१२२ পরিচয় আছে। “রসো বৈ সঃ’ ইহা ঋষিদেরই উক্তি । আলঙ্কারিকগণ রনের লক্ষণ করিতে পারেন নাই,—বলিয়াছেন, রস ব্ৰহ্মানন্দের মত অপূৰ্ব্ব পদার্থ। সেই রসায়বোধ ক্ষমতা আমাদের কমিয়াছে বটে, আর ইংরাজিতে প্রতিশব্দ নাই বলিয়াই কি রস-শবদ পরিহার করিতে হইবে। বাঙ্গলার রসশেখর লেখকের পক্ষে রস পরিহাসের কল্পনা একটা অদ্ভুত রসের কথা বটে । আকাশের কি বুঝি, আকাশের কি লক্ষণ করিতে পারি ; কিছুই পারি না। কিন্তু আকাশ সকলেই বুঝে। রস সেই আকাশের মত সৰ্ব্বব্যাপী, সৰ্ব্বত ওতপ্রোত রহিয়াছে। ঐ ষে নবোঢ়া কিশোরা প্রথম সমাগম অবসরে প্রফুল্ল যুবক স্বামীর শয্যাপার্শ্বে খট্রাঙ্গ-দওধরিয়া ক্ষেীম বসনে বদনমণ্ডল আবৃত করিয়া, ব্রীড়াবিকুঞ্চিত অঙ্গে বঙ্কিম ভঙ্গিতে দাড়াহয়৷ রহিয়াছে, আর ঐ যে তরুণ যুবক পূৰ্ব্ব হইতে পুষ্পবাসত শয্যায় শয়ান আছে, মৃদু মৃদু দক্ষিণ, পদ কম্পন করিতেছে, আর মুচকি মুচকি হাসিয়া তরুণার লজ্জাতরঙ্গ লক্ষ্য করিতেছে ভাল, ইহারাই কি রস বুঝিয়াছে, আর আমরা এই প্রৌঢ় বয়সে কি তাহার কিছুই উপলদ্ধি করিতে পারি না ? ঐ যে প্রবাসগামী পতি পাশ্বে প্রণয়িনী কি বলিতে গিয়া বলি বলি করিয়া আর বলিতে পারল না, সরমে মরমের কথা তাহার বলা হইল না, সেই প্রণয়ী প্রণয়িনীই কি রস বুঝিয়াছিল, আর আমরা কেহ কিছুই বুঝি না ? ঐ যে অৰ্দ্ধ যুবতী, অৰ্দ্ধ কিশোরী, অৰ্দ্ধ অবগুণ্ঠনবর্তী বস্থাভ্যন্তর হইতে একটি সুঠাম মুগোল মাতৃস্তন বিকশিত করিয়া রেস্থিত কথঞ্চিৎ , বঙ্গদর্শন & س--- له { ১২শ বৰ্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ চলচ্ছক্তিবিশিষ্ট শিশু সন্তানকে সাগ্ৰহ আহবান করিতেছে, আর সস্তান উঠিতেছে, পড়িতেছে, আবার উঠতেছে, টলিতে টলিতে দৌড়াইতেছে, -ঐ বঙ্গজননী আর ঐ বঙ্গ শিশুই কি রস বুঝিয়াছে, আমরা কেহ বুঝি না ? অার ঐ যে, “বধূর বাণী বাজে বুঝি ঐ বিপিনে, নহে কেন অঙ্গ অবশ হইল, সুধা বরষিল শ্রবণে,” ঐ বংশীধর বন্ধু আর অবশ-অঙ্গিনী গোপীগণই কি রস বুঝিয়াছিলেন, আমরা কেহ বুঝি না ? তা কেন ? “ঘন বিজন কানন বা তরুশূন্য মরুদেশ, প্রখর রশ্মিপ্রদীপ্ত মধ্যাহ্ন সময় বা ঘোর দ্বিপ্রহরা তামসী বিভাবরী, তরুণযৌবন . বা পরিপক্ক প্রবীণকাল, সৰ্ব্বস্থানে, সৰ্ব্বকালে, সৰ্ব্বাবস্থায় পুরাৎপর পরমেশ্বরের ঐশ্বৰ্য্য সৌন্দৰ্য্য সাক্ষাৎকার করিয়া ভক্তিমানের চিত্ত রসসঞ্চারে ভক্তিভরে পরিপ্লুত হয়।” রসময়ের রস সৰ্ব্বত্র ছড়ান আছে ; ছড়ালই বা কেন বলি, ওতপ্রোত আছে 3 তবে এষ্ট রস উপভোগ করিবার ক্ষমতা সকলের সমান নহে। সকল বিষয়ই অনুশীলনসাপেক্ষ। রসেরও অনুশীলন করিতে হইবে। যে ভাষায় জননীর আদর, পত্নীর সোহাগ, ছেলেদের আবার বন্ধুর প্রিয় সম্ভাষণ পাইয়াছি, সেই মাতৃভাষায় সাহিড্য সেবা করাই রসামুশীলনের সরস উপায়। রসরচনার অনুশীলনে হৃদয় কোমল হইবে, প্রাণ শীতল হইবে, মন সরল হইবে ; দয়া মায়া, শ্রদ্ধাভক্তি বুদ্ধি প্রাপ্ত श्वं কপটতা, নিষ্ঠুরত, নিৰ্ম্মমতা কমিয়া যাইবে, আর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনুষ্যত্ব বাড়িয়া যাইবে। আমরা কোমলপ্ৰাণ জীব, নাই, বা পারিলাম
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।