রাণশক্তি দুর্বল হইয়। পড়ে, তখনই কেবল তাহার অন্তরস্থ রোগের বীজায় সকল প্রবল হইয়া অশেষ উৎপাত ও অমঙ্গল ঘটাইতে আরম্ভ করে, প্রাণীর সুস্থ সবল অবস্থায়, তার निर्छौंद ও অপকার সাধনে অক্ষম হইয়া পড়িয়া থাকে, এ যেমন সত্য ; সমাজের ভালমন্দ সম্বন্ধেও ইহা সেইরূপই সত্য। সমাজ মধ্যে যখন প্রাণশক্তি সতেজ ও সবল থাকে তখন সমাজের রীতি-নীতি এবং শাসনসংস্কারের ভালটুকুই প্রবল হইয়া রহে ও তাহার মন্টুকু হতবল ও হীনজে হইয়া অপকার সাধনে অক্ষম হইয়া যায়। কিন্তু সমাজের প্রাণশক্তি হ্রাস হইতে আরম্ভ কৰিলেই এ সকল অন্তর্নিহিত উৎপাত ও অমঙ্গলের বঙ্গ অঙ্কুরিত হইয়া; সমাজকে বিপৰ্য্যস্ত করিয়া তুলিতে থাকে। সুতরাং সমজের প্রাণশক্তিকে জাগাইয়া তেল,সেখানে বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, মাঘ, ১৩১৯ বল সঞ্চার করা, এ সকলই সমাজসংস্কার সাধনের প্রথম ও মুখ্য কৰ্ম্ম। এটা করিতে পারিলে, সমাজ একবার সজীব ও আত্মস্থ হইয়া উঠিলে, সামাজিক ব্যাধি সকলের বীজামুগুলি আপনি মরিয়া যাইবে বা মুমুঘু হইয়া পড়িয়া থাকিবে। উপাধ্যায় এই কারণেই সৰ্ব্বাগ্রে ও সৰ্ব্ব-প্রযত্নে, স্বদেশী সমাজের প্রাণমধ্যে এই শক্তি সঞ্চার করিবার জষ্ঠই ব্যগ্র ছিলেন ; বাহির হইতে উত্তেজক ঔষধ দিয়া, সযাজ-দেহের ভিন্ন ভিন্ন স্থানীয় উপদ্রব সকলকে প্রশমিত করিবার জন্য হাতুড়ে চিকিৎসার আশ্রয় গ্রহণ করিতে চাহেন নাই। এ কথাটা না বুঝিলে, উপাধ্যায় কেন যে শেষ জীবনে সমাজসংস্কারের কথা তেমন বেশী বলিতেন না, ইহার প্রকৃত মৰ্ম্ম গ্রহণ করা সহজ বা সম্ভব হইবে না । উপাধ্যায়ের ভূয়োদর্শন এই ভাবটীকে বিশেষভাবে বাড়াইয়া তুলিয়াছিল। বিলাত যাইবার পূর্বে করাচীতে যখন রোমক খৃষ্টীয়-ধর্মের অনুশীলন করিতেছিলেন, তখন, উপাধ্যায় যতটুকু পরিমাণে সমাজসংস্কারের পক্ষপাতী ছিলেন, বিলাত হইতে ফিরিয়া আসিয়া ততটুকুও ছিলেন কি না, সন্দেহ। আমরা সমাজ-সংস্কার করিতে যাইয়৷ কোন পথে চলিতেছি, এই পথ ধরিয়া চলিলে পরিণামে কোন স্থানে যাইয়া পৌছাইতে হইবে,—বিলাতে যাইয়া, ইরেজ-সমাজের গতিবিধি ও রীতিনীতি, মত ও আদর্শ এবং ভাবস্বভাব সুহ্মভাবে পর্য্যবেক্ষণ করিয়া, উপাধ্যায় তাহা বেশ করি। ধরিতে পারিয়াছিলেন। আর ঐ পথ যে আমাদের পক্ষে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।