8 بیرون বঙ্গদর্শন [ ১২শ পর্ষ, ফাঙ্কন, ১৩১৯ "চক্রবত্তা’র সর্বত্র অব্যাহত গতি থাকিলেও, নির্মাণে ব্যাপৃত হইবেন, কেন, তাহাতে যাহা তাহার ‘স্বদেশ' তাহাতেই তাহার সাক্ষাংশাসন প্রচলিত ছিল বলিয়া প্রতিভাত হয়। সামন্তগণের রাজধানী সামন্তচক্রে', –চক্ৰবৰ্ত্তীর রাজধানী তাহার ‘স্বদেশে’— প্রতিষ্ঠিত থাকিবীর কথা। বরেন্দ্রী ব্যতীত অন্য কোনও স্থান পালবংশীয় নরপালগণের ‘স্বদেশ' বলিয়া পরিচিত থাকিবার ' প্রমা। আবিষ্কৃত হয় নাই । পক্ষান্তরে, "রামচরিতম্’ কাব্যে বরেন্দ্রী তাহাদিগের জনকভূমি বলিয়া পুনঃ পুনঃ উল্লিখিত হইয়াছে। তাহার ‘অব্যবহিত ভূমি রাঢ়ী, বঙ্গ [ পূৰ্ব্ববঙ্গ ] ইত্যাদি স্থান ‘সামন্তচক্রে’র অন্তর্গত ছিল । কৈবৰ্ত্ত-বিপ্লবে পালবংশীয় নরপালগণের জনকভূমি [ বরেন্দ্ৰী ] কিরৎকালের জন্য হস্তচু্যত হইবার পর, সামন্তগণের সহায়তায় রামপালদেব বহু ক্লেশে তাহার উদ্ধার সাধন করিয়া, রামাবতী’ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন,— ইহাই "রামচরিতম্ কাব্যের আখ্যানবস্তু। বাসব [ ইন্দ্র । যেমন স্বর্গবিচ্যুত হইয়াও, ধৈর্য্যাবলম্বনে দীর্ঘকালের অধ্যবসায়ে পুনরার স্বৰ্গরাজ্য হস্তগত করিয়াছিলেন, রামপালদেবও সেইরূপ ধৈৰ্য্যের [ ধৃতির ] পরিচয় প্রদান করায়, বাসবের সহিত র্তাহার তুলনা দিবার অবসর লাত করিয়া, রাও কবি [ মদনপালদেবের তাম্রশাসনে ] রামপালদেবকে বাদব-ধৃতিঃ' বলিয়া বর্ণনা করিয়া গিয়াছেন। যিনি এইরূপে বহুকালে, বহুক্লেশে জনকভূমির উদ্ধার সাধন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, তিনি সেই “স্বদেশ" পরিত্যাগ করিয়া, বঙ্গের [ পূৰ্ব্ববঙ্গের ] সামন্তচক্রের অন্তর্গত রামপাল নামক স্থানে রাজধানী সহজেই সংশয় উপস্থিত হইতে পারে। ‘রামচরিতম্ কাব্যেও এরূপ পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায় না। তাঁহাতেই সংশয় অধিক বদ্ধমূল হইয়া পড়ে ; এবং মহামহোপাধ্যায় শাস্ত্রী মহাশয় ভূমিকার পাশ্বটকায় রামপালকে রামাবতী"বগিয়া ইঙ্গিত করিয়াছেন কেন, তাহা বোধগম্য হয় না। মনে হয়,—ইহা হয় ত মুদ্রাঙ্কনের ক্রটি মাত্র। যে ভাবে এই গ্রন্থ মুদ্রিত হইয়াছে, তাহতে এরূপ ক্রটি ঘটবার সস্তাবনার অভাব ছিল না। এসিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত হইলেও, এই গ্রন্থের মুদ্রাকার্য্যে এত অধিক ক্রটি ঘটিয়া গিয়াছে যে, শিক্ষার্থিগগের পুনঃ পুনঃ পথভ্রষ্ট হইবার আশঙ্কা আছে। দুই একটি উদাহরণ উদ্ধৃত করিলেই তাহ বুঝিতে পারা যাইবে । শাস্ত্রী মহাশয়ের ভূমিকার । ৮ পৃষ্ঠায় ] একস্থানে মুদ্রিত হইয়াছে,-গুরবমিশ্রের শিলালিপি 'রঙ্গপুর’ জেলায় প্রাপ্ত হওয়৷ গিয়ছে। বলা বাহুল্য, তাহা চিরকাল দিনাজপুর জেলার মধ্যেই স্বস্থানে প্রতিষ্ঠিত আছে। ভূমিকার আর একু স্থানে ৯িপূষ্ঠায়। মুদ্রিত হইয়াছে,—দ্বিতীয় বিগ্রহপালের অব্যবহিত পরবর্তী রাজার নাম মহীপাল, “তিনি গোপালের একতম পুত্র।” বলা বাহুলা, মগীপাল দ্বিতীয় বিগ্রহপালেরই পুত্র ছিলেন.। ভূমিকার আরও এক স্থানে ১৩গৃষ্ঠায় মুদ্রিত হইয়া৪ে,-নৰ্বপালদেবের পঞ্চদশ রাজ্যসম্বৎসরে গয়াধামে যে মন্দির নিৰ্ম্মিত হয়, তাহার ফলকলিপি বৈদ্য-বজ্রপাণি’ কর্তৃক রচিত, এবং তাহা শীঘ্রই
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।