পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১শ সংখ্যা ] সঞ্জয়কে প্রজ্ঞাচক্ষু, দেন, বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। যদি এই সমস্ত কথ। কাল্পনিক হয় তবে তাহার দ্যায় মিথ্যাবাদী আর জগতে কেহ থাকিতে পারে না। পৃথিবীতে অসংখ্য উপন্যাস লিখিত হইয়াছে, কিন্তু কোন উপঙ্গুকার ঐ উপন্যাসের ঘটনাবলিতে আপনাকে আজ পৰ্য্যন্ত এইরূপ ভাবে উপস্থাপিত করেন নাই । হোমার, ভার্জিল প্রভৃতি কোন দেশের কোন কবি কাল্পনিক বৃত্ত দিতে গিয়া কখনও ঐ বৃত্তের সহিত আপনাদিগকে মিশান নাই । ব্যাসদেব যে মিথ।াগল্পে মিথ্যা আপনাকে জড়াইলেন এ বিশ্বাস কি তবে যুক্তিযুক্ত ? বিশেয যদি ব্যাসদেব এতই মিথ্যাবাদী হইতেন ত{হা হইলে তিনি তত্ত্বদর্শী, জ্ঞানী, সত্যবাদী ঋষি বলিয়া প্রসিদ্ধি লাভ করিতেন না, তাহার পরবর্তী গ্রন্থকারগণও কখনই কুরুপাণ্ডবগণকে সত্যচরিত্র বলিয়া বিশ্বাস করিতেন না। o প্রথম বাহ প্রমাণ --প্রবাদ যদি আবহমান কাল কোন প্রবাদ কোন দেশে প্রবর্জিত থাকে তাছা হইলে তাহার মূলে সত্য আছে বিশ্বাস কুরা উচিত। যুধিষ্ঠিরাদি যে আমাদের ন্যায় রক্ত-মাংসের শরীরে পৃথিবীতে লীলা করিয়াছেন তাহ আবহমান কাল ভারতের লোকে বিশ্বাস করিয়া আসিয়াছে। যদি আবার পুরাণ, ব্যাকরণ, বৈদ্যশাস্ত্র, জ্যোক্রিঃখাস্ত্র, ঐতিহাসিক গ্রন্থ, কাব্য, অলঙ্কার, এমন কি নিখিল সংস্কৃত সাহিত্য সেই প্রবাদের সত্যতা সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেয়, যদি দেখেন যে যুধিষ্ঠিরাদির বংশ বলিয়। মধ্যকালের নৃপতিগণ নিজ নিজ মহাভারতের ঐতিহাসিকত। ৬৬৯ পরিচয় দিয়াছেন, যদি যুধিষ্ঠিরের শক কোন কোন দেশে প্রচলিত থাকা দেখা যায়, যদি নবাবিষ্কৃত তাম্রশাসনে তাহদের ভূর ভূরি উল্লেখ থাকে, এবং সৰ্ব্বশেষে যদি সেই যুধিষ্ঠিরের ভ্রাতৃ-প্রপৌত্র জুনমেজয়ের.দানপত্র দেখিতে পাই তাহা হইলে মনে অনুমাত্রও সংশয় থাকা যুক্তিযুক্ত নহে। দ্বিতীয় বাহ্য প্রমাণ-ভগ্নাবশেষ এখনও যুধিষ্ঠিরের দুর্গ, যজ্ঞ স্তম্ভ, নীলছত্রী প্রভৃতি ভগ্নাবশেষ তাহাদের অস্তিত্বের পরিচয় দিতেছে। বংশপরম্পরাক্রমে সেই গুলি সুধিষ্ঠিরাদির বলিয়া প্রসিদ্ধ। সেই দুর্গাদি যে মুসলমান সম্রাটগণের রচিত নহে তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই। পৃথ্বীরাঙ্গের পূৰ্ব্বেও তাহদের অস্তিত্ব ছিল। ত৷হাদের রচনা প্রধাণা দেখিলে বোধ হয় যে উহ। প্রাচীন বৌদ্ধ শিল্পও নহে। সুতরাং বুদ্ধদেবের অপেক্ষা তাহার। প্রাচীন। প্রসিডেন্সি কলেজের ভূতপুৰ্ব্ব অধ্যাপক উইলস সাহেব কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে গভর্ণমেণ্ট কর্তৃক নিযুক্ত হইয়। দিল্লীর নিকট কোন কোন স্থান খনন করতঃ কতকগুলি অদ্ভুত প্রাচীন কারুকার্যখচিত চৌবাচ্চ বাহির করেন। ঐগুলি দেখিলেই বোধ হয় যে উহার মহম্মদীয় বা পৌদ্ধ শিল্প নহে, প্রত্যুত প্রাচীন হিন্দু শিল্প । এই সমস্ত দেখিয়া এথল আমাদের রাজপুরুষেরাও যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধ যজ্ঞস্থলাদির সত্তা কথঞ্চিং বিশ্বাস করিতেছেন । তৃতীয় বাহ প্রমাণ—লেখ্য যুধিষ্ঠিধাদি ৰে কল্পিত জীব নহে,