Wどé করিয়া সৰ্ব্বস্ব লুটাইয়াছেন, তখন আ ম আপনাকে সাবধান করিয়াছিলাম, কিন্তু আমার কথা আপনি গ্রাহ করেন নাই, পিশিমার এতগুলি টাকা আপনি কি করিয়া নষ্ট করিলেন, সে কথা আমি কোনদিন আপনাকে জিজ্ঞাসা করি নাই, আমি কোনও দিন আপনার নিকট সাহায্য প্রার্থন করি নাই, সামান্ত বেতনের চাকরী করয়া কষ্টে সংসার প্রতিপালন করিতেছি। স্বীকার করি আপনি যে,বাড়ী প্রস্তুত করিয়াছেন তাহার অৰ্দ্ধাংশ আমার, এবং আপনি আমার স্ত্রীকে দুই একখানি অলঙ্কারও দিয়াছিলেন, কিন্তু তাহাতে যে ব্যয় হইয়াছে তাহা আপনার স্বোপাজ্জিত অর্থ নহে, পিশিমার টাকাতেই তাহা হইয়াছে ; সেই অর্থে আপনার ও আমার সমান অধিকার ছিল ; আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মানবশতঃই আমি কোনদিন সে টাকার অংশ চাহি নাই। বুদ্ধির ঘোষে সৰ্ব্বস্ব উড়াইয়া এখন আপনি অর্থকষ্টে আমার নিকট সাহায্য চাহিয়াছেন, সাধ্য হইলে আমি আপনাকে কিছু পাঠাইতাম, কিন্তু তাহা আমার মাধ্যাতীত । মানুষ মাত্রেই স্ব স্ব কৰ্ম্মের ফলভোগ করে, আপনি স্বকৃত কৰ্ম্মের ফলভোগ করিতেছেন, আমি কিরূপে তাহার প্রতিবিধান করি ?” হায়, মুকুন্দ যে এই ভাইকেই বাল্যকাল হইতে পুত্রাধিক স্নেহে প্রতিপালিত করিয়াছে, সপরিবারে এক সন্ধ্য আহার করিয়া তাহার শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করিয়াছে । ইহাকেই বলে— “যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি, दछर्मिंभ [ ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ এখন তোমার সব হয়েছে, পং হয়েছি আমি।” কিন্তু মুকুন্দের মনে এত কথা আসে নাই, ভাইয়ের সাধ্য নাই; তা সে কি করিবে ! কিন্তু মুরারি চিঠি খানি এ ভাবে লিখিল কেন ? আর একটু নরম করিয়াও লিখিতে পারত ! সহসা তার চক্ষু জলে ভরিয়া উঠিল, দুই চারি ফোট স্থানচ্যুত হইয়াও পড়িল! পিতার ভাবান্তর লক্ষ্য করিয়া মুকুন্দের তিন বৎসর বয়স্ক পুএ গোপাল তাহার গল জড়াইয়া ধরিয়৷ অৰ্দ্ধস্ফুট কোমলস্বরে বলিল, “বাবা তুই কাদতিত কেন ? তোল কি হয়েতে ?”– কাদ কঁাদ হইয়া তাড়াতাড়ি সে কচি কচি হাতে বাপের চোখের জল মুছাইয়৷ দিল। মুকুন্দ বেদনবিদ্ধ ব্যথিত বক্ষে পুত্রকে চাপিয়া ধরিল, জালাময় দীর্ঘশ্বাস অশ্রুরূপে বিগলিত হইয়া আবার, তাহার উভয় গণ্ড প্লাবিত করিল, সে পুত্রের প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারিল না । (? কয়েক মাস পরে মুকুন্দের উত্তমর্ণ পঞ্চানন শিকদার প্রাপ্য টাকার জন্য পীড়াপীড়ি করিতে লাগিল। কিন্তু অর্থাভাবে তাহার সংসার প্রতিপালন করা কঠিন, সে মুদসহ সহস্রাধিক টাকার ঋণ কিরূপে পরিশোধ করিবে?--শেষে পঞ্চানন শিকদার বাধা হইয়া জেলার সবজজ আদালতে গোবিদের নামে নালিশ রুজু করিল। বন্ধকী সম্পত্তি লইয়া মামলা, মুকুন্দ বুবিল, মামলা চালাইয়া কোনও লাভ নাই ; নিমজ্জনোমুখ ব্যক্তি যেমন সম্মুখস্থিত
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।