পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা ] যে, আমি অশ্লীল বা অশ্রাব্য ভাষাকে সাধু পদবীতে প্রতিষ্ঠিত করিবার চেষ্টা করিতেছি । অশ্লীল, অশ্রাব্য সংস্কৃতেও আছে। তা যেখানেই থাকুক, সে সকল ত্যাজ্য। আমি বলিতেছি, “পার্থী সব করে রব রীতি পোহাইল”—আমাদের ত্যাজ্য নহেঁ,--আবার পেক্ষিসৰ্ব্ব রবকারী, রাত্রি প্রভাতা”— আমাদের গ্রহণীয় নহে। বরং যদি উভয়ের মধ্যে বাছনি করিতে হয়, তাহা হইলে শেষেরটি ফেলিয়া প্রথমটিই আমাদিগকে লইতে হইবে।—ইহাতে প্রাণের কথা বুঝান হইল না, মোটামুটি আমি কি চাই, না চাই তাহাই বুঝান হইল। গতবৎসর সম্মিলনে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, “রাম রাজপদে প্রতিষ্ঠিত হইরা অপত্যনিৰ্ব্বিশেষে প্রজা পালন করিতে লাগিলেন”—এইরূপ বলিলে যদি লক্ষ লোক বুঝিতে পারে, কিন্তু ಇ অযোধ্যায় 18, হইয়া বাপে যেমন সস্তানদের পালন করেন, সেইরূপ করিয়া প্রজা পালন করিতে লাগিলেন"-এইরূপ বলিলে যদি কোটি লোকে বুঝিতে পারে, তবে এই দুই-এর কোনটি ভাল? সঙ্গে সঙ্গে বলিয়াছিলাম, যদি লোকশিক্ষা কথাটা একটা ভণ্ডামি না হয়, তাহা হুইলে আমাদিগকে শেষোক্ত ভাষা গ্রহণ,করিতেই হইবে। অর্থাৎ আমি বলিয়াছিলাম যে, ভাষা যত অধিক লোকের বোধগম্য হয়, তত ভাল । এবার বলিতেছি যে, প্রাণের স্বাবেগে ভাষার স্বষ্টি এবং উন্নতি । নিম্নস্তরের লোকের এখনও যৎকিঞ্চিৎ প্রাণ আছে- তাহদের ভাষা অসাধু বা অকুলীন বলিয় অবহেলা না করিয়া সংস্কৃতসম ব: অভিভাষণ q>(堂 সংস্কৃতোদ্ভব ভাষার সহিত ভূরোপরিমাণে দেশজ মিশাইয়া লইতে পারিলে ভাষার প্রাণ থাকিবে বা হইবে। আমার সমূপে একখানি উত্তম পুস্তক রহিয়াছে। অনেক পরিশ্রম ও একনিষ্ঠার ফল এই “ঢাকার ইতিহাস’ ইহঁতে ভূমিকার প্রথম ছত্ৰ লইলেই আমঠু কথা একটু পরিষ্কার হইবে। গ্রন্থকার লিখিয়াছেন,— “জাতীয় জীবন সংশোধনের প্রধান উপায় দেশেরই ইতিহাস ।” প্রথমতঃ জাতীয় কথাটা নেহাত বিজাতীয় ! তাহার পর “জাতীয় জীবন” আরও অবোধ্য। সেইজন্য আমি বলি, “দেশে প্রাণ সঞ্চারিত করিতে হইলে প্রথমে দেশের পরিচয় জানা প্রয়োজন ? তাহা ত বটেই। আর সঙ্গে সঙ্গে দেশের পরিচয় পাইয়া, তাহার পর দেশের সাধারণ লোকের ভাষা শিক্ষা কয়া কৰ্ত্তব্য। তাহার পর সেই ভাষা আপনাদের ভাষার সহিত মিলুইতে পারিলে, তবে দেশে প্রাণ বাড়িবে, সজীবতা বাড়িবে। আমাদের পূৰ্ব্ববৰ্ত্তা যুগের মনীষিগণ যে প্রকারে বিদেশী ব্রাণ্ডির আমদানি করিয়া দেশের প্রাণবৃদ্ধির চেষ্টা করিয়াছিলেন, সেরূপ ভাবে বিদেশী তাত্ৰ উগ্ৰ ভােব সকল বাঙ্গলা ভাষায় আমদানি করিলে সুফল হইবে না, বরং বিপরীত ফল হইবে। অল্পবয়সী যুবতী জননী যেমন রুগ্ন সন্তানকে অতি সন্তপণে কোলে শোধাইয়। ধীরে ধীরে তাহার গায়ে হাত বুলনি, অতি ধীরে ধীরে বাতুস করিয়া তাঙ্গর শুশ্ৰহ করেন, একটু একটু করিয়া বলকারক পথ্য দিয়া তাহীর শরীরে বলাধানের চেষ্ট৷ করেন, তেমনি করিয়া আমাদিকে এই মাতৃসেব