পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

어》o নয়, সংস্কৃত নয়, বিদেশী নয় —খাটি বাঙ্গল কথা । কিন্তু ঐ কথাটির ভিতর কেমন সুন্দর ভাব লুক্কায়িত রহিয়াছে। “ভালবাসি তাই অসি” চিরিয়া দেখাইতে গেলে মানে হয়, তোমাকে ভাল বলিয়। বিশ্বাস করি, তাই তোমার কাছে আদি । কিন্তু চিরিলে ত সাহিত্য থাকে না। “ভালবাসি তাই আ"ি এই ক্ষুদ্র আয়তনেই রসবিন্দু অতি সুন্দর পরিপুষ্ট হয়। আর একটি যৌগিক শব্দ দেখনহাসি’—পরস্পর দেখা হইলেই মুখে হাসি আপন আপনি আসে ; হৃদয়ে রস উথলিয়া উঠে, মুখে ভাহার মৃদ্ধ তরঙ্গ খেলিতে থাকে। এমন বহুতর কথা দেখান যাইতে পারে। এইরূপে ছোট ছোট কথার বিচার করিয়া, জয়দেব-চণ্ডীদাস হইতে রবীন্দ্র-দেবেন্দ্র পর্য্যন্ত কবিকুলের রচনার ভঙ্গী দেখিয়া আমরা বলিতে পারি যে, সাহিত্য, আমাদিগকে ঘিরিয়া রাখিয়াছে। অতি শৈশবের সেই ঘুমপাড়ানি গান -“বাটাভরে পান দিব, গালভরে খেও”। আর অস্তিমে সেই হরি-সঙ্কীৰ্ত্তন—সমস্তই সাহিত্য-মাথা। এই জাতির পক্ষে সাহিত্যসন্মিলনই সুন্দর ব্যবস্থা। যদি কোন পথে আমাদের প্রকৃত সন্মিলন হয়, উন্নতি হয়, বিকাশ হয়, তবে এই সুকুমার সাহিত্যের পথেই হইবে। সাহিত্য ছাড়া আমাদের আর কি আছে বলুন ? আমাদের প্রকৃত পুরাতন সনাতন সমাজ, অসাড়, অনড়, নির্মাত, নিষ্কম্প বিরাট দেহে বিশাল বক্ষে ভর করিয়া জমি লইয়া পড়িয়া আছে ; আর সেই দেহের উপর ভাণ্ডব নৃত্য চলিতেছে,–নাচিতেছেন নীতুিসংস্কারক, ধৰ্ম্মসংস্কারক, সমাজসংস্কারক ! ! ! সংস্কার z বঙ্গদশন [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ লইয়া সন্মিলন হয় না । ভাঙ্গার পর গড় হইলে সংস্কার হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশে আমরা ভাঙ্গিতে মজবুত, গঠনে অপটু। সুতরাং সংস্কারক-সন্মিলন আমাদের মধ্যে হইতেই পারে না। রাজনীতির আলোচনা দিল্লী প্রভৃতি পীঠস্থান ছাড়া, নিৰ্ব্বাচিত পুরোহিতগণ মধ্য ব্যতীত সাধারণের পক্ষে একেবারেই নিষিদ্ধ। তাহার পর বিজ্ঞান । আমাদের মধ্যে বিজ্ঞানরত্ন আছেন, কিন্তু বৈজ্ঞানিক-সন্মিলনের সময় এখনও হয় নাই । আমাদের সাহিত্য-সম্মিলনের একচালার পরচালা হইয় বিজ্ঞান গত বৎসর হইতে কথঞ্চিৎ রূপে জীবন রক্ষা করিতেছে । সুতরাং এক সাহিত্য-সন্মিলনই আমাদের একমাত্র অবলম্বন । , আর আমাদের প্রকৃতি, প্রবৃত্তিও সাহিত্যের দিকে আকৃষ্ট। বহুকাল হইতে আমরা কীৰ্ত্তন-কবি, যাত্র-কথকতা, পাচালি লইয়।সৌন্দর্য্যের নৗজড়িা করিয়া বাঙ্গালিজীবন সার্থক করিয়া আসিতেছি। সৌন্দৰ্য্য হইতে রস ; রস-রচনায় সাহিত্য ভাবুকে দ্বিবিধ উপায়ে রস উপভোগ করেন, আর উপভোগ করান—এক স্বষ্টি করিয়া, আর এক দৃষ্টি করিয়া বা দেখাইয়া দিয়া। স্বষ্টির ক্ষমতা অল্প লোকেরই থাকে, দৃষ্টি সাধনা করিলে অনেকেরই হইতে পারে।. এই স্বষ্টি দৃষ্টির সমন্বয়ে সকলরাপ সাহিত্য জন্মিয়া থাকে। বাঙ্গালি সংস্কৃত পুরাণ, ইতিহাস, কাব্য, আখ্যান হইতে অসংখ্য নরনারীর অবতারণা করিয়াছেন। রচনার ভঙ্গিতে, বিচিত্র রঙ্গেতে সেই সকল আমাদের একেবারে নিজস্ব হইয়াছে। মেনকা যে কবি-কল্পনাসম্ভৃত, তাহ