\&ტტ&ტ গণের এই জন্ম অমাকুষিক ব্যাপার বটে, কিন্তু তাহীদের বহু পরেও র্যাহারা স্বীয় গুণে মনুষ্যজাতির উপাস্য হইয়াছেন, র্তাহাদের সম্বন্ধেও এইরূপ অমাতুষ-জন্মের উল্লেখ হইয়াছে। ঈশ্বরপ্রেমোন্মত্ত, আধুনিক সুসভ্য জগতের উপাস্য পৰমহংস সিদ্ধ যিশুর জন্মবৃত্তান্তও এইরূপ অলৌকিক । র্তাহার মাতাও জন্মজন্মার্জিত পুণ্যফলে বিনা পুরুষসংযোগে কুমারী দশায় পরম ভাগবত যিশুকে গর্ভে ধারণ করিয়া জন্ম সার্থক করিয়াছেন । হে পাশ্চাত্য পণ্ডিতপুঙ্গলগণ! একবার ভাবিয়া দেখুন যে যদি প্রভু যিশুর দৈবজন্ম বিশ্বাস করিতে পারেন, যুধিষ্ঠিরাদির এই দৈবজন্ম কেন অবিশ্বাস করিবেন যাহারা ষি শুর অলৌকিক জন্ম বিশ্বাস করেন না, তাহারাও ঐ জন্মবশতঃ যিশুর অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোন সন্দেহ করেন না । ঐরূপ দৈবজন্ম অতিরঞ্জিত বলিতে হয় বলুন, কিন্তু তা বলিয়া যে যুধিষ্ঠিরাদির অস্তিত্ব ছিল না ইহা বলা যায় না । যে সমস্ত কুন্তর্কিক যিশুর অস্তিত্বেও সন্দিহান, র্তাহাদের নিকট যদি আমরা প্রমাণ দিতে পারি যে যুধিষ্ঠিরাদি যথার্থই ছিলেন, তাহা হইলে তঁহাদেরও বিশ্বাস করা উচিত । কৃপ, কৃপী, দ্রোণ, ধাৰ্ত্তরাষ্ট্র, দ্রৌপদী ও ধৃষ্টদ্যুয়ের জন্মও অলৌকিক। অনেকে বলিতে পারেন যে যদি কেবল পাণ্ডবদের জন্ম অলৌকিক হইত, তাহা হইলে তাহা না হয় অতিরঞ্জিত বলিয়া ঐ অংশ ত্যাগ করিয়া অবশিষ্ট ইতিবৃত্ত বিশ্বাস করিতাম, বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, মাঘ, ১৩১৯ কিন্তু মহাভারতের অধিকাংশ চরিত্রেরই যখন জন্ম অলৌকিক তখন ভারতীয় ইতিবৃত্তকে কবির কল্পনা ভিন্ন আর কি বলিব ? তাহার বলিতে পারেন যে ধৃতরাষ্টের ঔরসে গান্ধারীর গর্ভে একশত পুত্র হওয়া এবং গান্ধারীর একটী মাংসপিণ্ড প্রসব করা ও সেই মাংসপিণ্ডকে ব্যাসের বিভাগ করা এবং তাহী বিহঙ্গডিম্বের দ্যায় ক্রমে ক্রমে ফুটিয়া উঠা ঠাকুরমার গল্প। সেইরূপ শরবনে পতিত বীৰ্য্য হইতে কৃপ ও কৃণীর জন্ম, দ্রোণে পতিত ভরদ্বাজের বীৰ্য্য হইতে দ্রোণের জন্ম এবং যজ্ঞবেদি হইতে যাজ ও উপযাঞ্জের আহুতিবলে ধৃষ্টদ্যুম্ন ও যাজ্ঞসেনীর জন্মও উপকথা মাত্র । সত্য বটে, জগতে সাধারণতঃ যে নিয়মে মনুষ্য জাসে, সেই নিয়ম অনুসারে বলিতে গেলে ঐরূপ জন্ম সম্ভব নহে ; কিন্তু পরমাত্মার শক্তি বিশ্বতোমুখী। ভক্ত কবি ষে গাইরাছেন “অসম্ভব, সব তোমাতে সম্ভব ; প্রহ্নাদে রাখিতে স্তস্তেতে উদ্ভব" তাহা মিথ্য নহে । প্রকৃতির শক্তির সীমা নাই। দেখুন কিছুদিন পূৰ্ব্বে মহুষ্য উড়িতে পারে বলিলে কতই উপহাস করিতেন ; রাবণের পুষ্পকরথ গুনিয়া কতই হাসিতেন, রাবণ অগ্নিকে ও বায়ুকে বাধিয়াছিলেন ইহা পাঠ করিয়া উপকথা মনে করিতেন। কিন্তু এক্ষণে উড়িবার যন্ত্র আবিভূর্ত দেখিয়া, বৈদ্যুতিক আলোক ও বৈদ্যুতিক তালবৃন্ত দেখিয়া বাল্মীকির কথা সম্ভবপর মনে করিতেছেন। বিজ্ঞানের বলে যত অদ্ভুত অদ্ভুত আবিষ্কার হইতেছে ততই অসম্ভব সম্ভব হইতেছে। আধুনিক
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।