পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১শ সংখ্যা ] পরমানন্দে তাহাৰুক আলিঙ্গন করিলেন ; দীক্ষার দিন স্থির রিয়া গদাধর মুকুন্দের সহিত প্রস্থান করিলেন । সেইদিন রাত্রিকালে বিদ্যানিধি গৌরচন্দ্রকে দর্শন করিবার অভিপ্রায়ে অলক্ষিত বেশে শ্ৰীবাসগৃহে প্রবিষ্ট হইলেন, কিন্তু গেীরের দর্শন লাভ করিয়াই স্থিত হইয়। পড়িলেন। ক্ষণেক বাহ্যজ্ঞান লাভ করিয়া “কৃষ্ণরে বাপরে" বলিয়। রোদন করিয়া উঠিলেন । ভক্তগণ র্তাহাকে চিনিতে পারিলেন না, কিন্তু র্তাহার কাতর ক্ৰন্দনে জয়দেব ও বিদ্যাপতি ९8 १ সকলেই কাদিতে লাগিলেন। তখন বিশ্বস্তর অগ্রসর হইবা বিদ্যানিধিকে কোলে তুলিয়া লইলেন এবং “বাপ পুণ্ডরীক আজি তোমাকে দেখিয়া পরিতুষ্ট হইলাম” বলিয়৷ হৃদয়ের আনন্দ জ্ঞাপন করিলেন। গেীরের নয়ন জলে বিদ্যানিধির দেহ সিক্ত হইল। গেীর বলিলেন “প্রেমভক্তি বিতরণ করিতে ইহার "জন্ম। আজি হইতে ইহার নাম হইল পুণ্ডরীক প্রেমনিধি " যথাকলে গদাপর প্রেমনিধির নিকট মন্ত্রদীক্ষা গ্রহণ করিলেন । শ্রাতারকচন্দ্র রায় । জয়দেব ও বিদ্যাপতি জয়দেব অপেক্ষা বিদ্যাপতির বিষয় " বহু বিস্তৃত, কিন্তু জয়দেবে লালসার' ঘেরূপ উদাম গতি, যেরূপ উত্তপ্ত নিঃশ্বাস, বিদ্যাপতিতে তাহা দেখিতে পাওয়া যায় না। জয়দেবে পূৰ্ব্বরাগ ও প্রথম মিলনের চিত্র নাই, আভাসে তাঙ্গদের উপযোগী ভাব বগীর নির্দেশ করা মাছে শত্র। জয়দেবে প্রবাসচিত্ৰও নাই, অতএব শতবর্ষব্যাপ্পী প্রিয়বিরহ হেতু শ্রীরাধার দারুণ বাথার চিত্রওঁ নাই। তাহার কাব্যের বিষয় অতি সংক্ষিপ্ত ; বসন্ত-সমাগমে শ্ৰীকৃষ্ণ ক্ষণিকের উদ্বুদ্রান্তি বশতঃ তৎপ্রণয়বিধুর ঐরাধাকে ত্যাগ করিয়া অন্য যুবতীবৃন্দের সহিত আমোদে প্রবৃত্ত হইয়াছেন ; সেই চিত্র ঐীরাং আপন চক্ষে দেখিয়া আদিয়া শ্ৰীকৃষ্ণের বিরহজনিত খেদে কাতর হইয় २ ছেন। শ্রীকৃষ্ণ ও ক্ষণিক মোহের অবসানে প্রীরাধার জন্য উদ্বিগ্ন হইয়া পড়িয়াছেন। পরে সখীর সাহায্যে উভয়ের মিলন, মানভঞ্জন ও বিহার ; সংক্ষেণতঃ কয়টী কথা লইয়া গীতগোবিন্দ বিরচিত । এই কাণ্যের ভিতর মাত্র তিনটী চরিত্র,—শ্ৰীকৃষ্ণ, শ্ৰীশ্নধ ও সখী । তাহার মধ্যেও আবার সখী নিজের কথা কঙ্গে না, শ্ৰীকৃষ্ণ ও শ্রীরাধার কথাই কহে, অতএব বিস্তৃত ভাবে দুইট হৃদয়ের কথাই গীতগোলিন্দে লিপিবদ্ধ। ইহাতে শাসনাদি নাই, সখীতে সর্থীতে সম্ভাষণ বা জল্পনা নাই, মুবাগিতার সহায়তা গ্রহণ নাই, ছণ-কপটতা নাই, লুকোচুরি নাই, হেঁয়ালী-প্রবন্ধ নাই, আকর্ষণবিপ্রকর্ষণ নাই ; আছে কেবল দুইটা হৃদয়ের প্রবল, , সৰ্ব্বগ্রাসী আকাঙ্ক্ষার অনিবাৰ্য্য