পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা ] হিসাবের পদ্ধটি কেরি সাহেবের ফন্থ পূৰ্ব্ব হইতে প্রচলিত ছিল, ঐটকে উপলক্ষ্য করিয়া কৃষক-গৃহিণীর রহস্যময়ী কাহিনী লেখা হইয়াছে। এ লেখার সহিতও এখনকার লেথার কোন বিশেষ পার্থক্য নাই 籌 কৃষ্ণচন্দ্রের সময়েই কি আর কেরি সাহেবের সময়েই কি, বাঙ্গল ভাষা সংস্কৃতজ্ঞে দেখিয়া শুনিয়া দিতেন। দানপত্রের প্রথমেই আছে ‘বয়ঃক্রম’, এই বিসর্গেই পণ্ডিতের পাণ্ডিত্য ; ‘কেরির রচনায় বার বার আছে ‘কৃষক গৃহিণী’। তিনি ঝোল রাধিয়াছিলেন, তাহার নিজের কথাতেই ‘সুরস’ হইয়াছিল। এ সকল অবাস্তর কথা। আসল কথা আমি দেখাইতে চেষ্টা করিতেছি যে, আমাদের ভাষার ঠাট, কায়দা, ভঙ্গি, রীতি বহুদিন হইতে একভাবে চলিয়া আসিতেছে । • পদ্য বহুদিন হইতে, গদ্য অন্ততঃ ভারতচন্দ্রের সময় হইতে। এই ঠাট একটা বাধি ঠাট। আমাদের সমাজে যদি কিছু বাধন থাকে, তাহা হইলে ভাষায়ও আছে। র্যাহারা বলিরেন, বাধন কোনদিকে থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল, তাহাঁদের मंत्र আমাদের কোন কথা নাই । যাহারা মনে করেন, সমাজের ঠাট বজায় রাথিয়া সমাজের উন্নতি আবগুক, তাহাদিগকে আমরা বলি, ভাষাতেও সেইরূপ ঠাট বঞ্জায় রাখিয়া উন্নতি আবস্তক । তবে আমাদের ভাষার ঠাট কিরূপ, তাগ বুঝিতে হইলে একটু দৃষ্টি আবস্তক; আর যৎকিঞ্চিৎ পরিশ্রম আবণ্ঠক। মাতৃভাষায় ভক্তি থাকিলে এবং ভাষা বেওয়ারিশ ময়দা নয়, ছেলেখেলার সামগ্রী নয়,—এ জ্ঞান অভিভাষণ

  • > ふ

থাকিলেই, সে দৃষ্টি সহজেই আসে এবং সে পরিশ্রম করিতে সকলের ইচ্ছা হয়। এ যে ভাষার প্রবাহ ইহাতে মধ্যে মধ্যে বস্ত আসে, ঢল নামে। এই বহু হইলে বা ঢল মাধিলে ভাষার পুষ্ট হয় বটে, কিন্তু ভাষার ভাবভঙ্গির বৈলক্ষণ ইয়'ন। কৃষ্ণচন্দ্রের সফ্ট একটি বঙ্গ। ইয়Y তাহার পর কেরি প্রভৃতি মিশনার সাহেবদের সময় আর একটি । তাঙ্গর পর মুক্তারাম বিদ্যাবাগীশ, মদনমোহন তর্কালঙ্কার, তারাশঙ্কর, বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার, রাজেন্দ্রলাল প্রভৃতি বাঙ্গলা গদ্য রঙ্গমঞ্চে অবতীর্ণ হইয়া অপূৰ্ব্ব রঙ্গ দেখাইতে থাকেন। বাঙ্গলার গদ্য একটা শিক্ষার উপায় এবং উপভোগের সামগ্ৰী হয়। সাহিত্যের প্রসার তখন আর কবিতায় সীমাবদ্ধ থাকে নাই—গদ্যকেও আত্মসাৎ করিয়াছিল ; ঈশ্বর গুপ্তের সহিত ঈশ্বর বিদ্যাসাগরের নাম সমানে বিঘোষিত হইয়াছিল। এই সমস্ত লিখিত ভাষার কথা । ভাষার সঙ্গে সঙ্গে চিরকালই কথিত ভাষা ছিল, থাকিবেই। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় ও মিশনরির দেশীয় লোকের কথোপকথন প্রভৃতি যখন গ্রন্থমধ্যে সন্নিবেশিত করিতেন, তখন সেই ভাষা ব্যবহার করিলেও, কোন গ্রন্থকার সেই ভাষা আপনার ভাষা বলিয়া ব্যবহার করিতে সাংস করিতেন ন, অথবা ঘৃণাবোধ করিতেন । এই সময়ে দুইজন কায়স্থপুরুষসিংহ দুৰ্জ্জয় সাহসে বঙ্গভাষার রঙ্গমঞ্চে ও দেখা দিয়া ভাষায় যুগান্তর উপস্থিত করিলেন । প্যারীচঁাদ মিত্র বা টেক. চাদ ঠাকুর ৪ বঙ্গভাষায় মহাভারতের অনুবাদের উদ্যোগকর্তী এবং "হতোমপ্যাচার নক্স”লেখক কালীপ্রসন্ন সিংহ। এচ