পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা ] মারামারি করিতে, নাই বা পারিলাম উল্লম্ফন প্ৰলম্ফন করিতে, পরের জন্য প্রাণ খুলিয়া কাদিতে ত পারি, তাহাতেই আমাদের মনুষ্যত্ব বৃদ্ধি হইবে, জগৎ শতমুখে বলিবে বাঙ্গালি পরের ব্যথা বুঝিতে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ এবং সেবা-ধৰ্ম্মে পরম গরিষ্ঠ । সাহিত্য-পরিষৎ বঙ্গ-সাহিত্য-সেবার সুযোগ বঙ্গ সমাজে দান করিয়া আমাদের সকলেরই ধন্যবাদার্হ হইয়াছেন। গত বৎসর আমি সাহিত্য-পরিষদকে অধিকতর কৰ্ম্মঠ করিবার অভিপ্রায়ে আমার অভিভাষণে অনেক কথা বলিয়াছিলাম । বে যাহারে ভালবাসে, সে তাহারে সদ। দোষে — এই রীতি সকল দেশেই আছে। এ বৎসর সে সকল আবার কিছু করিব না । এ বৎসর সাহিত্য-পরিষদের অতি’ দুৰ্ব্বতসর। যে রাম-স্বভাব রামেন্দ্রম্বন্দর শত্ব কৰ্ম্ম থাকিতেও এই সন্মিলনের স্থাপন গঠন 'কার্য্যে মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্র প্রভৃতির প্রধান সহায় ছিলেন, আপনার শত শত গুরুতর কার্য্য থাকিলেও ৰিনি কোন দিন পরিষৎসেবায় বিরাম দেন নাই,সেই রামেঞ্জস্থলর এখন অবসন্ন হইয়া পড়িয়াছেন। মন প্রাণ বহিলেও শরীর ত আর বহে না পরিষদের সম্পাদকতার অক্লাস্ত পরিশ্রমে র্তাহার দেঙ্গ একবারে রুগ্ন ভগ্ন হইয়াছে। সেই বিখ্যাত বিজ্ঞানবিং, অথচ সাহিত্য সেবায়:অক্লান্ত কৰ্ম্মবীর এখন শুষ্করস স্থাণুর ষ্ঠায় অবস্থান করিতেছেন। সেইরূপ সাহিত্য-পরিষদে র্তাহার প্রধান সহায় শ্ৰীমান্‌ বোমকেশ মুস্তফীও অনিয়ত পরিশ্রমে জীর্ণ, শীর্ণ, রোগ V) , অভিভাষণ ৭২৩ গ্রস্ত হইয়াছেন। তাহাতেই বলিতেছিলাম, এ বৎসর সাহিত্য-পরিষদের অতি দুৰ্ব্বৎসর। এ বৎসর আমরা আকাঙ্ক্ষ-আবারের কথা তুলিব না। ভগবানের নিকট, সাহিত্য মাতা সরস্বতীর নিকট কায়মনোবুকে প্রার্থন করি, রামেন্দ্রসুন্দর, ব্যোমকেশ পুনরায় সবল ও স্বস্থ"ইউন, এবং ਬਗੈ। পূৰ্ব্বমত যত্ন, পরিশ্রম সেবায় সাহিত্য-পরিষৎকে গরিয়সী করুন । এইবার সমস্ত বঙ্গের স্বাস্থ্য-ভঙ্গের কথা এই বিপুল সাহিতা-সত্তা-সমক্ষে কাতরকণ্ঠে নিবেদন করিব । আমরা প্রায়ই ভুলিয়া যাই, পল্লীগ্রাম লইয়াই পৃথিবী । সঙ্গর, নগর,-ব্যবসায়বাণিজ্যের স্থান, সরকারী কৰ্ম্মচারীদের কাৰ্য্যস্থান। প্রধানত পল্লী লইয়াই প্রদেশ । কিন্তু পল্লীগ্রামের উপর কাছারও দৃষ্টি নাই। ধিনি একটু মাথাতোলা হইলেন, তিনিই সহরে গিয়া মাথা ঘামাইতে লাগিলেন। বলেন, দেশের উন্নতি করিতে হইবে। দেশ কি কেবল কলিকাতা আর ঢাকা ? পল্লীর উন্নতি দূরে থাকুক, এমন কি পল্লীর স্থিতির জন্য কাহার ও কোন উদ্যোগ নাই। পল্লীগ্রাম সকল জঙ্গলে পূর্ণ হইতেছে, কত বিশিষ্ট গণ্ডগ্ৰাম হইতে গোরু বাছুর বাঘে লইয়া যাইতেছে, জরে ওলাউঠার দেশ উজাড় হইয়া যাইতেছে ; জলকষ্টে, জল আনিবার কষ্টে, আর দুই তিন ক্রোশ দূর হইতে জল জানিবার সময় সুযোগ সুবিধা হওয়ায়, বলিতে লজ্জা হয়, দুঃখে বুক ফাটিয়া যায়, কুলবধু কুলের বাহির হইয়া যাইতেছে। এতকল কথা আমরা প্রায়ই ভাবি না। কিন্তু