وا وافہاN কিন্তু সংস্কৃত কাব্যে এমন অনেক বর্ণনা দেখা যায় যে, স্বর্গের দে লতা পর্য্যন্তও অপরাধে মৰ্ত্তালোকে নামিয়াছেন । নারদ যেন স্বর্গমর্ত্যের পাপতিমিরবিনাশকারী একটি উজ্জ্বল নিৰ্ম্মল থর পুণ্য-শিখ। সেই জন্যই বলিতেছিলাম নবীন অরুণালোকের মধ্যে র্তাহার অভু্যদয় অতি মনোরম। জমাট অন্ধকার যেমন প্রভাতের কিরণঘাতে বিনষ্ট হ'ষ্টয়া যায়, নারদের চরিত্রেও তেমিন একটি পুণ্যপ্র তা দখিতে পাই,যাহার সম্মুখে বহুদিন-সঞ্চিত পাপ এবং অন্যায় মুহূৰ্ত্তমাত্র তিষ্ঠিতে পারে না । তাহার রোয কষায়িত তীব্র দৃষ্টর সম্মুখে স্বর্গাধিপতির সিংহাসনও কম্পিত হয় অথচ সকল দেবতা এবং সকল মানবের সহিত র্তাহার একটি পরমসৌন্দৰ্য্যবন্ধন আছে। অভিমানী দক্ষ শিল-রহিত যজ্ঞ করিবার বাসনা করিয়া মহাদেব ব্যতীত অন্যান্য সকলকেই যজ্ঞে নিমন্ত্রিত করেন। শিবদ্বেষী দক্ষের পদ্ধা চুৰ্ণ করিবার জন্য যথাকালে র্তাহার সমীপে নারদ উপস্থিত হইলেন। তিনি দক্ষের পক্ষ হইয়া মহাদেব ব্যতীত ত্ৰিভূবনের সকলকেই নিমন্ত্ৰণ করিয়া আসিলেন । শিবকে যিনি অপমানিত করেন অর্থাৎ মঙ্গল ব্যতীত যে ব্যক্তি নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করেন বা কোনো কাৰ্য্য করেন, র্তাহাকে কি শাস্তি ভোগ করিতে হয় এই দক্ষকে দণ্ড দিয়া, নারদ তাহা বিশ্বজনের সমক্ষে সপ্রমাণ করিয়া দিলেন । প্রাচীন কাহিনীর অধিকা-শ কলহ এবং গণ্ডগোলে নারদের নাম পাই ; কেন না তিনি কলহ করিয়া অশিবকে, মনোমালিন্স বঙ্গদর্শন { ১১শ বর্ষ, ফাস্তুন, ১৩১৯ ও পাপকে দূর করিয়া, দেন। পাপের মলিনতার বিনাশ অতি সহজ হয় না ; বহু সংগ্রামে এবং বহু জয়-পরাজয়ের পর পাপের বিনাশ হইয়া থাকে অন্ধকারকে ভেদ করিয়া যেমন আলোকের প্রকাশ, পাপকে ছিন্নভিন্ন করিয়া দিয়াই তেমনি পুণ্যের উজ্জ্বল মূৰ্ত্তির প্রকাশ। ইহার মধ্যে কত ঘাত কত প্রতিঘাত, কত কষ্ট ও কত দুঃখ তাহার ইয়ত্ত্বা নাই। পাপের বিনাশসাধনকারী বিধাতার উদ্যত হস্ত যখন প্রসারিত হয়, তখন তাহ আমাদের নিকট চক্ৰচ্ছিন্ন-গৌরী-দেহধারী রুদ্রদেবের তাণ্ডব নৃত্যের ন্যায়ই বোধ হয় আমাদের মনের সমস্ত পাপ, দৈন্ত ঈশ্বর জানিতেছেন ; অবশেষে কোনো একসময় বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডের নীরদ ঋষিটি যখন আমাদের সমস্ত খবর বিধাতার কাছে হাজির কবিবেন তখন দেখিব সব উল্টা ; কাল যেমন মুখলালসে নিদ্রিত হইয়াছিলাম, আজ দেখি আমার অবস্থা অন্তরূপ। আমি দারিদ্র অথচ দুঃখের এই প্রকাশ আমার নিকট সহস্ৰগুণ তিক্ত ঠেকিলেও সত্যই তাহা তামার নিকট মঙ্গল, শিব। মঙ্গল দুঃখের ছদ্মবেশ ধরিয়া উপস্থিত হয় মাত্র। দুঃখের দিন সেই জন্যই ঈশ্বরের দান,—শিক্ষা বলিয়৷ অতি অল্প লোকেই গ্রহণ করিতে পারে । মহাকাব্যের পধ্যে যেমন একটি নারদ ঋষি পাপমলিনতা দূর করিবার জন্য একদিন বিমল প্রভাতে পুণ্য জ্যোতিরূপে উপস্থিত হন। মানবের জীবন-কাব্যের মধ্যেও তেমনি এক শুভ মুহূর্তে ঈশ্বরের মঙ্গলবাণী মানুষের সমস্ত পাপ,
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৭১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।