পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ჯ8ხ স্রোত । গীতগোবিন্দে দেখিতে পাই যে তালবাসার মুখে সকলই ভাসিয়া যাইতেছে। বিদ্যাপতির পদাবলীতেও এই ভাব শেয কালে আসিয়াছে, কিন্তু সে বড় শেষে । প্রথমে তাহার কাব্যে অনেক হাব ভাব, অনেক ছলচাতুরি, আত্মগোপনু, সংসার ও প্রেমের দ্বন্দ্ব দেখিতে পাওয়া যার। কিন্তু গীতগাবিন্দ সে সকলের ধার ধারে ন। g গীতগোবিদের ঐরাধীর চরিত্র লইয়৷ বিচার আরস্ত করা যাউক। প্রথমেই কবি দেখাইয়াছেন যে শ্রীরাধা শ্ৰীকৃষ্ণের ক্ষণিক বিরঙ্গেই ক ও কাতর ; সেই স্বল্পক্ষণস্থায়ী বিরহের ব্যথাও তিনি সহ করিতে না পারিয়া বসন্তকুম্নমসুকুমার দেহকে প্রপীড়িত করিয়া বনে বনে শ্ৰীকৃষ্ণকে অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছেন, প্রবল চিন্তায় তাহার মৰ্ম্ম ব্যাকুল হইয়াছে, আকাঙ্ক্ষায় হৃদয় উদ্বিগ্ন হইয়াছে। জয়দেব কবি বসন্তের কোকিলেবু পঞ্চম তীনের মত সুমধুর স্বরে বসন্তের গান ধরিয়াছেন, সে গান শ্রীরাধার বুিরহব্যথারূপ অনলে ঘূতসংস্পর্শের কাজ করিয়াছে, আমাদের কাণের ভিতর দিয়! প্রবেশ করিয়া হৃদয়ে একটা মধুর আবেশের সৃষ্টি করিয়াছে । ললিতলবঙ্গলতার কোমল আশ্লেযে গাজ মলয়সমীরণ উৎফুল্ল হইয়া বেড়াইতেছে, সেই কোমলম্পর্শে নিজেও কোমল হইয়াছে । আজ নিলজী পৃথিবীর অবস্থা দেখিয়া, গাছগুলাও ফুলের হাসি হাসিয়া লইতেছে, এমন সরস সময়ে—এমন দুরন্ত সময়ে কি না বিহরতি হরিরিহ সরস বসন্তে, বঙ্গদর্শন [ ১২শ পর্ষ, ফাঙ্কন, ১৩১৯ নৃত্যুতি যুবতীজনেন সমং সখি বিরহিজনস্য দুরন্তে । ফুরদতিমুক্তলতা-পরিরস্তণ পুলকিতমুকুলিত-চুতে । বৃন্দাবন-বিপিনে পরিসর-পরিগতযমুনা-জল পুতে ॥ একে প্রকৃতির দৌরাত্ম্য, তাহার উপর প্রিয়বিরহ। তোমার হৃদয়ে দুঃখ আছে বলিয়। বাতাল ফুলের রেণু ছড়ানও বন্ধ করে • 1, এবং কে তকীর গন্ধ মাখিয়া তোমায় গায়ে আগুন ছড়ানও বন্ধ করে না ; “ইহ হি দহতি চেত:’ বলিয়। মধুকরনিকর চুপ করিয়া বসিয়া থাকে না, কোকিলও কুহু কুহু রবে দিকৃ সকল মুখরিত করিতে ছাড়ে না। কবি বসত্তের শোভা তিল তিল • রিয়া সখীর মুখ দিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। শুধু তাহাই নহে “চন্দনচর্চিত নীলকলেবর পীতবসন বনমালী" যুবতারদের সহিত কিরূপ.ভালে ক্রীড়া করিয়াছেন, তাহারাই বা কত হাবভাব প্রকাশ করিয়৷ তাহাকে ভুলাইবার চেষ্টা করিতেছে, সখী তাহাও রাধার কাছে পুজামু পূজারূপে বর্ণনা করিয়াছে, ঐরাধা সখীর সহিত দাড়াইয় দাড়াইয়। সেই সকল লীলা দেখিয়াছেন । গীতগোবিন্দকে যে ভাবেই দেখা যাউক, এই বর্ণনাগুলির যথেষ্ট সার্থকতা আছে। জয়দেবের সহজ কবিত্ব এই সকল বর্ণনায় উছলিয়া উঠিয়াছে- এক একটা শ্লোকে এক একটী নুতন ভাব ফুটিয়া উঠিয়াছে। ইহাদের বর্ণনায় কবির উদেখা সেই সময়েপযুক্ত পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলীর যথাযথ *R*tota arti environment az সৃষ্টি।